চিতলমারী উপজেলার নিউ মন্ডল জুয়েলার্সে সংঘটিত স্বর্ণ চুরির ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারীসহ তিনজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। উদ্ধার করা হয়েছে প্রায় ৩০ ভরি স্বর্ণালংকার, যার আনুমানিক বাজারমূল্য অর্ধকোটি টাকা। গ্রেফতার ব্যক্তিদের একজন চিতলমারী বাজারের ইজারাদার এবং অপর দু’জন স্থানীয় স্বর্ণ ও লোহা ব্যবসায়ী।
পুলিশ জানায়, শুক্রবার (৮ আগস্ট) দুপুরে চিতলমারীর আড়ুয়ার্বনী গ্রামের এমাদুল খানের (৪০) স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে তার বাড়ির আলমারির ড্রয়ার থেকে চুরিকৃত স্বর্ণালংকার উদ্ধার করা হয়। একইসঙ্গে গ্রেফতার করা হয় আরও দুই সহযোগী—সজল বসু (৪২) ও শুভ্র বসু (২৪)। এছাড়া চুরি সংঘটনের সময় ব্যবহৃত গ্রান্ডার মেশিনটিও জব্দ করা হয়েছে।
এই চুরির পরিকল্পনা দীর্ঘদিনের বলে জানিয়েছেন তদন্ত সংশ্লিষ্টরা। মূল অভিযুক্ত এমাদুল খান, যিনি বাজারের খাজনা আদায়কারী হিসেবে পরিচিত, তিনি চুরির আগে বাজারের সকল সিসিটিভি ক্যামেরা অকার্যকর করে দেন। তার দুই সহযোগী—সজল বসু গরীবপুর গ্রামের এবং শুভ্র বসু শিবপুর গ্রামের বাসিন্দা।
চিতলমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এসএম শাহাদাৎ হোসেন জানান, গত ৪ আগস্ট রাতে উপজেলার নিউ মন্ডল জুয়েলার্সের সিন্দুক ভেঙে প্রায় ৩০ ভরি স্বর্ণালংকার চুরি হয়। এরপর ৮ আগস্ট দোকান মালিক তাপস মন্ডল অজ্ঞাতনামা আসামি করে থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলার ভিত্তিতে পুলিশ দ্রুত তদন্তে নামে এবং সন্দেহভাজন হিসেবে চা দোকানদার পরিচয়ধারী এমাদুলকে গ্রেফতার করে।
তদন্তে জানা যায়, গ্রেফতারকৃত এমাদুলের স্বীকারোক্তি অনুযায়ীই তার বাড়ি থেকে চুরি হওয়া স্বর্ণ উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। চুরি হওয়া স্বর্ণালংকারের পরিমাণ নিয়ে ভিন্ন বক্তব্য থাকলেও দোকান মালিক দাবি করেছেন, প্রায় ৪০ ভরি স্বর্ণ ও নগদ ১০ হাজার টাকা তার দোকান থেকে চুরি হয়।
বাজার ব্যবসায়ী ব্যবস্থাপনা কমিটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, অভিযুক্ত ব্যক্তি স্থানীয় দোকানদার হওয়ায় বিষয়টি অত্যন্ত দুঃখজনক। তারা সাধারণ সভা ডেকে সিদ্ধান্ত নেবেন যেন অভিযুক্ত ব্যক্তি ভবিষ্যতে বাজারে কোনো ধরনের ব্যবসা পরিচালনা করতে না পারেন।
চুরি হওয়া মালামাল উদ্ধার ও দ্রুত অভিযুক্তদের গ্রেফতারে পুলিশের কার্যকর উদ্যোগ প্রশংসিত হয়েছে স্থানীয়দের মধ্যে। মামলার তদন্ত চলছে এবং গ্রেফতারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আদালতে পাঠানো হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।