তাওবার গুরুত্ব-
আল্লাহ তাআলা মানুষের জন্য তাওবার দরজা সর্বদা খোলা রেখেছেন। মানুষ যত বড় গুনাহই করুক না কেন, আন্তরিকভাবে তাওবা করলে আল্লাহ তা ক্ষমা করেন।
কোরআনের আয়াত:
إِنَّ اللَّهَ يُحِبُّ التَّوَّابِينَ وَيُحِبُّ الْمُتَطَهِّرِينَ
“নিশ্চয়ই আল্লাহ তাওবাকারীদেরকে ভালোবাসেন এবং যারা পবিত্রতা অর্জন করে তাদেরকেও ভালোবাসেন।” (সুরা বাকারা: ২২২)
قُلْ يَا عِبَادِيَ الَّذِينَ أَسْرَفُوا عَلَى أَنْفُسِهِمْ لَا تَقْنطُوا مِنْ رَحْمَةِ اللَّهِ إِنَّ اللَّهَ يَغْفِرُ الذُّنُوبَ جَمِيعًا إِنَّهُ هُوَ الْغَفُورُ الرَّحِيمُ
“বলুন, হে আমার বান্দারা যারা নিজেদের প্রতি সীমালঙ্ঘন করেছো, তোমরা আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হয়ো না। নিশ্চয়ই আল্লাহ সব গুনাহ ক্ষমা করেন। তিনি তো অতি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।” (সুরা জুমার: ৩৯:৫৩)
إِلَّا مَنْ تَابَ وَآمَنَ وَعَمِلَ عَمَلًا صَالِحًا فَأُولَٰئِكَ يُبَدِّلُ اللَّهُ سَيِّئَاتِهِمْ حَسَنَاتٍ وَكَانَ اللَّهُ غَفُورًا رَحِيمًا
“কিন্তু যারা তাওবা করে, ঈমান আনে এবং সৎকাজ করে, তাদের মন্দ কাজগুলোকে আল্লাহ সওয়াবে পরিবর্তন করে দেন। আল্লাহ তো অতীব ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।” (সুরা ফুরকান: ৭০)
সালাতুত-তাওবার ফজিলত-
১. গুনাহ মাফের নিশ্চয়তা।
২. তাওবাকারীকে আল্লাহ ভালোবাসেন।
৩. মন্দ কাজগুলো সওয়াবে পরিণত হয়।
৪. হৃদয় নরম হয় ও ঈমান শক্তিশালী হয়।
৫. গাফিলদের দল থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
হাদিস:
مَا مِنْ عَبْدٍ يُذْنِبُ ذَنْبًا فَيُحْسِنُ الطَّهُورَ، ثُمَّ يَقُومُ فَيُصَلِّي رَكْعَتَيْنِ، ثُمَّ يَسْتَغْفِرُ اللَّهَ، إِلَّا غَفَرَ اللَّهُ لَهُ
“কোনো বান্দা যখন গুনাহ করে, তারপর ভালোভাবে অজু করে দুই রাকাআত নামাজ পড়ে এবং আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করে, তখন আল্লাহ অবশ্যই তাকে ক্ষমা করে দেন।” (সুনানু আবি দাউদ: ১৫২১; সুনানুত তিরমিজি: ৪০৬)
রসুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের তাওবা-
হাদিস:
إِنِّي لَأَسْتَغْفِرُ اللَّهَ وَأَتُوبُ إِلَيْهِ فِي الْيَوْمِ أَكْثَرَ مِنْ سَبعِينَ مَرَّةً
“আমি প্রতিদিন আল্লাহর কাছে সত্তর বারেরও বেশি ক্ষমা চাই ও তাঁর দিকে ফিরে আসি।” (সহিহ বুখারি: ৬৩০৭)
রসুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মানুষের প্রতি উদাহরণ স্থাপন করেছেন। তিনি প্রমাণ করেছেন, বান্দার উচিত নিয়মিত আল্লাহর কাছে তাওবা করা। (সহিহ মুসলিম: ২৭০২)
তাওবা নামাজের পদ্ধতি-
১. সুন্দরভাবে অজু করা।
২. দুই রাকাআত নফল নামাজ আদায় করা।
৩. নামাজ শেষে আন্তরিকভাবে তাওবা করা, দুআ করা এবং গুনাহের ক্ষমা চাওয়া।
৪. দৃঢ় সংকল্প করা, আর কখনো ঐ গুনাহ করা হবে না।
মানুষ প্রায়শই গুনাহের প্রবণতায় থাকে। তবে আল্লাহর করুণা অসীম। তিনি চান বান্দারা তাঁর দিকে ফিরে আসুক। সালাতুত-তাওবা এমন এক ইবাদত যা বান্দাকে গুনাহ থেকে মুক্তি দেয় এবং আল্লাহর নৈকট্যে পৌঁছে দেয়। তাই প্রতিটি মুমিনের উচিত, যখনই গুনাহ হবে সঙ্গে সঙ্গে অজু করে দুই রাকাআত সালাতুত-তাওবা পড়া এবং আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাওয়া।