ফার্স নিউজ এজেন্সির বরাত দিয়ে পার্সটুডে জানিয়েছে, ইসরাইলের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা আইডিএ (Israel’s Agency for International Development Cooperation) ১৯৫৮ সাল থেকে উন্নয়ন কূটনীতির বাহন হিসেবে কাজ করছে। যদিও সংস্থাটি “বিশ্বব্যাপী সহযোগিতার প্রতীক” হিসেবে পরিচিত, তবে বিডিএস আন্দোলনের দাবি—এই সংস্থাটি ইসরাইলের দখলদারিত্ব ও বৈষম্যমূলক নীতিকে বৈধতা দেওয়ার হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।
ফিলিস্তিনি নাগরিক সমাজের উদ্যোগে গঠিত বিডিএস আন্দোলনের মূল লক্ষ্য তিনটি: বয়কট, অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা এবং ফিলিস্তিনে দখল বন্ধে রাজনৈতিক চাপ। আন্দোলনটি অভিযোগ করছে, মাশাউ (MASHAV)-এর মতো সংস্থাগুলো মানবিক উন্নয়নের ছদ্মবেশে ইসরাইলের “নরম কূটনীতি” এগিয়ে নিতে কাজ করছে। ইসরাইলি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত মাশাউ ইতোমধ্যে ১৪০টিরও বেশি দেশে কার্যক্রম চালিয়েছে এবং ৩ লাখ ৫০ হাজারেরও বেশি ব্যক্তিকে প্রশিক্ষণ দিয়েছে। তবে বিডিএস-এর মতে, এসব কার্যক্রম আসলে একধরনের “গ্রিনওয়াশিং”—যার মাধ্যমে ইসরাইল নিজেকে পরিবেশবান্ধব ও উদ্ভাবনী হিসেবে উপস্থাপন করছে, অথচ ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে কৃষি ও পানি সম্পদ ধ্বংস করছে।
সমালোচকরা উল্লেখ করেছেন, পশ্চিম তীরের ৯০ শতাংশ পানি সম্পদ ইসরাইলের নিয়ন্ত্রণে থাকা সত্ত্বেও তারা অন্যান্য দেশে ড্রিপ সেচের প্রযুক্তি রপ্তানি করে “মরুভূমিকে সমৃদ্ধ করার” ব্র্যান্ড ইমেজ তৈরি করছে। একই সময়ে, গাজা উপত্যকার ৮০ শতাংশ মানুষ খাদ্য সহায়তার ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে।
বিডিএস-এর বিশ্লেষণ অনুযায়ী, এসব প্রকল্প প্রকৃত উন্নয়নের চেয়ে ইসরাইলের কূটনৈতিক বিচ্ছিন্নতা কাটানোর অংশ। স্থানীয় জনগণের প্রয়োজনের পরিবর্তে প্রকল্পগুলো এমনভাবে বাছাই করা হয় যাতে ইসরাইলি কোম্পানিগুলোর বাজার সম্প্রসারণ ও ইতিবাচক প্রচারণা জোরদার হয়।
ভারতে মাশাউ–এর কার্যক্রমও একই উদ্দেশ্য পূরণ করছে বলে অভিযোগ। ২০০৬ সালে শুরু হওয়া ইন্দো-ইসরাইলি কৃষি কর্মসূচির আওতায় ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে সেন্টার অব এক্সিলেন্স (COE) স্থাপন করা হয়। এসব কেন্দ্র ভারত সরকারের অর্থায়নে স্থানীয় কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের জমিতে গড়ে তোলা হলেও, বিডিএস দাবি করেছে যে এগুলো মূলত ইসরাইলি প্রচারণার হাতিয়ার হিসেবে কাজ করছে—যেখানে কৃষকদের জন্য প্রকৃত কোনো সুবিধা নেই, বরং তৈরি হচ্ছে প্রচারণামূলক ভিডিও ও প্রতিবেদন, যা ইসরাইলি “উন্নয়ন সফলতা” প্রদর্শনের অংশ।
ডেস্ক রিপোর্ট