মালয়েশিয়ার শিক্ষাব্যবস্থা নিয়ে জনগণের মধ্যে অসন্তোষ তীব্র আকার ধারণ করেছে। আন্তর্জাতিক বাজার গবেষণা প্রতিষ্ঠান ইপসোসের সাম্প্রতিক এক জরিপে দেখা গেছে, দেশটির অর্ধেকেরও বেশি নাগরিক বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থায় সন্তুষ্ট নন।
‘ইপসোস ২০২৫ গ্লোবাল এডুকেশন মনিটর’ শীর্ষক জরিপে অংশগ্রহণকারীদের ৫৬ শতাংশ মালয়েশিয়ার শিক্ষাব্যবস্থা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। বিপরীতে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন মাত্র ৪৪ শতাংশ মানুষ। প্রতিবেশী ইন্দোনেশিয়া ও থাইল্যান্ডের তুলনায় এই হার উল্লেখযোগ্যভাবে কম।
অসন্তুষ্টির প্রধান কারণ হিসেবে জরিপে উঠে এসেছে শিক্ষার অসম সুযোগ, পুরনো অবকাঠামো এবং আধুনিক প্রযুক্তির সীমিত ব্যবহার। ইপসোস মালয়েশিয়ার ব্যবস্থাপনা পরিচালক অরুণ মেননের মতে, সবার জন্য সমান সুযোগ, উন্নত অবকাঠামো এবং নিরাপদ ডিজিটাল পরিবেশ নিশ্চিত করা এখন সময়ের দাবি।
শিক্ষায় প্রযুক্তি ব্যবহারে জনগণের মধ্যে বিভক্ত মতামত দেখা গেছে। মাত্র এক-চতুর্থাংশ মনে করেন প্রযুক্তি শিক্ষার মান বাড়াবে। তবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ব্যবহারের ক্ষেত্রে গ্রহণযোগ্যতা তুলনামূলকভাবে বেশি। অন্যদিকে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারে স্পষ্ট মনোভাব প্রকাশ করেছেন অংশগ্রহণকারীরা—৭০ শতাংশ মনে করেন ১৪ বছরের কম বয়সীদের জন্য এটি নিষিদ্ধ করা উচিত।
জরিপের সবচেয়ে উদ্বেগজনক ফলাফল হলো, অংশগ্রহণকারীদের ৩৭ শতাংশ যুবসমাজের মানসিক স্বাস্থ্যকে শিক্ষার সাথে সম্পর্কিত অন্যান্য সব উদ্বেগের চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা হিসেবে দেখেছেন। এটি বুলিং, নিম্নমানের শিক্ষা কিংবা চাকরির বাজারের অমিলের চেয়েও বড় উদ্বেগ হিসেবে উঠে এসেছে।
গবেষণা দল বলছে, মালয়েশিয়ার শিক্ষানীতিতে সমান সুযোগ, প্রযুক্তির নিরাপদ ব্যবহার এবং মানসিক স্বাস্থ্য সহায়তাকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য উন্নত শিক্ষা ব্যবস্থা গড়তে শিক্ষা মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট সব সংস্থার মধ্যে আরও শক্তিশালী সহযোগিতা জরুরি।