শুক্রবার (১ আগস্ট) সন্ধ্যা ৬টার দিকে এই ঘটনা ঘটে। আন্দোলনকারীদের দাবি ছিল, ‘জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র’ বাস্তবায়ন। তারা শাহবাগ মোড়ে তীব্র যানজট ও জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করে টানা অবরোধ চালিয়ে যাচ্ছিল।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সন্ধ্যার দিকে একদল তরুণ এসে নিজেদের ‘প্রকৃত জুলাই যোদ্ধা’ দাবি করে অবরোধকারীদের সরে যেতে বলেন। তারা ব্যারিকেড, ত্রিপল ও মাইক সরিয়ে ফেলেন এবং অবরোধকারীদের ‘ভুয়া, ভুয়া’ বলে স্লোগান দেন। উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়ের একপর্যায়ে উভয়পক্ষ একে অপরের পরিচয়পত্র দেখতে চাইলে হাতাহাতি শুরু হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ লাঠিচার্জ করে অবরোধকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয় এবং মঞ্চও ভেঙে ফেলে।
‘প্রকৃত’ জুলাই যোদ্ধাদের একজন আব্দুল খালেক বলেন, “সরকার যদি সনদ না দেয়, আমরা আবার ৫ তারিখে নামব। তবে আমরা জনদুর্ভোগ তৈরি করে আন্দোলন করতে চাই না। এখানে যারা বসেছিল, তারা নিজেদের স্বার্থ নিয়ে এসেছিল।”
আন্দোলনকারীদের পক্ষে থাকা মো. ইয়াছিন বলেন, “পুলিশ আমাকে পিটিয়েছে। পিজি হাসপাতাল থেকে একদল এসে আমাদের মঞ্চে হামলা চালিয়ে তা ভেঙে দেয়।”
অন্যদিকে আন্দোলনের মুখ্য সংগঠক মাসুদ রানা সৌরভ বলেন, “পুলিশ ও একদল হামলাকারী একসঙ্গে আমাদের ওপর চড়াও হয়। আমাদের দুইজন এখন হাসপাতালে ভর্তি। আমরা রাজু ভাস্কর্যে নতুন করে জড়ো হচ্ছি। পরবর্তী কর্মসূচি সেখান থেকেই জানানো হবে।”
প্রত্যক্ষদর্শী আরিফুল ইসলাম বলেন, “দুই দিন ধরে অবরোধে মানুষ ভোগান্তিতে ছিল। আজ যারা এসে সরিয়ে দিল, তাদের কথায় বাস্তবতার ছাপ ছিল। তারা গুলির চিহ্ন ও পরিচয়পত্রও দেখিয়েছে।”
এ বিষয়ে জানতে চাইলে রমনা বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মাসুদ আলম জানান, “আমরা অতিরিক্ত বলপ্রয়োগ করিনি। যারা এসে অবরোধ সরিয়েছে, তারা দাবি করেছে—ভুয়া পরিচয়ে কেউ অবরোধ করলে প্রকৃত যোদ্ধাদের সুনাম ক্ষুণ্ন হয়। আমরা পরিস্থিতি শান্ত রাখতে দায়িত্ব পালন করেছি।”
সামাজিক মাধ্যমে ঘটনাটি নিয়ে ব্যাপক আলোচনা চলছে। ‘আসল’ ও ‘ভুয়া’—এই দুই পক্ষের বিরোধের জেরে আন্দোলনের ভবিষ্যৎ কর্মসূচি নিয়ে তৈরি হয়েছে নতুন অনিশ্চয়তা।