টানা বৃষ্টি ও উজানের ঢলে লালমনিরহাটে তিস্তা নদীর পানি ব্যারাজের ডালিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার ওপরে প্রবাহিত হচ্ছে, যা দুই দিন ধরে অব্যাহত রয়েছে। এতে জেলার হাতীবান্ধা, কালিগঞ্জ, আদিতমারী ও সদর উপজেলার ২০টি গ্রামের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে পড়েছে। প্রায় সাত হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে আছে; ডুবে গেছে রোপা আমন ক্ষেত, গ্রামীণ সড়ক ও পুকুরের মাছ। কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেয়া হয়েছে, আর অনেকে গৃহপালিত পশু নিয়ে আশ্রয় নিয়েছে বাঁধ ও উঁচু স্থানে।
বন্যা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ব্যারাজের ৪৪টি জলকপাট খোলা রাখা হয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) জানিয়েছে, আগামী দুই দিন ভারী বর্ষণ ও উজানের ঢল অব্যাহত থাকতে পারে, যা লালমনিরহাট, নীলফামারী, গাইবান্ধা ও কুড়িগ্রামে স্বল্পমেয়াদি বন্যার ঝুঁকি বাড়াবে। বন্যা সতর্কতা কেন্দ্রের তথ্যানুযায়ী, কাউনিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি বিপৎসীমার ২০ সেন্টিমিটার নিচে এবং ধরলা নদীর শিমুলবাড়ি পয়েন্টে ১০ সেন্টিমিটার নিচে প্রবাহিত হচ্ছে।
প্লাবিত এলাকার মধ্যে রয়েছে পাটগ্রামের গড্ডিমারী, দোয়ানী, ছয়আনী, সানিয়াজান, সিঙ্গামারি, সিন্দুর্না, হলদিবাড়ী, ডাউয়াবাড়ী; কালীগঞ্জের ভোটমারী, শৈইলমারী, নোহালী; আদিতমারীর মহিষখোচা, গোবর্ধন, কালমাটি, বাহাদুরপাড়া, পলাশি এবং সদর উপজেলার ফলিমারী, খুনিয়াগাছ, কুলাঘাট, মোগলহাট, রাজপুর, বড়বাড়ী ও গোকুন্ডা ইউনিয়ন। স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন, নদীর গতিপথে সোলার প্যানেল স্থাপনের ফলে পানি লোকালয়ে ঢুকে বাঁধ ও বসতভিটায় চাপ সৃষ্টি করছে।
দক্ষিণ ভোটমারীর বাসিন্দা শাহ আলম জানান, পানির এই চাপ অব্যাহত থাকলে বসতভিটা ও ফসলি জমি নদীগর্ভে বিলীন হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী শুনীল কুমার রায় জানিয়েছেন, উজানে বৃষ্টি অব্যাহত থাকায় আগামী দুদিন নদীর পানি বিপৎসীমার ওপরেই প্রবাহিত হতে পারে এবং ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধগুলো সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণে রাখা হচ্ছে। জেলা প্রশাসক এইচ এম রকিব হায়দার জানিয়েছেন, ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা প্রণয়ন শেষে দ্রুত ত্রাণ সহায়তা বিতরণ করা হবে।
তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমার ওপরে, লালমনিরহাটে সাত হাজার পরিবার পানিবন্দি
- আপলোড সময় : ১৪-০৮-২০২৫ ০৯:১৫:৫১ পূর্বাহ্ন
- আপডেট সময় : ১৪-০৮-২০২৫ ০৯:১৭:০৪ পূর্বাহ্ন

কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ