বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) দুই ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। অভিযুক্তরা হলেন সংস্থাটির সদস্য (প্রশাসন) এসএম লাবলুর রহমান এবং সদস্য (অপারেশনস) এয়ার কমোডর আবু সাঈদ মেহেবুব খান। ভুক্তভোগী ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করেছেন, এ দুই কর্মকর্তা সমঝোতা বা ঘুষ ছাড়া কোনো ফাইল অনুমোদন করেন না এবং তাদের দপ্তর থেকে কার্যক্রম সচল রাখা যায় না। এ কারণে ব্যবসায়ীরা প্রধান উপদেষ্টার দপ্তরে লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছেন এবং দ্রুত তদন্ত ও ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
অভিযোগে বলা হয়েছে, ঘুষ না দেওয়ার কারণে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের অভ্যন্তরে ১৬টি প্রতিষ্ঠানের লিজ বাতিল করা হয়েছে। ভুক্তভোগীরা দাবি করেছেন, লিজ নবায়ন বা নতুন করে বরাদ্দ দেওয়ার নামে কোটি কোটি টাকা ঘুষ আদায়ের প্রচেষ্টা চলছে। এর বাইরে চট্টগ্রাম ও সৈয়দপুর বিমানবন্দরেও একই ধরনের অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এসএম লাবলুর রহমানের বিরুদ্ধে পূর্বেও অনিয়মের অভিযোগ ছিল। সদস্য (অর্থ) থাকাকালে তিনি উন্নয়ন প্রকল্পের বিল আটকে ঘুষ আদায় করেছেন বলে অভিযোগ ওঠে। এছাড়া প্রকৌশলীদের ওপর প্রভাব খাটানো ও হুমকি দেওয়ার অভিযোগও রয়েছে। ২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ক্ষমতাসীন দলের প্রতি আনুগত্যের কারণে সরকারি ফ্ল্যাট সুবিধা পান বলেও অভিযোগে উল্লেখ রয়েছে।
অন্যদিকে, বিমানবাহিনীর কর্মকর্তা আবু সাঈদ মেহেবুব খান প্রেষণে বেবিচকে যোগ দেওয়ার পর বিভিন্ন বিমানবন্দরে লিজ নবায়নকে কেন্দ্র করে দুর্নীতির সিন্ডিকেট গড়ে তোলেন বলে অভিযোগকারীরা দাবি করেছেন। অভিযোগে বলা হয়, গত জুন মাসে তিনি ফ্রান্স সফরের সময়ও ঘুষ লেনদেন সম্পন্ন করেন। তার দপ্তরে বর্তমানে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ ফাইল দীর্ঘদিন ধরে আটকে আছে, যেগুলো উৎকোচ ছাড়া অনুমোদন হয় না।
যদিও অভিযুক্ত দুই কর্মকর্তা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। এসএম লাবলুর রহমান বলেছেন, “যাদের স্বার্থ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তারাই অভিযোগ করেছেন, আমি ঘুষ নিইনি।” অন্যদিকে আবু সাঈদ মেহেবুব খান দাবি করেন, তিনি সততার সঙ্গে কাজ করছেন এবং যেসব প্রতিষ্ঠানের লিজ বাতিল হয়েছে তাদের অনেকে চুক্তি ভঙ্গ করেছে বা নেতিবাচক প্রতিবেদনের কারণে অযোগ্য প্রমাণিত হয়েছে।
সংস্থার ভেতরে-বাইরে এ নিয়ে ব্যাপক আলোচনা চলছে। কর্মকর্তা-কর্মচারীদের একাংশ দাবি করেছেন, প্রেষণে আসা কর্মকর্তাদের প্রত্যাহার করা হলেও রাজনৈতিক প্রভাবের কারণে এই দুই কর্মকর্তা এখনো বহাল আছেন।