মার্কিন সিনেটর বার্নি স্যান্ডার্স গাজায় ইসরায়েলের কার্যক্রমকে সরাসরি ‘গণহত্যা’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন এবং যুক্তরাষ্ট্রকে ইসরায়েলকে দেওয়া সামরিক ও আর্থিক সহায়তা বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছেন। এসব মন্তব্য তিনি করেছেন জাতিসংঘের একটি তদন্ত কমিশনের প্রতিবেদনে একই ধরনের সিদ্ধান্ত সহযোগে প্রকাশিত হওয়ার পর।
স্যান্ডার্স সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী বলেছেন, গাজায় যে ধ্বংসযজ্ঞ লক্ষ্য করা যাচ্ছে—খোলা ভাষায় উচ্চপদস্থ ইসরায়েলি বিবৃতি, বড় মাত্রায় মৃত্যুর সংখ্যা, দুর্ভিক্ষ ও ত্রাণ বাধা—এসব মিলিয়ে জাতিগত বা ধর্মীয় গোষ্ঠীকে আংশিক কিংবা সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করার উদ্দেশ্য দেখাচ্ছে, যা জাতিসংঘের সংজ্ঞায় ‘গণহত্যা’ অন্তর্ভুক্ত। তিনি যুক্তরাষ্ট্রকে তৎক্ষণাৎ সামরিক ও আর্থিক সহায়তা বন্ধ করে আন্তর্জাতিক উদ্যোগে ত্রাণ পৌঁছানো, যুদ্ধবিরতি নিশ্চিতকরণ এবং ফিলিস্তিনি জনগোষ্ঠীর স্বরাজ প্রতিষ্ঠার পথে পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
এই প্রশ্নটিকে মার্কিন সংসদে তুলে ধরেছেন কংগ্রেসওউম্যান বেকা বালিন্টকেও—তিনি এক নিবন্ধে লিখেছেন যে শিশুরা অনাহারে মরছে এবং ত্রাণ আটকে রেখে বেসামরিকদের ওপর আক্রোশ চালানো হচ্ছে, যা পরিকল্পিত ধ্বংসের লক্ষণ হিসেবেও ব্যাখ্যা করা যেতে পারে। স্যান্ডার্সের মন্তব্যটি নজর কাড়েছে কারণ তিনি ডেমোক্র্যাট শিবিরের প্রভাবশালী নেতা ও সাবেক প্রেসিডেন্ট প্রার্থী; সংবাদে বলা হচ্ছে তিনি প্রথম কোনো মার্কিন সিনেটর যিনি ইসরায়েলের আচরণকে সরাসরি ‘গণহত্যা’ বলে অভিহিত করেছেন। যদিও কংগ্রেসের অন্যান্য সদস্যরাও ইতিমধ্যেই এমন দাবি তুলেছেন।
জাতিসংঘের নির্ধারণ অনুযায়ী ‘গণহত্যা’ বলতে বোঝায়—কোনও জাতিগত, বর্ণ, ধর্মীয় বা জাতীয় গোষ্ঠীকে আংশিক বা সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করার উদ্দেশ্যে সংঘটিত কর্মকাণ্ড। সরবরাহকৃত প্রমাণ ও প্রতিবেদনের আলোকে স্যান্ডার্স বলেন, বর্তমান পরিস্থিতি কেবল যুদ্ধবিধি লঙ্ঘন নয়, বরং সবচেয়ে গুরুতর আন্তর্জাতিক অপরাধের শ্রেণিতে পড়ে। তিনি সতর্ক করেছেন, যদি এ ধরনের অপরাধ বিনা শাস্তিতে চলতে থাকে তাহলে তা আন্তর্জাতিক মানবাধিক্য ও নৈতিকতার জন্য একটি গম্ভীর সংকেত হবে।
স্যান্ডার্সের বক্তব্যে যুক্তরাষ্ট্রে ও আন্তর্জাতিকভাবে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে—কিছু নেতারা যুদ্ধবিরতি ও ত্রাণ পৌঁছানোর ওপর জোর দিচ্ছেন, অনেকে আবার অবিলম্বে সহায়তা স্থগিত করার পক্ষে। এ প্রেক্ষাপটে আন্তর্জাতিক কূটনীতি, মানবিক তত্ত্বাবধান ও আইনি মূল্যায়নের দাবি তীব্র হচ্ছে। ঘটনাস্থলের মানবিক ক্রাইসিস, আবাসসংকট ও দীর্ঘমেয়াদী পুনর্বাসনসহ বিষয়গুলো এখন আন্তর্জাতিক সংবাদ, কূটনীতি ও মানবাধিকার পর্যবেক্ষকের কেন্দ্রে আছে।