কুয়েতে অবৈধভাবে প্রাপ্ত নাগরিকত্বের বিরুদ্ধে চলমান অভিযানে প্রায় ৫০ হাজার মানুষের নাগরিকত্ব বাতিল করা হয়েছে। দেশটির প্রথম উপ-প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শেখ ফাহাদ ইউসুফ সউদ আল সাবাহ জানিয়েছেন, বিভিন্ন দেশের সঙ্গে সমন্বয়ের মাধ্যমে বহু প্রতারণার ঘটনা শনাক্ত করে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। চলমান এই তদন্তে শুধু সাধারণ নাগরিক নন, সাবেক ও বর্তমান সাংসদ এবং মন্ত্রীদেরও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
আমিরাতভিত্তিক সংবাদমাধ্যম দ্য ন্যাশনাল থেকে পাওয়া সূত্রমতে, অভিযানটি মূলত সেই বিদেশিদের লক্ষ্য করে পরিচালিত হচ্ছে, যারা প্রতারণার মাধ্যমে কুয়েতি নাগরিকত্ব পেয়েছেন। এক বছরেরও বেশি সময় ধরে সর্বোচ্চ পর্যায়ের একটি কমিটি এসব মামলা পর্যালোচনা করে কারা বৈধভাবে নাগরিকত্ব পাওয়ার যোগ্য, তা নির্ধারণ করছে। ইতিমধ্যে যাদের নাগরিকত্ব বাতিল হয়েছে, তাদের অনেকের নাম প্রকাশ করা হয়েছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও জানিয়েছেন, শিগগিরই নতুন ইলেকট্রনিক জাতীয়তা সনদ চালু করা হবে।
কুয়েত দ্বৈত নাগরিকত্ব অনুমোদন করে না; কুয়েতি নাগরিক হতে হলে পূর্বের নাগরিকত্ব ত্যাগ করতে হয়। প্রায় ৫০ লাখ জনসংখ্যার এই দেশের অধিকাংশই বিদেশি নাগরিক। সরকার জানিয়েছে, প্রতারণা রোধের পাশাপাশি রাষ্ট্রীয় স্বার্থে কিছু ক্ষেত্রেও নাগরিকত্ব বাতিল করা হয়েছে। কুয়েতে বাবার নাগরিকত্ব সন্তানদের স্বয়ংক্রিয়ভাবে প্রাপ্তির নিয়ম রয়েছে, তবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর মনোনীত কমিটি বিশেষ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে বিদেশিদেরও নাগরিকত্ব দিতে পারে।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, কয়েক দশক আগে দেশটির উন্নয়নে অবদান রাখা বহু বিদেশি কুয়েতি নাগরিকত্ব পেয়েছিলেন। তবে নাগরিকত্বের অধিকার নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিতর্ক চলমান। এর মধ্যে অন্যতম ইস্যু হলো প্রায় ১ লাখ ২০ হাজার রাষ্ট্রহীন মানুষ ‘বেদুইন’—যাদের সমস্যার সমাধান রাজনৈতিক ও আইনগত জটিলতায় বছরের পর বছর আটকে আছে।