শক্তিশালী টাইফুন কালমায়েগির ভয়াবহ আঘাতে বিপর্যস্ত পুরো ফিলিপিন্সে জরুরি অবস্থা জারি করেছে দেশটির প্রেসিডেন্ট ফার্দিনান্দ মার্কোস জুনিয়র। এ পর্যন্ত কমপক্ষে ১১৪ জনের মৃত্যু এবং ১২৭ জন নিখোঁজ থাকার খবর নিশ্চিত করেছে সরকার। প্রেসিডেন্ট মার্কোস জানিয়েছেন, এই জরুরি অবস্থা ঘোষণা দ্রুত উদ্ধার, ত্রাণ ও পুনর্বাসন কার্যক্রম পরিচালনায় সহায়তা করবে এবং জরুরি তহবিল ব্যবহারের পথ সহজ করবে।
জাতীয় দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাস ও ব্যবস্থাপনা কাউন্সিলের এক ব্রিফিংয়ে প্রেসিডেন্ট বলেন, টাইফুন কালমায়েগি এবং আসন্ন আরেকটি ঝড় উয়ান দেশের বিস্তীর্ণ অঞ্চলজুড়ে প্রভাব ফেলতে পারে। তার মতে, অন্তত ১০ থেকে ১২টি প্রদেশ এই দুটি ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে, যার মধ্যে মধ্যাঞ্চলের সেবু প্রদেশের পরিস্থিতি সবচেয়ে ভয়াবহ।
সেবুতে ঘরবাড়ি, সেতু, এমনকি জাহাজের কনটেইনার পর্যন্ত ভেসে গেছে বন্যার জলে। স্থানীয় প্রশাসন জানিয়েছে, শুধু এই প্রদেশেই অর্ধশতাধিক মানুষের মৃত্যু হয়েছে। লিলোয়ান শহরে একদিনেই উদ্ধার করা হয়েছে ৩৫টি মরদেহ। হাজারো মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়েছেন; কেউ কেউ ছাদে আশ্রয় নিয়ে সাহায্যের অপেক্ষায় আছেন।
প্রায় দুই লাখ মানুষকে ইতোমধ্যে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। অনেক এলাকা এখনো যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তারা বলছেন, অবৈধ খনন কার্যক্রম ও দুর্বল বাঁধনির্মাণ এই ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতিকে আরও তীব্র করেছে। গত মাসের ৬.৯ মাত্রার ভূমিকম্পের ক্ষয়ক্ষতি সামলাতেই যখন দেশটি ব্যস্ত, তখন নতুন করে টাইফুনের এই আঘাত পরিস্থিতিকে জটিল করে তুলেছে।
এদিকে, ফিলিপিন্সে তাণ্ডব চালানোর পর কালমায়েগি দক্ষিণ চীন সাগর পেরিয়ে ভিয়েতনাম উপকূলের দিকে ধেয়ে যাচ্ছে। আবহাওয়া দপ্তরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, শুক্রবার সকালে ভিয়েতনামে আঘাত হানতে পারে ঝড়টি। ভারি বৃষ্টি ও আকস্মিক বন্যার আশঙ্কায় থাইল্যান্ডেও সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
ডেস্ক রিপোর্ট