সরকারি নথি অনুযায়ী, এই চুক্তিতে যুদ্ধবিমান কেনার পাশাপাশি প্রশিক্ষণ, রক্ষণাবেক্ষণ, যন্ত্রাংশ ও সংশ্লিষ্ট খরচও অন্তর্ভুক্ত থাকবে। অর্থ মন্ত্রণালয় ২০৩৫–৩৬ অর্থবছর পর্যন্ত ১০ বছরের কিস্তিতে পরিশোধের ব্যবস্থা করবে।
প্রত্যেকটি বিমানের ভিত্তিমূল্য ধরা হয়েছে ৬০ মিলিয়ন ডলার, যা ২০টি বিমানের জন্য মোট ১.২ বিলিয়ন ডলার। প্রশিক্ষণ, যন্ত্রপাতি ও পরিবহন বাবদ আরও ৮২০ মিলিয়ন ডলার যুক্ত হবে। বীমা, ভ্যাট, এজেন্সি কমিশন ও অবকাঠামোগত ব্যয়সহ সর্বমোট ব্যয় দাঁড়াবে ২.২০ বিলিয়ন ডলার।
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনুস চীনে সফরের সময় যুদ্ধবিমান কেনার প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা করেন এবং চীন ইতিবাচক সাড়া দেয়। পরবর্তীতে সরকার এপ্রিলে বিমানবাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল হাসান মাহমুদ খানের নেতৃত্বে ১১ সদস্যের আন্তঃমন্ত্রণালয় কমিটি গঠন করে। কমিটি মূল্য নির্ধারণ, অর্থপ্রদানের শর্ত, রক্ষণাবেক্ষণ, প্রশিক্ষণ ও অন্যান্য বিষয় নিয়ে চূড়ান্ত সমঝোতা করবে।
জে-১০সিই হলো চীনের জে-১০সি মডেলের রপ্তানি সংস্করণ, যা ইতোমধ্যেই চীনা বিমানবাহিনীতে সেবায় রয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে এ মডেল বৈশ্বিক আলোচনায় আসে, যদিও কিছু দাবির সত্যতা এখনো যাচাই হয়নি।
তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পরিকল্পনা চূড়ান্ত হয়নি এবং বিষয়টি এখনো মূল্যায়নাধীন। বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব পিস অ্যান্ড সিকিউরিটি স্টাডিজের সভাপতি মেজর জেনারেল (অব.) এ এন এম মুনিরুজ্জামান মনে করিয়ে দেন, বৈশ্বিক ভূরাজনৈতিক পরিস্থিতি বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র–চীন সম্পর্কের টানাপোড়েনকে বিবেচনায় রাখতে হবে।
বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর বর্তমান বহরে রয়েছে মোট ২১২টি বিমান, যার মধ্যে ৪৪টি ফাইটার জেট। এর মধ্যে ৩৬টি হলো চীনা তৈরি এফ-৭, আর বাকি বহরে আছে মিগ-২৯বি, ইয়াক-১৩০, কে-৮ ট্রেইনার, সি-১৩০জে পরিবহন বিমান ও বিভিন্ন ধরনের হেলিকপ্টার।