বৃহস্পতিবার প্রকাশিত নীতিমালায় আগের বছরের মতোই মোট আসনের ৬৩ শতাংশ বিভিন্ন কোটায় বরাদ্দ রাখা হয়েছে। সবচেয়ে বড় অংশ—৪০ শতাংশ ক্যাচমেন্ট এলাকা কোটা। স্কুলসংলগ্ন এলাকার শিক্ষার্থীদের অগ্রাধিকার দিতে এই ব্যবস্থা চালু থাকলেও কর্মসূত্রে রাজধানীতে অস্থায়ীভাবে থাকা অভিভাবকরা এটিকে বৈষম্যমূলক বলে মনে করছেন। তাঁদের অভিযোগ, এই কোটা তাদের সন্তানদের সুযোগ সীমিত করে দেয়।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) বলছে, স্থানীয় শিক্ষার্থীদের জন্য অগ্রাধিকার রাখার মাধ্যমে ভিড় নিয়ন্ত্রণ ও এলাকায় সমতা নিশ্চিত করা সম্ভব। তবে বাস্তবে দুর্নীতি, ভুয়া ঠিকানা ব্যবহার ও প্রত্যয়নপত্রে অনিয়ম নিয়ে নানা অভিযোগ রয়েছে। ক্যাচমেন্ট কোটায় আবেদন করতে বাধ্যতামূলক ওয়ার্ড কাউন্সিলরের প্রত্যয়নপত্র নেওয়ার কারণে ভাড়াটিয়ারা প্রায়ই হয়রানির শিকার হন।
রাজধানীর মতিঝিল এলাকার বাসিন্দা আনিছুর রহমান জানান, গত বছর কাঙ্ক্ষিত স্কুলে তাঁর সন্তানের নাম লটারিতে ওঠেনি। একই অভিজ্ঞতার কথা বলেছেন অভিভাবক ফাহমিদুল হক, যার অভিযোগ—অনেকে ভুয়া ঠিকানা ব্যবহার করেন ও সুযোগ পেলে অর্থের বিনিময়ে প্রত্যয়নপত্র সংগ্রহ করেন।
ক্যাচমেন্ট ছাড়াও বিশেষ কোটায় রয়েছে ২৩ শতাংশ আসন। এর মধ্যে মুক্তিযোদ্ধা সন্তানদের জন্য ৫%, শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও অধীনস্থ দপ্তরের কর্মীদের জন্য ১%, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের জন্য ১০%, বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিক্ষার্থীদের জন্য ২%, একই স্কুলে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীর যমজ/সহোদরদের জন্য ৫%, এবং ষষ্ঠ শ্রেণিতে সরকারি প্রাথমিক স্কুল থেকে আসা শিক্ষার্থীদের জন্য অতিরিক্ত ১০% আসন বরাদ্দ বাধ্যতামূলক।
নীতিমালায় উল্লেখ না থাকলেও প্রচলিত ‘অলিখিত কোটা’র আওতায় বদলি হয়ে আসা সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীর সন্তানের জন্য প্রায় ৫ শতাংশ আসন সংরক্ষণ করা হয় বলে অভিভাবক ও কর্মকর্তারা মত দেন। সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মচারীদের সন্তানরাও বাড়তি সুবিধা পান।
মাউশির এক কর্মকর্তা জানিয়ে বলেন, মন্ত্রণালয় ও অধীন দপ্তরের কর্মীদের জন্য থাকা কোটা বাস্তবে খুবই সীমিত, এবং এর প্রয়োজনীয়তা নিয়ে প্রশ্ন তোলা যায়। তাঁর দাবি, ক্যাচমেন্ট কোটায় অনিয়মের প্রমাণ রয়েছে, তাই কঠোরভাবে নিয়ম প্রয়োগ ছাড়া বিকল্প নেই।
মাউশির মহাপরিচালক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) বি এম আব্দুল হান্নান বলেছেন, নীতিমালা অনুযায়ী এবারও লটারি পদ্ধতিতেই ভর্তি হবে। ভবিষ্যতে আপত্তি উঠলে বা নতুন প্রস্তাব এলে তা মন্ত্রণালয় বিবেচনা করতে পারে।
ডেস্ক রিপোর্ট