কক্সবাজার সীমান্তে পরিচালিত মাদকবিরোধী অভিযানে জব্দ হওয়া প্রায় ১ হাজার ৩২১ কোটি ৯০ লাখ টাকার বেশি মূল্যের বিপুল পরিমাণ মাদকদ্রব্য ধ্বংস করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। বুধবার বিজিবির রামু সেক্টরের উদ্যোগে কক্সবাজার ব্যাটালিয়ন (৩৪ বিজিবি) প্রশিক্ষণ মাঠে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এসব মাদক পুড়িয়ে, পিষে ও নষ্ট করে ধ্বংস করা হয়।
ধ্বংস করা মাদকের মধ্যে ছিল ২ কোটি ৩৩ হাজার ৯৪৯ পিস ইয়াবা, ১৪০ দশমিক ৪৯ কেজি ক্রিস্টাল মেথ (আইস), ২৫ দশমিক ৯৯৮ কেজি হেরোইন, ৪ দশমিক ৪০৫ কেজি কোকেন, ৫২ দশমিক ৮ কেজি গাঁজা, ৪ কেজি আফিম, ৬১ হাজার ৪৯১ ক্যান বিয়ার, ২২ হাজার ১৫৫ বোতল বিভিন্ন ধরনের মদ, ২ বোতল হুইস্কি, ১ হাজার ৭৯৯ লিটার বাংলা মদ, ১৬৯ বোতল ফেন্সিডিল, ১৯২ ক্যান কমান্ডো এনার্জি ড্রিংক, ৫৪০ কৌটা বার্মিজ জর্দা, ৩ লাখ ৩৭ হাজার ৬৪২ প্যাকেট সিগারেট এবং ৮০০ পিস ‘টার্গেট’ নামের ট্যাবলেট।
অনুষ্ঠানে বিজিবির রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আকছার খান বলেন, মাদক সামাজিক অবক্ষয়, জননিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য এক নীরব ঘাতক। বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্ত দিয়ে মাদক চোরাচালান প্রতিরোধে বিজিবির কক্সবাজার রিজিয়ন অগ্রণী ভূমিকা রাখছে। তিনি জানান, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার সাম্প্রতিক নির্দেশনার পর বিজিবি মাদকবিরোধী অভিযানে আরও জোরদার ভূমিকা পালন করছে এবং মহাপরিচালকের দিকনির্দেশনায় এসব কার্যক্রম আরও গতিশীল হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, সীমান্ত এলাকায় গোয়েন্দা কার্যক্রম ও নিয়মিত অভিযান পরিচালনার পাশাপাশি জনসচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমে মাদকের বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলার চেষ্টা করছে বিজিবি। মাদকমুক্ত বাংলাদেশ গঠনে সবার সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।
অনুষ্ঠানে বিজিবি রামু সেক্টর কমান্ডার কর্নেল মোহাম্মদ মহিউদ্দিন আহমেদ, র্যাব-১৫ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল কামরুল হাসান, কক্সবাজারের পুলিশ সুপার সাইফুদ্দিন শাহীন, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট শাহীদুল আলম, বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তা, প্রশাসনের প্রতিনিধি, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা, গণমাধ্যমকর্মী, শিক্ষক-শিক্ষার্থী এবং বিজিবি সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
বিজিবির তথ্য অনুযায়ী, গত বছর রামু সেক্টরের আওতাধীন ব্যাটালিয়নসমূহের অভিযানে ২ হাজার ৬৯৩ জনকে গ্রেপ্তার এবং মোট ২ হাজার ২১৬ কোটি টাকার মাদকদ্রব্য জব্দ করা হয়, যার মধ্যে প্রায় ৮৯৫ কোটি টাকার মাদক থানায় হস্তান্তর করা হয়।