প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেছেন, গত ১৫ মাসে যুক্তরাষ্ট্রের কৃষি অর্থনীতি ও ফার্ম লবির সঙ্গে বাংলাদেশের দৃঢ় সম্পর্ক স্থাপন বর্তমান পররাষ্ট্রনীতির অন্যতম বড় অর্জন।
রবিবার সকালে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে দেওয়া এক পোস্টে তিনি এ মন্তব্য করেন।
শফিকুল আলম জানান, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে ড. খলিলুর রহমানের মাধ্যমে এই সাফল্যের সূচনা হয়। রোহিঙ্গা বিষয়ক হাই রিপ্রেজেন্টেটিভ হিসেবে দায়িত্ব পালনের পর তিনি জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ পান। গত ফেব্রুয়ারিতে অধ্যাপক ইউনূস তাকে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপনের দায়িত্ব দিয়ে ওয়াশিংটন ডিসিতে পাঠান। দীর্ঘদিন জাতিসংঘের বাণিজ্যনীতিবিষয়ক সংস্থায় কাজ করা এই অভিজ্ঞ কূটনীতিক দ্রুতই মার্কিন কৃষিখাতের প্রভাবশালী ব্যক্তিদের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলেন।
তিনি লেখেন, বাংলাদেশ যেমন কৃষিপণ্যের বড় আমদানিকারক, যুক্তরাষ্ট্র তেমনি বিশ্বের অন্যতম প্রধান কৃষিপণ্য রপ্তানিকারক দেশ—বিশেষ করে সয়াবিন, গম, তুলা ও ভুট্টার ক্ষেত্রে। মার্কিন কৃষিপণ্যে প্রবেশাধিকার বাংলাদেশের খাদ্য নিরাপত্তার জন্য গুরুত্বপূর্ণ; এটি আমদানির উৎসে বৈচিত্র্য এনে খাদ্য সরবরাহ নির্ভরতা কমাবে।
প্রেস সচিব আরও জানান, ড. খলিল বাংলাদেশের আমদানিকারক ও মার্কিন ফার্ম লবির মধ্যে একটি শক্তিশালী সেতুবন্ধন তৈরি করেছেন। তার উদ্যোগেই সাম্প্রতিক ওয়াশিংটন শুল্ক আলোচনায় বাংলাদেশ প্রতিযোগিতামূলক শুল্কহার পেতে সক্ষম হয়েছে, যা দেশের পোশাক শিল্পকে সুরক্ষা দিচ্ছে।
তিনি আরও উল্লেখ করেন, এই সপ্তাহে বাংলাদেশের আমদানিকারকরা যুক্তরাষ্ট্র থেকে এক বিলিয়ন ডলারেরও বেশি কৃষিপণ্য আমদানির প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। এটি দুই দেশের জন্যই লাভজনক এবং দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে নতুন মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
শফিকুল আলম বলেন, এই ক্রমবর্ধমান কৃষি-বাণিজ্যিক সম্পর্ক এখন দুই দেশের কূটনৈতিক আলোচনার মূল কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। ভবিষ্যতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য ঘাটতি কমে এলে আরও অনুকূল শুল্কহার নিয়ে আলোচনা সম্ভব হবে।
তার ভাষায়, “আমরা যদি যুক্তরাষ্ট্রের একটি গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক অংশীদার হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করতে পারি, তবে আর ব্যয়বহুল লবিস্ট নিয়োগের প্রয়োজন হবে না; বরং মার্কিন ফার্ম লবিই তাদের রাজনৈতিক প্রভাব ব্যবহার করে বাংলাদেশের পক্ষে কাজ করবে।”
প্রেস সচিব আরও বলেন, জাপান, চীন, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া ও ইউরোপের দেশগুলো যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে শক্তিশালী বাণিজ্যিক সম্পর্কের মাধ্যমে সমৃদ্ধি অর্জন করেছে। বাংলাদেশও এখন সেই পথ অনুসরণে প্রস্তুত এবং অন্তর্বর্তী সরকার ইতিমধ্যে যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ সম্পর্কের এই নতুন অধ্যায়ের ভিত্তি স্থাপন করেছে।
ডেস্ক রিপোর্ট