অন্তর্বর্তী সরকারের তিন মাস পূর্তি হচ্ছে আজ (শুক্রবার)। এই সময়ে সরকারের ৫৮টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগের ৩৫৩টি দপ্তর ও সংস্থার প্রশাসনিক কাজের হিসাব (আমলনামা) চেয়েছে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়। ৬ নভেম্বর সই করা এ সংক্রান্ত একটি চিঠি গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে সব সচিবের দপ্তরে পাঠানো হয়। এতে গতকাল বিকেল ৫টার মধ্যে তাঁর মন্ত্রণালয় ও বিভাগের কতজন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে পদোন্নতি, বদলি ও কতজনের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়াসহ পাঁচটি বিষয়ের তথ্য পাঠাতে বলা হয়।
সংশ্লিষ্ট সূত্রের বরাতে জানা যায়, মাত্র এক দিনের নোটিশে এ ধরনের বিস্তারিত তথ্য-উপাত্ত চাওয়ায় হুলুস্থুল পড়ে যায় প্রশাসনে। প্রতিটি মন্ত্রণালয়ের সচিবের দপ্তর বিষয়টি নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন সারা দিন।
সচিবদের উদ্দেশে ওই চিঠিতে বলা হয়, অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব গ্রহণের পর গত তিন মাসে আপনার মন্ত্রণালয়, বিভাগ, দপ্তর ও সংস্থা থেকে যেসব উল্লেখযোগ্য কার্যক্রম সম্পাদন করা হয়েছে, তার একটি তালিকা ৭ নভেম্বর (বৃহস্পতিবার) বিকেল ৫টার মধ্যে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের পরিচালকের (প্রশাসন) ই-মেইলে পাঠানোর জন্য বলা হয়।
তালিকা প্রস্তুতের ক্ষেত্রে অবশ্যই নিচের তথ্যগুলো দিতে বলা হয়।
১. সময়ে আপনার মন্ত্রণালয় ও বিভাগে কতজন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে পদোন্নতি ও বদলি করা হয়েছে?
২. কতজন কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে?
৩. নতুন কী কী আইন, বিধি-বিধান তৈরি/সংশোধন করা হয়েছে?
৪. কী কী নীতিনির্ধারণী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে এবং
৫. পাবলিক সার্ভিস ইনোভেশনের জন্য কী কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে?
সচিবালয়ের একাধিক মন্ত্রণালয় গতকাল সরেজমিনে দেখা গেছে, সচিবদের একান্ত সচিবরা (পিএস) প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের ওই চিঠি দপ্তরপ্রধানদের মোবাইল ফোনের হোয়াটসঅ্যাপে পাঠান। এরপর আবারও দপ্তরপ্রধানদের সরাসরি ফোনে কল করে বিকেল ৪টার মধ্যে সরকারের চাহিত তথ্য-উপাত্তের প্রতিবেদন পাঠাতে অনুরোধ জানান। প্রতিটি মন্ত্রণালয়ের সচিবের দপ্তর ছিল এ কাজে মহাব্যস্ত।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক সচিবের পিএস বলেন, “যেহেতু আজ সরকারের তিন মাস পূর্তি হচ্ছে, তাই এই অগ্রগতি প্রতিবেদন পাওয়ার পর হয়তো প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় সংবাদ সম্মেলন বা প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জাতিকে জানানোর উদ্যোগ নেবে। প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের চিঠি ৬ নভেম্বরের হলেও পেলাম ৭ নভেম্বর দুপুর ১২টার দিকে। সঙ্গে সঙ্গে আমরা দপ্তরপ্রধানদের ফরোয়ার্ড করেছি। তাঁদের সরাসরি সেল ফোনে তাগিদ দিয়েছি। সপ্তাহের শেষ দিন হওয়ায় অনেক দপ্তর ও সংস্থার সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পাওয়া যায়নি।
তার পরও মাত্র এক দিনের নোটিশে আমরা সর্বোচ্চ তথ্য-উপাত্তের প্রতিবেদন দেওয়ার চেষ্টা করেছি। তবে এ ধরনের তথ্যের জন্য অন্তত দু-তিন দিনের সময়সীমা দিয়ে নোটিশ দিলে ভালো হতো।”