ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিয়েছে পর্তুগাল। এর মধ্য দিয়ে ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেওয়া দেশগুলোর তালিকায় নতুন করে যুক্ত হলো ইউরোপের এই দেশটি।
রোববার (২১ সেপ্টেম্বর) নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনকে সামনে রেখে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন পর্তুগালের পররাষ্ট্রমন্ত্রী পাওলো রাঞ্জেল। তিনি জানান, ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া তাদের পররাষ্ট্রনীতির একটি মৌলিক ও ধারাবাহিক অংশ। একইসঙ্গে ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাতের টেকসই সমাধান হিসেবে তিনি দ্বি-রাষ্ট্র ভিত্তিক সমাধানকেই একমাত্র কার্যকর পথ বলে উল্লেখ করেন।
গাজায় চলমান যুদ্ধ ও মানবিক সংকটের প্রেক্ষাপটে পর্তুগিজ পররাষ্ট্রমন্ত্রী তাৎক্ষণিক যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানান। তিনি হামাসের কোনো ধরনের নিয়ন্ত্রণের বিরোধিতা করেন এবং গাজায় আটক জিম্মিদের মুক্তি দাবি করেন। পাশাপাশি পশ্চিম তীরে ইসরায়েলের বসতি সম্প্রসারণেরও তীব্র সমালোচনা করেন।
পাওলো রাঞ্জেল বলেন, ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেওয়া মানে এই নয় যে গাজার মানবিক বিপর্যয় সমাধান হয়ে গেছে। তবে এটি একটি দায়িত্বশীল ও ন্যায্য অবস্থান, যার লক্ষ্য স্থায়ী শান্তি ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা।
পর্তুগালের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে ফিলিস্তিনি নেতারা একে ঐতিহাসিক মাইলফলক হিসেবে বর্ণনা করেছেন। ফাতাহর জ্যেষ্ঠ নেতা মোহাম্মদ শটাইয়ে বলেন, প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের নেতৃত্বে দীর্ঘদিনের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার একটি বড় অর্জন এটি। অন্য একজন শীর্ষ ফিলিস্তিনি কর্মকর্তা একে গাজার জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার পথে ঐতিহাসিক পরিবর্তনের সূচনা বলে মন্তব্য করেন।
অন্যদিকে, ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেওয়ায় তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। তিনি বলেন, ফিলিস্তিন রাষ্ট্র কখনো গঠিত হবে না এবং এই ধরনের স্বীকৃতি সন্ত্রাসবাদকে উৎসাহিত করে। তার দাবি, এ ধরনের সিদ্ধান্তের পরিণতি ইতিবাচক হবে না।
এর আগে যুক্তরাজ্য, কানাডা এবং অস্ট্রেলিয়াও ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছিল। যদিও বিশ্বের অনেক দেশ এই অবস্থান সমর্থন করছে, তবু ইসরায়েলের ঘনিষ্ঠ মিত্র কয়েকটি রাষ্ট্র এখনো এ বিষয়ে দ্বিধান্বিত।