বাংলাদেশ নৌবাহিনী ৪ অক্টোবর থেকে ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত ২২ দিনব্যাপী ‘মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান-২০২৫’ শুরু করেছে, যেখানে দেশের নদ-নদী ও উপকূলীয় এলাকায় মা ইলিশের প্রজনন মৌসুমের সময় ইলিশ আহরণ, পরিবহন এবং বিক্রয় সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ রাখা হয়েছে। এই পদক্ষেপ সরকারের নির্দেশনায় নেওয়া হয়েছে যাতে ইলিশের প্রজনন সংরক্ষণ হয় এবং অবৈধ মৎস্য আহরণ রোধ করা যায়।
ইলিশ মাছ দেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রজনন মৌসুমে বিশেষ সুরক্ষা দেয়ার জন্য এই ধরনের উদ্যোগ নিয়মিতভাবে নেয়া হয়। সরকারের নির্দেশে জুলাই থেকে অক্টোবর মাস ইলিশের প্রধান প্রজনন সময় হিসেবে ধার্য করা হয়েছে, যখন মা ইলিশের সংখ্যাকে বৃদ্ধি দিতে বিশেষ মনোযোগ দেয়া প্রয়োজন। এ সময়কালে ইলিশ আহরণ, পরিবহন, ক্রয়-বিক্রয় ও মজুদ সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ থাকে। পাশাপাশি, সামুদ্রিক মৎস্য আহরণ এলাকায় নৌবাহিনী সব ধরনের মাছ ধরার নৌযান নিয়ন্ত্রণ ও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে।
‘ইন এইড টু সিভিল পাওয়ার’ নীতির অধীনে নৌবাহিনীর জাহাজ, ক্রাফট এবং বোটসমূহ দৃঢ়ভাবে নদী-সমুদ্র তল্লাশি চালাচ্ছে। এ বছরের অভিযানে মোট ১৭টি যুদ্ধজাহাজ দেশের ৯টি উপকূলীয় জেলায় কার্যক্রম পরিচালনা করছে, যেখানে চাঁদপুর, কক্সবাজার, খুলনা, বাগেরহাট, পিরোজপুর, বরগুনা, বরিশাল এবং পটুয়াখালীতে বিশেষ টহল চলমান রয়েছে। গভীর সমুদ্রে দেশি ও বিদেশি অবৈধ প্রবেশ ঠেকাতে আধুনিক মেরিটাইম পেট্রোল এয়ারক্রাফট ও যুদ্ধজাহাজ দিয়ে সার্বক্ষণিক নজরদারি করা হচ্ছে।
নৌবাহিনী এই অভিযান স্থানীয় প্রশাসন, কোস্টগার্ড, নৌ পুলিশ, সশস্ত্র বাহিনী এবং মৎস্য বিভাগের সঙ্গে সমন্বিতভাবে পরিচালনা করছে। একইসঙ্গে, অসাধু জেলে ও অবৈধ মাছ ধরার বিরুদ্ধে কঠোর আইন প্রয়োগ এবং সচেতনতামূলক কার্যক্রম ত্বরান্বিত করা হচ্ছে।
জাতীয় সম্পদ মা ইলিশের সুষ্ঠু সংরক্ষণ এবং প্রজনন ক্ষেত্র সুরক্ষায় দেশের অর্থনৈতিক ও পরিবেশগত স্বার্থে এই অভিযানের গুরুত্ব অপরিসীম; নৌবাহিনী এই কাজের মাধ্যমে দেশের মৎস্য সম্পদ রক্ষা ও বৃদ্ধি নিশ্চিত করতে সম্পূর্ণরূপে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।