ঢাকা , বৃহস্পতিবার, ১৩ নভেম্বর ২০২৫ , ২৯ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
জাতীয় নির্বাচনের দিনে চার প্রশ্নে গণভোট: জুলাই সনদ বাস্তবায়নের প্রস্তুতি তেজগাঁও রেলস্টেশনে ট্রেনে আগুন, রাজধানীতে সংঘটিত একাধিক অগ্নিকাণ্ড ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসির সামনে ককটেল বিস্ফোরণ, আহত ১ দিল্লিতে শেখ হাসিনার গণমাধ্যমে বক্তব্যে ঢাকার উদ্বেগ পল্লবীতে ভিডিও প্রদর্শনী চলাকালে দুই বিস্ফোরণ, পুলিশ বলছে ‘পটকা’ ফেনীর মহিপালে সড়কে দাঁড়িয়ে থাকা বাসে আগুন, নাশকতার আশঙ্কা ভেনেজুয়েলা বলল — যুক্তরাষ্ট্রের কোনো হামলা সামলাতে তাদের সেনাবাহিনী প্রস্তুত বিজয়নগরে গ্রামীণ ব্যাংকে পেট্রল ঢেলে আগুন, তদন্তে পুলিশ নতুন বেতন কাঠামোর রূপরেখা দেবে অন্তর্বর্তী সরকার: অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন সেন্টমার্টিনের কাছে দুই ট্রলারসহ ১৩ বাংলাদেশি জেলেকে ধরে নিল আরাকান আর্মি ঢাবির সব খেলার মাঠ সংরক্ষণের নির্দেশ হাইকোর্টের আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা স্বীকৃতি ধরে রাখল এয়ার এ্যাস্ট্রা, ২০২৭ পর্যন্ত আইওএসএ রেজিস্টার্ড এয়ারলাইন শীর্ষ সন্ত্রাসী মামুন হত্যায় দুই শুটারসহ পাঁচজন গ্রেপ্তার, মূল পরিকল্পনাকারী রনি পলাতক ত্রুটিপূর্ণ বিমান ভাড়া মামলায় সাবেক বিচারপতি মেসবাহ উদ্দিনসহ তিনজনের জামিন মোহাম্মদপুর প্রিপারেটরি স্কুলে পেট্রোল বোমা হামলা, অল্পের জন্য রক্ষা ঢাকায় ককটেল হামলা: সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির জন্য সরকারের কঠোর পদক্ষেপ ৭,১৫০ কোটি টাকায় একনেকে ১২টি নতুন উন্নয়ন প্রকল্প অনুমোদন সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য দায়িত্বশীলতা জরুরি: কমিশনার জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে আইসিটি দক্ষতা বৃদ্ধি: এটুআই-এর সঙ্গে নতুন প্রশিক্ষণ উদ্যোগ শীতে অগ্নিকাণ্ড ঝুঁকি বাড়ায় দেশজুড়ে ফায়ার সার্ভিসের সচেতনতা অভিযান

গুমে জড়িত ছিল ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা: গুম কমিশনের প্রতিবেদন

  • আপলোড সময় : ২৪-০৬-২০২৫ ০১:৪১:৩৪ পূর্বাহ্ন
  • আপডেট সময় : ২৪-০৬-২০২৫ ০১:৪১:৩৪ পূর্বাহ্ন
গুমে জড়িত ছিল ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা: গুম কমিশনের প্রতিবেদন
আন্তরাষ্ট্রীয় গুমের সঙ্গে জড়িত ছিল বাংলাদেশ ও ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা। দুই দেশের গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে গুম হওয়া ব্যক্তিদের আদান-প্রদান করতেন। গুম কমিশনের দ্বিতীয় প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে এসেছে। ৪ জুন এই প্রতিবেদন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে জমা দেন কমিশন।
 
কমিশনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের অনেক নাগরিককে গুম করে অবৈধভাবে ভারতের গোয়েন্দা সংস্থার হাতে তুলে দেওয়া হতো, আবার ভারত থেকেও অনেককে বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনা হতো—পাঠিয়ে দেওয়া হতো। দুই দেশের গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যদের চাওয়া ও প্রয়োজন অনুযায়ী গুম করে অবৈধভাবে সীমান্ত দিয়ে আদান-প্রদান করা হতো। এই কর্মকাণ্ডকে কমিশন ‘আন্তরাষ্ট্রীয় গুমপ্রক্রিয়া’ হিসেবে অভিহিত করেছে।
 
প্রতিবেদনে অন্তত পাঁচজন গুম হওয়া ভুক্তভোগী ব্যক্তির জবানবন্দি নিয়েছে কমিশন। যাঁরা গুমের পর ভারতে পাচার ও নির্যাতনের শিকার হয়েছিলেন।
প্রতিবেদনে বলা হয়, সন্দেহভাজন এক ব্যক্তি প্রথমে ভারতীয় কর্তৃপক্ষের হাতে আটক হন। পরে বাংলাদেশের ডিজিএফআই ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থার কাছে প্রস্তাব পাঠায়, যাতে আটক ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হয়।
 
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, কোনো আদালতের অনুমতি বা নথিভুক্ত মামলার ভিত্তি ছাড়াই বিচারবহির্ভূতভাবে এই পুরো প্রক্রিয়া হয়। রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার নামে এসব কর্মকাণ্ড পরিচালিত হলেও ব্যক্তি-অধিকার ও মানবাধিকার চরমভাবে লঙ্ঘিত হয়েছে।
একাধিক ঘটনায় দেখা গেছে, ভারত থেকে ফেরত পাঠানো ব্যক্তিদের আবার ডিজিএফআই ও র‍্যাবের হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ ও নির্যাতন করা হয়েছে। কাউকে কাউকে আবারও নিখোঁজ করে ফেলা হয়েছে, যার কোনো খোঁজ পরিবারের কাছে নেই।
 
ভারতের গোয়েন্দা সংস্থার চাওয়া অনুযায়ী আবার অনেককে গুম করে ভারতে পাঠিয়েছেন বাংলাদেশের গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা।
প্রতিবেদনে একজন বন্দীর অভিজ্ঞতা তুলে ধরা হয়, ‘আমাকে চোখ বেঁধে ভারতের গাড়িতে করে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে আবার বাংলাদেশে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। আমাকে বলা হয়, ‘‘তুমি মরো, তুমি বাঁচো, আমরা ঠিক করব।’
 
আরেক বন্দীকে বাংলাদেশ থেকে ভারতে পাঠিয়ে সেখানে ভারতীয় মুসলমানদের বিষয়ে ভিডিও কনটেন্ট তৈরির অভিযোগে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। পরে তাঁকে ফিরিয়ে এনে র‍্যাবের হেফাজতে রাখা হয়।
 
গুম ও নির্যাতনের শিকার এসব ব্যক্তির নিরাপত্তার স্বার্থে নাম-পরিচয় প্রকাশ করেনি কমিশন।
 
কমিশন আরও জানিয়েছে, এসব কর্মকাণ্ডে বিভিন্ন সংস্থার মধ্যে মৌখিক সমঝোতা থাকলেও কোনো লিখিত চুক্তি বা আইনি কাঠামো নেই। ফলে এসব বন্দীর পরিবার আইনি প্রতিকার তো দূরের কথা, খোঁজখবরও পায় না।
 
কমিশনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই ধরনের সমন্বয় আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সনদের স্পষ্ট লঙ্ঘন। এতে ব্যক্তির স্বাধীনতা, আইনি নিরাপত্তা ও বিচারপ্রাপ্তির অধিকার ভূলুণ্ঠিত হয়।
 
১৯ জুন রাজধানীর গুলশানে একটি সংবাদ সম্মেলনে গুমসংক্রান্ত কমিশনের সভাপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, ‘ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা গুমের সঙ্গে জড়িত থাকলেও তাদের বিষয়ে আমাদের কিছু করার নেই। কারণ সেটি আমাদের জুরিসডিকশনের বাইরে। তবে বাংলাদেশে যাদের সম্পৃক্ততা পাচ্ছি, তাদের বিষয়ে মামলা করার জন্য পুলিশকে চিঠি দিয়েছি। এ ছাড়া আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালেও ৫-৬টি মামলার কার্যক্রম চলছে।’
 
মানবাধিকার সংস্থাগুলো বলছে, এসব গুমের পেছনে শুধু দেশীয় নয়, আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা অজুহাতও ব্যবহৃত হচ্ছে। অথচ কোনো সন্দেহভাজনকেও বিনা বিচারে দীর্ঘদিন অজ্ঞাত স্থানে আটকে রাখার অধিকার রাষ্ট্রের নেই।
 
প্রতিবেদনের সুপারিশে বলা হয়েছে, এই প্রক্রিয়াগুলোকে আইনের আওতায় আনতে হবে, গোপন হেফাজতে থাকা সব ব্যক্তির তালিকা প্রকাশ করতে হবে এবং যৌথ গোয়েন্দা কার্যক্রমের জন্য একটি স্বচ্ছ ও জনসম্মুখ চুক্তি করতে হবে।
 
কিছু কিছু গুমের ঘটনা রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ ব্যক্তি তদারকি করতেন বলেও জানিয়েছে কমিশন। মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়া সাকা চৌধুরীর ছেলে হুম্মাম কাদের চৌধুরীকে গুমের ঘটনাটি শেখ হাসিনা জানতেন বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

নিউজটি আপডেট করেছেন : স্টাফ রিপোর্টার-2

কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনাসহ তিনজনের মামলার রায় ঘোষণা আজ

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনাসহ তিনজনের মামলার রায় ঘোষণা আজ