বঙ্গোপসাগরে একটি লঘুচাপ তৈরি হয়েছে, যা ধীরে ধীরে শক্তি সঞ্চয় করে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, লঘুচাপটি দ্রুত নিম্নচাপে পরিণত হতে পারে এবং পরবর্তীতে তা ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে।
আবহাওয়াবিদ বজলুর রশীদ জানিয়েছেন, সোমবার বিকাল বা মঙ্গলবার সকালের মধ্যে লঘুচাপটি নিম্নচাপে পরিণত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এরপর ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে। তবে এটি কোনদিকে অগ্রসর হবে, তা নিম্নচাপে রূপ নেওয়ার পর নির্দিষ্টভাবে বোঝা যাবে। সম্ভাব্য পথ হিসেবে উড়িষ্যা অথবা বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা রয়েছে।
এই লঘুচাপের প্রভাবে বুধবারের দিকে বৃষ্টি বেড়ে যেতে পারে, যা দুই থেকে তিন দিন স্থায়ী থাকতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে দেশের বিভিন্ন এলাকায় বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনাও রয়েছে।
ঘূর্ণিঝড়ের সম্ভাব্য নাম:
ঘূর্ণিঝড়ের রূপ নিলে এই ঝড়ের নাম হবে ‘ডানা’, যা কাতার প্রস্তাব করেছে। আরবি ভাষায় ‘ডানা’ শব্দের অর্থ অতি সুন্দর ও মূল্যবান মুক্তা। আরব সাগর ও বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণ করে বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার অধীনস্থ আঞ্চলিক সংস্থা এসকাপ। এই সংস্থা ১৩টি দেশের প্রস্তাবিত নামের তালিকা থেকে পর্যায়ক্রমে ঘূর্ণিঝড়ের নাম ঠিক করে থাকে।
ভারতীয় আবহাওয়ার পূর্বাভাস:
ভারতের আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, পূর্বমধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন আন্দামান সাগরে অবস্থানরত লঘুচাপটি ক্রমশ শক্তি সঞ্চয় করছে। এটি মঙ্গলবারের মধ্যে নিম্নচাপে এবং বুধবারের মধ্যে আরও ঘনীভূত হয়ে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পারে। এই ঘূর্ণিঝড়টি ওড়িশা, অন্ধ্র প্রদেশ ও পশ্চিমবঙ্গ উপকূলের দিকে অগ্রসর হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
দেশের আবহাওয়ার অবস্থা:
রবিবার সন্ধ্যায় আবহাওয়া অধিদপ্তরের নিয়মিত বুলেটিনে বলা হয়, চট্টগ্রাম বিভাগের কিছু স্থানে বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এছাড়া দেশের অন্যান্য অঞ্চলে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া শুষ্ক থাকবে।
রবিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় দেশের সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত হয়েছে পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায়, যেখানে ২৮ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে। অন্যদিকে, দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ফেনীতে, ৩৪ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
এর আগে ২৬ মে ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল’ বাংলাদেশ ও ভারতের পশ্চিমবঙ্গে আঘাত হানে। এই ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে বাংলাদেশ ও ভারতে মোট ৭৬ জনের মৃত্যু হয়। বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলে এই ধরনের ঘূর্ণিঝড় প্রায়ই প্রভাব ফেলে, তাই লঘুচাপ ও ঘূর্ণিঝড়ের বিষয়ে সাধারণ জনগণকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
এই লঘুচাপ ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হলে উপকূলীয় এলাকাগুলোতে সতর্ক সংকেত জারি হতে পারে।