রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলার পশ্চিম কোদালা গ্রামের কৃষক দিদারুলের (৩৮) নিখোঁজের প্রায় পাঁচ মাস পর পিবিআই এ ঘটনা উদঘাটন করল। গতকাল রোববার পিবিআই চট্টগ্রাম জেলার পক্ষ থেকে সংবাদমাধ্যমে ঘটনার বিস্তারিত জানানো হয়। গ্রেপ্তার চারজন হলেন কোহিনূর আক্তার (২৭), তার দুই ‘প্রেমিক’ আবদুল খালেক (৩০) ও মো. হামজা (২৬) এবং হামজার সহযোগী সেলিম (২৮)। খবর বিডিনিউজের।
পিবিআই বলছে, গত ৩১ মে সকাল থেকে দিদারুলকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। এ ঘটনায় তার বাবা জামির হোসেন কাপ্তাইয়ের চন্দ্রঘোনা থানায় জিডি করেন। এরপরও খোঁজ না মেলায় তিনি আদালতে দিদারের স্ত্রী কহিনুর ও তার প্রেমিক খালেককে আসামি করে অপহরণ মামলা করেন। শুরুতে আদালত মামলাটি চন্দ্রঘোনা থানাকে তদন্তের নির্দেশ দেয়। পরে বাদীর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত মামলার তদন্তভার পিবিআই চট্টগ্রাম জেলায় হস্তান্তর করে।
জেলা পিবিআইয়ের এএসপি আবু জাফর মোহাম্মদ ওমর ফারুক বলেন, দিদারের বন্ধু খালেকের সঙ্গে কোহিনূরের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। বিষয়টি একদিন দিদার জেনে যান এবং দুজনকেই সেদিন তিনি শাসান। আবু জাফর বলেন, এ ঘটনা তদন্ত করতে গিয়ে প্রযুক্তির সহায়তায় খালেক ও কোহিনূরকে গাজীপুর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে কোহিনূর দাবি করেন, খালেকের সঙ্গে সম্পর্কের জেরে তার স্বামী তাকে নিয়মিত মারধর করতেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে তিনি স্বামীকে হত্যার চিন্তা করেন। একপর্যায়ে কোহিনূর তার প্রতিবেশী এবং ‘সাবেক প্রেমিক’ হামজার সঙ্গে যোগাযোগ করে হত্যার পরিকল্পনা সাজায়। এর অংশ হিসেবে হামজা দিদারের স্ত্রীকে ঘুমের ওষুধও কিনে দেয়। গত ৩০ জুন গভীর রাতে কোহিনূর তার স্বামীকে দুধের সঙ্গে চারটি ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে খাওয়ান। এরপর কোহিনূর তার স্বামীকে বালিশ চাপা দিয়ে হত্যা করে হামজা ও তার সহযোগী সেলিমকে খবর পাঠান। পরে তিনজন মিলে প্লাস্টিকের বস্তায় ভরে কোদালা খালে লাশ ফেলে দেন। প্রচণ্ড বৃষ্টির মধ্যে লাশটি স্রোতে ভেসে যায়।
ওমর ফারুক জানান, গত ৯ অক্টোবর কোহিনূর আদালতে জবানবন্দি দিয়ে স্বামীকে হত্যা করে লাশ গুম করার বিষয়টি স্বীকার করেন। তার দেওয়া তথ্যে শনিবার হামজা ও সেলিমকে রাঙ্গুনিয়া উপজেলা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। তারাও দিদার হত্যায় সম্পৃক্ত থাকার কথা স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন বলে পুলিশ জানিয়েছে।