যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসি এবং বৃহত্তম শহর শিকাগোতে ডোনাল্ড ট্রাম্পের অভিবাসী বিরোধী অভিযান ও সেনা মোতায়েনকে কেন্দ্র করে ব্যাপক বিক্ষোভ দেখা গেছে। হাজার হাজার মানুষ শান্তিপূর্ণভাবে রাস্তায় নেমে টرمپ প্রশাসনের কঠোর পদক্ষেপের বিরুদ্ধে তাদের অসন্তোষ প্রকাশ করেন এবং এই কারনেই তারা ‘স্বৈরাচারবাদের’ তীব্র বিরোধিতা করেন। বিক্ষোভকারীরা ট্রাম্পের কর্মকাণ্ডকে ‘হিটলার’ ও ‘স্টালিন’-এর সাথে তুলনা করেও থাকেন।
এই বিক্ষোভগুলো মূলত ট্রাম্প সরকারের আইস (ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট) এবং ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েনের বিরুদ্ধেই। ওয়াশিংটনে, হোয়াইট হাউসের আশপাশে জাতীয় পতাকা, পোস্টার ও ব্যানার হাতে হাজারো বিক্ষোভকারী মিছিল করেন, যেখানে “Trump Must Go Now” এবং “Free DC”-এর মতো স্লোগান ছড়িয়ে পড়ে। পুলিশের কঠোর তৎপরতা সত্বেও আন্দোলনকারীরা নিজেদের অধিকার আদায়ে অনড় থাকেন। তারা বলেছেন, প্রশাসন কর্তৃত্ববাদী শাসন ব্যবস্থা চাপিয়ে দিচ্ছে, যা যুক্তরাষ্ট্রের সাংবিধানিক ও গণতান্ত্রিক অধিকারের পরিপন্থী।
শিকাগোতেও সমান তীব্রতায় বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। জনতা জানায়, ট্রাম্পের সেনা মোতায়েন শুধু অভিবাসী জনগণের ওপর নয়, পুরো শহরবাসীর জীবনে ভয় ও অনিশ্চয়তা সৃষ্টি করছে। ব্যবসায়িক ও সামাজিক কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে এবং মানুষের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ বেড়েছে। ট্রাম্পের এই পদক্ষেপকে 'আটক, তল্লাশি ও ধরা’ অভিযান হিসেবে তারা নেন, যা সাধারণ মানুষের ওপরও অনেক সময় অবৈধ ও অযথা হয়রানি সৃষ্টি করছে।
এই বিক্ষোভগুলো প্রায় কয়েক মাস ধরে চলমান ট্রাম্প প্রশাসনের নতুন অভিবাসন নীতির বিরোধিতা সূত্রপাত। প্রশাসনের পক্ষ থেকে আইসি, ইউএস মার্শাল সার্ভিস, এফবিআইসহ একাধিক সংস্থা সহায়তায় অভিবাসন সংক্রান্ত অভিযান চালানো হচ্ছে, যা অনেক সময় সাধারণ নাগরিকদেরও টার্গেট করছে। অনেক এলাকায় ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েন কিন্তু তা নিয়ে স্থানীয় প্রশাসন ও সাধারণ মানুষের তীব্র অসন্তোষ বিরাজ করছে।
প্রসঙ্গত, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সম্প্রতি ‘পেন্টাগন’ বা প্রতিরক্ষা বিভাগের নাম পরিবর্তন করে ‘ডিপার্টমেন্ট অব ওয়ার’ ঘোষণা করেছেন এবং এই কঠোর নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা সম্প্রসারণের কথাও জানিয়েছেন। এ নিয়ে স্থানীয় রাজনীতিবিদসহ বিভিন্ন সংগঠন তাঁকে ‘স্বৈরাচারবাদী’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। ইলিনয়েসের গভর্নর জেবি প্রিটজকার বলেছেন, “এটি স্বাভাবিক নয়, আমরা কোনো স্বৈরাচারী শাসককে ভয় পাবো না।’’
সার্বিকভাবে বিশ্লেষণে দেখা যায়, ট্রাম্পের অভিবাসী বিরোধী হিংস্র অভিযান এবং সেনা মোতায়েনের নীতির বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষ ও স্থানীয় প্রশাসকদের ব্যাপক প্রতিরোধ এবং গর্জন উচ্চারণ করছে। এই প্রতিক্রিয়া শুধু রাজনৈতিক মানচিত্রেই নয়, সামগ্রিক সামাজিক ও মানবাধিকার পরিস্থিতিতেও উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলছে।
এই বিক্ষোভগুলি যুক্তরাষ্ট্রের বৃহত্তম দুই শহরে ন্যায় ও মানবাধিকার রক্ষার্থে গণতান্ত্রিক স্বত্ত্বার দাবিকে দৃঢ়ভাবে তুলে ধরেছে এবং ট্রাম্প প্রশাসনের কড়া নীতির বিরুদ্ধে সমাজের প্রতিরোধ বৃদ্ধির প্রতিফলন ঘটিয়েছে।