এই তথ্য ফাইনান্সিয়াল টাইমসের স্যাটেলাইট চিত্র বিশ্লেষণের ওপর ভিত্তি করে জানা গেছে যে ইউরোপীয় স্পেস এজেন্সির সেন্টিনেল-১ স্যাটেলাইটের হাজার হাজার রাডার ছবি ব্যবহার করে ৩৭টি প্রধান অস্ত্র নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ও তাদের ১৫০টিরও বেশি কারখানা সংস্থার তথ্য সংগ্রহ হয়েছে। বিশেষত জার্মানির রেইনমেটাল এবং হাঙ্গেরির রাষ্ট্রায়ত্ত N7 হোল্ডিংয়ের যৌথ উদ্যোগ উল্লেখযোগ্য উন্নয়নের মধ্যে রয়েছে, যেখানে ৩০ মিমি ক্যালিবারের গোলা উৎপাদনের পাশাপাশি ভবিষ্যতে আর্টিলারি শেল ও ট্যাংক গুলির প্রস্তুতির পরিকল্পনা রয়েছে।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের "অ্যামুনিশন সাপোর্ট অ্যাক্ট" (ASAP) অধীনে ৫০০ মিলিয়ন ইউরো বিনিয়োগ এই সম্প্রসারণে সহায়তা করেছে। কমপক্ষে ২০টি কারখানায় নতুন গুদাম নির্মাণ, কারখানা সম্প্রসারণ ও অবকাঠামো উন্নয়নের কাজ চলছে। ইউরোপীয় কমিশনার ফর ডিফেন্স আন্দ্রিয়াস কুবিলিয়াসের মতে, ২০২২ সালে ইউরোপের বার্ষিক গোলাবারুদ উৎপাদন ৩০০,০০০ থেকে বেড়ে ২০২৪ সালের শেষ নাগাদ ২ মিলিয়ন গোলায় পৌঁছাবে। রেইনমেটাল ২০২৭ সালের মধ্যে বছরে ১.১ মিলিয়ন ১৫৫ মিমি গোলা উৎপাদন করতে সক্ষম হবে বলে আশা প্রকাশ করা হয়েছে।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই দ্রুত সম্প্রসারণ ইউরোপীয় প্রতিরক্ষা শিল্পে গভীর ও দীর্ঘমেয়াদি কাঠামোগত পরিবর্তন সূচিত করবে, যা ভবিষ্যতের সম্ভাব্য দীর্ঘস্থায়ী যুদ্ধ ও সংকট মোকাবিলার প্রস্তুতি হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ। তবে ক্ষেপণাস্ত্রের উন্নত প্রযুক্তি যেমন জেট ইঞ্জিন বা বিস্ফোরক উপকরণের ক্ষেত্রে আরও গবেষণা ও উন্নয়নের প্রয়োজন দেখা দিয়েছে।
ন্যাটোর প্রাক্তন সিনিয়র কর্মকর্তা উইলিয়াম আলবার্ক বলেছেন, এই সম্প্রসারণ কেবলমাত্র উৎপাদন বৃদ্ধিই নয়, বরং ইউরোপের সামরিক উৎপাদন কাঠামোর মৌলিক রূপান্তরও ঘটাচ্ছে। জাতিসংঘ ও পশ্চিমা দেশগুলো ইউক্রেনকে সহায়তা দেওয়ার জন্য ইউরোপীয় দেশগুলোর প্রতিরক্ষা সক্ষমতা বাড়ানোর চাপ দিচ্ছে, যেখানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রও অস্ত্র সরবরাহ অব্যাহত রাখার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
এসব উদ্যোগ ও সম্প্রসারণের ফলশ্রুতিতে ইউরোপ যুদ্ধের প্রস্তুতিতে নতুন এক অধ্যায়ে প্রবেশ করেছে, যা তাদের সামরিক দক্ষতা বৃদ্ধি ও ইউক্রেন সহায়তার ক্ষেত্রে আরও কার্যকর ভূমিকা পালনের পথ প্রশস্ত করছে।