জুলাই আন্দোলনে প্রবাসী বাংলাদেশিদের ভূমিকা ছিল গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে রেমিট্যান্স শাটডাউনের মতো কর্মসূচি তৎকালীন সরকারকে অর্থনৈতিক চাপে ফেলেছিল। তবে এ আন্দোলনে অংশ নেওয়ার জন্য বহু প্রবাসীকে দিতে হয়েছে কঠিন মূল্য। সংযুক্ত আরব আমিরাতে আন্দোলনের সময় গ্রেফতার হওয়া ২৬ বাংলাদেশি এখনও কারাভোগ করছেন, যদিও সরকার পরিবর্তনের পর বেশিরভাগ প্রবাসী দেশে ফিরে এসেছেন।
২০২৪ সালের জুলাইয়ের মাঝামাঝি সময়ে নির্বিচার গুলিতে দেশের ভেতরে আন্দোলন তীব্র আকার ধারণ করে। এর প্রভাব ছড়িয়ে পড়ে দেশের বাইরে বসবাসরত প্রবাসীদের মধ্যেও। দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাজপথে নেমে আসেন ইয়াসীন, জাহাঙ্গীর, মিজানের মতো তরুণরা। পুলিশের হাতে গ্রেফতারের পর তারা অমানবিক নির্যাতনের শিকার হন এবং হারান স্থায়ী জীবিকা ও স্বাভাবিক জীবনযাত্রা।
৫ আগস্ট স্বৈরশাসন পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার হস্তক্ষেপে ২৭ সেপ্টেম্বর ৫৭ প্রবাসী দেশে ফিরতে সক্ষম হন। পরবর্তী কয়েক দফায় আরও ১৩২ জন ফেরেন। তবে ২৬ জন এখনও কারাগারে রয়েছেন এবং তাদের বিরুদ্ধে মামলা চলমান। প্রবাসী কল্যাণ, পররাষ্ট্র ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বারবার যোগাযোগ করলেও দৃশ্যমান পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ রয়েছে।
যারা সেই সময় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে আন্দোলনে অংশ নিয়েছিলেন, তাদের অনেকের আক্ষেপ—সরকারি স্বীকৃতি ও সহায়তা মিলছে না। অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে তাদের প্রত্যাশা, অন্তত স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়া হবে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করিয়ে দিচ্ছেন, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ থেকে শুরু করে ২০২৪ সালের গণ-অভ্যুত্থান পর্যন্ত প্রতিটি বড় আন্দোলনে প্রবাসীদের অবদান ছিল গুরুত্বপূর্ণ। প্রত্যাবাসন বিশেষজ্ঞ শরিফুল হাসান বলেন, “প্রবাসীরা বছরে প্রায় ৩০ বিলিয়ন ডলার দেশে পাঠান, যা অর্থনীতির মূলভিত্তি। কিন্তু তারা ন্যূনতম সম্মানও পান না।”
২ আগস্ট প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় থেকে জুলাই আন্দোলনে অংশ নেওয়া প্রবাসীদের ‘রেমিট্যান্স যোদ্ধা’ হিসেবে সম্মাননা সনদ দেওয়া হলেও, কোনো আর্থিক সহায়তা বা বাস্তব সহায়তা প্রদান করা হয়নি।
জুলাই আন্দোলনে প্রবাসীদের ত্যাগ: আমিরাতে বন্দি ২৬ বাংলাদেশি এখনও মুক্তি পাননি
- আপলোড সময় : ১০-০৮-২০২৫ ০৯:০৬:০৬ পূর্বাহ্ন
- আপডেট সময় : ১০-০৮-২০২৫ ০৯:০৬:০৬ পূর্বাহ্ন

কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ