সিলেটের কোম্পানীগঞ্জের সাদাপাথর পর্যটনকেন্দ্রে চলমান পাথর লুটপাট প্রশাসনের নজরদারির মধ্যেই অব্যাহত রয়েছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রভাবশালী চক্রের অবৈধ দখলে প্রতিদিন শত শত নৌকায় নদী থেকে পাথর তোলা হচ্ছে, অথচ প্রশাসন কার্যকরভাবে ঠেকাতে পারছে না। গত দুই সপ্তাহেই প্রায় শতকোটি টাকার সমমূল্যের পাথর লুট হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা উজায়ের মাহমুদ আদনান জানিয়েছেন, এখন পর্যন্ত ১৭টি মামলা এবং ৭০ জনকে গ্রেপ্তার করা হলেও সমস্যার সমাধান হয়নি; সমন্বিত উদ্যোগ ছাড়া পুলিশের একার পক্ষে কিছু করা সম্ভব নয়।
গত বছরের ৫ আগস্ট থেকে শুরু হওয়া এই লুটপাটের ফলে এলাকাটি প্রায় পাথরশূন্য হয়ে পড়েছে। এর প্রভাব পড়েছে পর্যটন খাতে—সাদাপাথরের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দেখতে আসা ভ্রমণকারীরা হতাশ হয়ে ফিরছেন। জুলাই ও চলতি মাসে পাহাড়ি ঢলের সঙ্গে ধলাই নদীর উৎসমুখে বিপুল পাথর জমা হলেও কুচক্রী মহল প্রকাশ্যে তা সরিয়ে নিচ্ছে। প্রতিদিন নদীর তীর খুঁড়ে ও নৌকায় করে এসব পাথর পরিবহন করা হচ্ছে, যা স্থানীয় পরিবেশ ও ভূপ্রকৃতির জন্য হুমকিস্বরূপ।
২০১৭ সালের পাহাড়ি ঢলে ধলাই নদীর উৎসমুখে প্রায় পাঁচ একরজুড়ে প্রাকৃতিকভাবে জমা হয় এই সাদাপাথর। এরপর উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের তত্ত্বাবধানে তা সংরক্ষিত হয় এবং পর্যটনকেন্দ্র হিসেবে পরিচিতি পায়। নদীর ওপারে ভারতের মেঘালয়ের লুংলংপুঞ্জি ও শিলংয়ের চেরাপুঞ্জি অঞ্চলের ঝরনা থেকে বর্ষাকালে ভেসে আসা এই পাথরের মান বাজারে উত্তোলিত বা আমদানি করা পাথরের চেয়ে বেশি। কিন্তু লাগামহীন লুটপাটের কারণে একসময় সমৃদ্ধ এই প্রাকৃতিক সম্পদ আজ ধ্বংসের মুখে।