এক যুগের বেশি সময় পর বাংলাদেশ সফরে এসেছেন পাকিস্তানের উপ-প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ ইসহাক দার। তিন দিনের এ সফরে তিনি অন্তর্বর্তী সরকারের সদস্যদের পাশাপাশি বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করছেন।
তার সফরে বিশেষ গুরুত্ব পাচ্ছে বাণিজ্য, অর্থনীতি ও রাজনৈতিক সহযোগিতা, তবে পাশাপাশি ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে গণহত্যা এবং পাকিস্তানের ক্ষমা প্রার্থনার দাবি নিয়েও আলোচনার বিষয় উঠে আসছে।
শনিবার (২৩ আগস্ট) ঢাকায় পৌঁছেই ইসহাক দার বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ ও জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)-এর নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। বিএনপির পক্ষ থেকে এ বিষয়ে প্রকাশ্যে কিছু বলা হয়নি, তবে রবিবার সন্ধ্যায় দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গেও তার বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে।
জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, দুই দেশের অমীমাংসিত বিষয়গুলো অনুকূল পরিবেশে দ্রুত নিষ্পত্তি করতে হবে। অন্যদিকে এনসিপি বলেছে, বাংলাদেশ-পাকিস্তান সম্পর্ক এগিয়ে নিতে হলে ১৯৭১ সালের ইস্যুকে সরাসরি মোকাবিলা করতে হবে। কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে, এ সফরে ছয়টি দ্বিপাক্ষিক চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক (MoU) সই হতে পারে। এর মধ্যে সরকারি ও কূটনৈতিক পাসপোর্টধারীদের জন্য ভিসা বিলোপ, বাণিজ্য বিষয়ক যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠনসহ অর্থনৈতিক সহযোগিতা বিষয়ক চুক্তি রয়েছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, দীর্ঘদিন ধরে রাজনৈতিকভাবে সীমিত থাকা ঢাকা-ইসলামাবাদ সম্পর্কের ক্ষেত্রে এ সফরকে “ঐতিহাসিক” বলে উল্লেখ করছে পাকিস্তান। বাংলাদেশের কূটনৈতিক মহলও মনে করছে, উচ্চ পর্যায়ের সফর দুই দেশের সম্পর্কে নতুন গতি আনতে পারে। তবে সাবেক রাষ্ট্রদূত এম হুমায়ুন কবির মনে করিয়ে দিয়েছেন, “দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক এগিয়ে নিতে চাইলে পাকিস্তানকে অবশ্যই ১৯৭১ সালের গণহত্যার দায় স্বীকার করতে হবে এবং সে বিষয়ে সুস্পষ্ট অবস্থান নিতে হবে।”
উল্লেখ্য, সর্বশেষ ২০১২ সালে পাকিস্তানি পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিনা রব্বানি খার ঢাকা সফর করেছিলেন। এরপর দীর্ঘ সময় দুই দেশের সম্পর্ক সীমিত পর্যায়ে থাকলেও সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিবর্তনের পর সম্পর্ক পুনরায় সক্রিয় হওয়ার ইঙ্গিত মিলছে।