অতিথি সেবা বা মেহমানদারি ইসলামে অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ একটি আমল। এটি শুধু ইসলামের সৌন্দর্যের প্রতিফলন নয়, বরং মানবিকতা ও সামাজিক সৌহার্দ্যেরও প্রকাশ। রসুলুল্লাহ ﷺ নিজে মেহমানদারি করতেন এবং সাহাবিদেরও এতে উৎসাহিত করতেন।
হেরা গুহায় প্রথমবার ফেরেশতা জিবরাঈল (আ.)-কে দেখে ভীতসন্ত্রস্ত অবস্থায় নবী ﷺ যখন খাদিজা (রা.)-এর কাছে ফিরে আসেন, তখন তিনি সান্ত্বনা দিয়ে বলেন—
হযরত খাদিজা (রা.)-এর বাণী:
“আপনি শান্ত থাকুন। আল্লাহ কখনো আপনাকে অপমানিত করবেন না। আপনি আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে সদ্ব্যবহার করেন, সবসময় সত্য বলেন, দুর্বলদের সহায়তা করেন, অতিথিদের সেবা করেন এবং বিপদগ্রস্তদের সাহায্য করেন।”
মেহমানদারি আল্লাহর প্রিয় বান্দাদের গুণ। হজরত ইবরাহিম (আ.)-কে আল্লাহ তাঁর ‘খলিল’ বা বন্ধু হিসেবে গ্রহণ করার অন্যতম কারণ ছিল তাঁর অতিথিপরায়ণতা।
তাম্বিহুল গাফিলিন থেকে:
“আল্লাহ তাআলা হজরত ইবরাহিম (আ.)-কে এ কারণে বন্ধুরূপে গ্রহণ করেছেন যে, তিনি মানুষকে আহার করাতেন, বেশি সালাম দিতেন, আর মানুষ রাতে ঘুমিয়ে পড়লে তিনি নামাজ আদায় করতেন।”
সহিহ বুখারি (হাদিস ৬১৩৬):
রাসুলুল্লাহ ﷺ বলেন, “যে ব্যক্তি আল্লাহ ও পরকালের প্রতি ঈমান রাখে, সে যেন অতিথির সমাদর করে।”
মেহমানদারি শুধু সামাজিক সৌজন্য নয়, বরং এটি ঈমানদারের পরিচায়ক। অতিথি সেবা মানুষের হৃদয় জয় করে, সমাজে সৌহার্দ্য বৃদ্ধি করে এবং আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের মাধ্যম হয়। তাই আমাদের উচিত, সক্ষমতা অনুযায়ী অতিথির যথাযথ সম্মান ও আপ্যায়ন করা এবং এ বিষয়ে নবী ﷺ ও পূর্ববর্তী নবীগণের আদর্শ অনুসরণ করা।