নিউইয়র্কের ১১১তম মেয়র হিসেবে নির্বাচিত হওয়ার পর প্রথম পাবলিক ভাষণে জোহরান মামদানি ঘোষণা করেছেন, ‘‘নিউইয়র্কে ইসলামোফোবিয়ার কোনো স্থান নেই।’’ ১০০ বছরের ইতিহাসে শহরের সবচেয়ে কনিষ্ঠ ও প্রথম মুসলিম মেয়র হিসেবে ৩৪ বছর বয়সী মামদানি বলেন, ভোটাররা তাকে ‘‘পরিবর্তনের ম্যান্ডেট’’ দিয়েছেন এবং তিনি সেসব প্রত্যাশা পূরণে কাজ করবেন।
বিস্তারে বলা যায়, ডেমোক্র্যাট সমর্থিত এই তরুণ বামপন্থী নেতা মূল বিরোধীদ্বয়ের মধ্যে সাবেক গভর্নর অ্যান্ড্রু কুমো ও রিপাবলিকান প্রার্থী কার্টিস স্লিওয়াকে পরাজিত করে জয় অর্জন করেছেন। ফলাফলকে মানে, বিশ্লেষকেরা এটিকে ২০২৬ সালের মধ্যবর্তী নির্বাচনের আগে ভোটযোগে একটি রাজনৈতিক সংকেত হিসেবে দেখেছেন। শহরটিকে তিনি ‘‘অভিবাসীদের দ্বারা নির্মিত ও পরিচালিত’’ হিসেবে আখ্যায়িত করে বলেছেন, সব গোষ্ঠির মানুষ—অভিবাসী, ট্রান্সজেন্ডার বা অন্য কেউ—নিউইয়র্কের নাগরিকত্ব ও মর্যাদা পাবে।
তার ভাষণে উঠে এসেছে মুসলিম সম্প্রদায়ের দৈনন্দিন উদ্বেগও। মামদানি বলেছেন, অনেক মুসলিম-নাগরিক আইডেন্টিটি লুকিয়ে রাখতে বাধ্য হন, ভয়ের কারণে সাধারণ জীবনযাপন কষ্টসাধ্য। তিনি তা ন্যায়বিচার ও নিরাপত্তার মাধ্যমে বদলাতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয়েছেন এবং বলেন, ‘‘আমি মুসলিম—তার জন্য ক্ষমা চাইব না।’’ একই সঙ্গে তিনি শহরের সাধারণ মানুষের জীবিকা, জিনিসপত্রের মূল্যবৃদ্ধি ও সামাজিক নিরাপত্তা নিয়ে সরকারী নীতিতে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
তবে ইসলামোফোবিয়া নিয়ে সরাসরি কথা বলায় মামদানিকে কিছু রাজনীতিবিদ ও সমালোচনার মুখেও পড়তে হয়েছে; এ বিষয়ে তিনি নিজ বক্তব্য অটল রেখেছেন এবং নতুন প্রজন্মের ভোটারদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন। নির্বাচনী প্রেক্ষাপটে তার জয়ের তাৎপর্য শহরের বহুসঙ্ঘুষ্ঠিত পরিচয়, অভিবাসী ভিত্তিক জনসংখ্যা ও স্থানীয় রাজনীতিক ঐতিহ্যের পরিপ্রেক্ষিতে গুরুত্ব বহন করে—বিশেষত এমন সময়ে যখন জাতীয় রাজনীতিতে ধর্মীয় ও সংস্কৃতিক প্রশ্নগুলো বেশি উপেক্ষিত বা বিতর্কিত থাকে।
ডেস্ক রিপোর্ট