দীর্ঘ শুনানি শেষে রাঙ্গামাটির অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ) এর প্রভাবশালী নেতা মাইকেল চাকমাকে ২০০৭ সালের একটি চাঁদাবাজির মামলায় আট বছরের সশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করেছেন। একই মামলায় অপর আসামি সুমন চাকমাকেও একই সাজা দেওয়া হয়। এই রায় বুধবার প্রদান হলেও বিষয়টি বৃহস্পতিবার প্রকাশিত হয়।
২০০৭ সালের ৩০ অক্টোবর রাতে রাঙ্গামাটি জেলার লংগদু থানায় মাইকেল চাকমা এবং সুমন চাকমাকে চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাস কাণ্ডে অস্ত্র ও নগদ টাকাসহ নিরাপত্তা বাহিনী আটক করে। এরপর তাদের বিরুদ্ধে লংগদু থানায় মামলা দায়ের করা হয়। মামলার দীর্ঘ বিবেচনার পর আদালত তাদের দোষী সাব্যস্ত করে এই সাজা দেয়।
মাইকেল চাকমা ইউপিডিএফের কেন্দ্রীয় সংগঠক হিসেবে পরিচিত। ২০১৯ সালের এপ্রিল মাসে তিনি গুম হয়ে যান এবং প্রায় পাচ বছর নিখোঁজ থাকার পর ২০২৪ সালের আগস্ট মাসে তিনি মুক্তি পান। মুক্তির পর আদালত একাধিক মামলায় বিভিন্ন সাজা প্রদান করলেও মাইকেল চাকমার বিরুদ্ধে সাজাগুলো কার্যকর করা যায়নি গুম থাকার কারণে। সম্প্রতি লংগদু থানায় দায়ের হওয়া এই চাঁদাবাজির মামলায় আজীবন নিষ্ঠুর সাজা নিশ্চিত হওয়া এই আদালত রায়ে বিবৃত হয়।
ডিফেন্স এবং ইউপিডিএফ নেতৃত্ব এ রায়ের পর বিভিন্ন মাধ্যমে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে, noting যে মাইকেল দীর্ঘ দিন গুম থাকার পর ইতিমধ্যে কঠোর নির্যাতনের শিকার ছিলেন এবং নতুন করে কারাদণ্ড দেওয়া তাদের কাছে অকার্যকর বলে মনে হয়। এই রায় পার্বত্য অঞ্চলের সন্ত্রাস ও আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির নাজুক বাস্তবতার সঙ্গে সম্পর্কিত আলোচনাকে আরও তীব্র করবে বলে অনুধাবন করা হচ্ছে।
এই ঘটনার মাধ্যমে পার্বত্য চুক্তি বিরোধী বিভিন্ন গোষ্ঠীর চলমান সশস্ত্র কার্যক্রম এবং নিরাপত্তা বাহিনীর ভূমিকা পুনঃবিবেচিত হচ্ছে, যেখানে দীর্ঘ প্রতীক্ষিত বিচারের মধ্য দিয়ে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার চেষ্টাও প্রতিফলিত হয়। আদালতের এই রায় পার্বত্য অঞ্চলের রাজনৈতিক উত্তেজনা এবং সশস্ত্র সংঘাতের প্রেক্ষাপটেও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।