আল্লাহর রহমতের নিদর্শন বৃষ্টি। কুরআন ও হাদিসে বৃষ্টিকে বরকতের প্রতীক হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে। রাসুলুল্লাহ (সা.) বৃষ্টির সময় যেভাবে আচরণ করতেন, সেগুলো মুসলিমদের জন্য আদর্শ ও অনুসরণীয়। চলুন জেনে নিই, বৃষ্টির দিনে কিছু গুরুত্বপূর্ণ সুন্নাহ কী কী—
১. বৃষ্টির সময় দোয়া করা:
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, “দুই সময়ে করা দোয়া ফেরত যায় না— আজান দেওয়ার সময় এবং বৃষ্টির সময়।” (আবু দাউদ, হাদিস: ২৫৪০)
→ অতএব, বৃষ্টির সময় নিজের জন্য, পরিবার, দেশ ও উম্মাহর জন্য দোয়া করা উত্তম।
২. বৃষ্টিতে কিছুটা ভিজা:
আনাস (রা.) বলেন, “আমরা রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে দেখতাম, তিনি বৃষ্টির সময় তার কাপড় খুলে দিতেন, যেন শরীরের কোনো অংশ বৃষ্টিতে ভিজে যায়।” (মুসলিম, হাদিস: ৮৯৮)
→ উদ্দেশ্য ছিল, আল্লাহর বরকতময় এই পানির স্পর্শ লাভ করা।
৩. আলহামদুলিল্লাহ বলা ও শুকরিয়া আদায়:
বৃষ্টি দেখলে বলা সুন্নাহ:
اللَّهُمَّ صَيِّبًا نَافِعًا
উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা সাইয়্যিবান নাফি'আ।
অর্থ: হে আল্লাহ! এটা কল্যাণকর বৃষ্টি করো। (বুখারি, হাদিস: ১০৩٢)
৪. বজ্রপাত ও মেঘের গর্জন শুনলে তাসবিহ:
আব্দুল্লাহ ইবনে জুবায়ের (রা.) বজ্রপাত শুনলে বলতেন—
سُبْحَانَ الَّذِي يُسَبِّحُ الرَّعْدُ بِحَمْدِهِ وَالْمَلَائِكَةُ مِنْ خِيفَتِهِ
অর্থ: পবিত্র সে সত্তা, যার প্রশংসায় বজ্র গর্জে এবং ফেরেশতাগণ তার ভয়ে তাসবিহ পড়ে। (মুআত্তা মালিক)
৫. ঘরবন্দি না হয়ে আল্লাহর কুদরত স্মরণ:
বৃষ্টির দিনকে অলসতা বা শুধুই বিশ্রামের দিন মনে না করে বরং আল্লাহর সৃষ্টির নিদর্শন হিসেবে উপলব্ধি করা এবং তাঁর কুদরত নিয়ে চিন্তা করা সুন্নাহর অংশ।
৬. পানির অপচয় থেকে বিরত থাকা:
বৃষ্টি হলেই অনেকেই পানির ব্যবহার বাড়িয়ে দেন, যা ইসলামের দৃষ্টিতে অপছন্দনীয়। রাসুল (সা.) অতি প্রয়োজনে যতটুকু দরকার, ততটুকুই ব্যবহারের শিক্ষা দিয়েছেন।
বৃষ্টি কেবল আবহাওয়ার একটি পরিবর্তন নয়, এটি আল্লাহর পক্ষ থেকে রহমতের একটি বার্তা। এই সময়ে দোয়া, শুকরিয়া এবং সুন্নাহসমূহ পালন করলে একজন মুমিনের জন্য তা হয়ে উঠতে পারে নেকির বিরাট উপলক্ষ।