চট্টগ্রাম বন্দরে কনটেইনারের চাপ আশঙ্কাজনকভাবে বেড়ে গিয়ে নতুন সংকট তৈরি করেছে। বন্দরের প্রধান জেটিতে আগে যেখানে একসঙ্গে ১০টি জাহাজ ভেড়ানো হতো, এখন সেটি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৩টিতে। এতে বহির্নোঙরে জাহাজের অপেক্ষার সময় কমে মাত্র দুই দিনে নেমে এসেছে। তবে এর ফলে বন্দরের ইয়ার্ডে কনটেইনার জমে রেকর্ড মাত্রায় পৌঁছেছে। সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী, বন্দরের বিভিন্ন ইয়ার্ডে ৪৮ হাজার ৭৫১ টিইইউএস কনটেইনার রয়েছে, যা সাম্প্রতিক সময়ে সর্বোচ্চের কাছাকাছি।
চট্টগ্রাম বন্দরের মোট ধারণক্ষমতা ৫৩ হাজার ৫১৮ টিইইউএস হলেও নিরাপদ চলাচলের জন্য ৩০ শতাংশ জায়গা খালি রাখতে হয়। স্বাভাবিক সময়ে গড়ে ৩৭-৩৮ হাজার কনটেইনার মজুত থাকে। ফলে বর্তমানে জমে থাকা কনটেইনারের পরিমাণ স্বাভাবিক সীমার অনেক ওপরে। কর্মকর্তারা বলছেন, আমদানি বাড়ায় এবং একসঙ্গে বেশি জাহাজ ভেড়ানোর ফলে এই চাপ তৈরি হয়েছে। এর সঙ্গে নিলামযোগ্য কনটেইনার ও আইসিডি গামী কনটেইনারও জটকে আরও বাড়িয়েছে।
এ পরিস্থিতি মোকাবিলায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) নতুন নির্দেশনা জারি করেছে। নির্দেশনা অনুযায়ী, জাহাজ থেকে কনটেইনার নামার পরদিনের মধ্যেই সেগুলো অফডকে নিয়ে যেতে হবে। এতদিন চার দিন পর্যন্ত বিনা শুল্কে বন্দরে কনটেইনার রাখা যেত, যা আমদানিকারক ও সংস্থাগুলো ব্যবহার করত।
এনবিআরের মতে, এই সুযোগই বন্দরে জট তৈরির অন্যতম কারণ। চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউস জানিয়েছে, বিশেষ পরিস্থিতি বা সক্ষমতার ঘাটতি থাকলে কমিশনার ডুয়েল ডেলিভারির অনুমতি দিতে পারবেন।
বর্তমানে ৩০টির বেশি দেশি-বিদেশি শিপিং লাইনের ১২৫–১৩০টি জাহাজ চট্টগ্রাম বন্দরে পণ্য আনে। ৬৫ ধরনের আমদানি পণ্য ডেলিভারি এবং তৈরি পোশাক রফতানির কার্যক্রম সম্পন্ন হয় ২১টি বেসরকারি অফডকে। তবে বন্দর ব্যবহারকারীদের মতে, অফডকের সক্ষমতা ও যাতায়াতের রাস্তার অবস্থা উন্নত না হলে সমস্যা আরও ঘনীভূত হতে পারে।
বন্দর সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, বহির্নোঙরে গম, কয়লা বা ক্লিংকারজাতীয় পণ্য খালাস করা গেলেও কনটেইনার লোড-আনলোডের জন্য বন্দরের নির্দিষ্ট টার্মিনাল ব্যবহার করতে হয়। তাই আমদানি বৃদ্ধির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে অবকাঠামো, লজিস্টিক ও ট্রান্সপোর্ট ব্যবস্থা উন্নত করা জরুরি হয়ে পড়েছে।
চট্টগ্রাম বন্দরে কনটেইনার জট, এনবিআরের কঠোর নির্দেশনা
- আপলোড সময় : ২০-০৮-২০২৫ ০৮:৫৭:১৮ পূর্বাহ্ন
- আপডেট সময় : ২০-০৮-২০২৫ ০২:৩৬:৩৭ অপরাহ্ন

কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ