ঢাকা , শুক্রবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৫, ১১ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ :
মাদরাসায় প্রযুক্তি শিক্ষা চালু করতে কাতার চ্যারিটির সহায়তা চাইলেন প্রধান উপদেষ্টা ইবিতে মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে কটূক্তি করলো এক কর্মকর্তা , গণপিটুনি জনতার পর্যটক নয়, টার্গেট করা হয়েছে ভারতীয় গোয়েন্দা বাহিনীকে: কাশ্মীরি প্রতিরোধ আন্দোলন ইসরায়েল যেমন গাজাকে মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দিয়েছে ভারতেও তাই করা উচিত: শুভেন্দু গাজায় বর্বর ইসরায়েলি হামলায় নিহত আরও ৪৫ অতর্কিত হামলায় কোণঠাসা দখলদার সেনারা, চাঞ্চল্যকর ভিডিও প্রকাশ স্ত্রীকে বালিশচাপায় হত্যা : স্বামী গ্রেপ্তার সোস্যাল মিডিয়ায় ভুয়া আইডি থেকে ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে অপপ্রচার, থানায় জিডি বাঁশখালী অগ্নিকাণ্ডে ৪টি বসতঘর পুড়ে ছাই হালিশহরে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ব্যাটারি অটোরিকশা খালে

পর্যটক নয়, টার্গেট করা হয়েছে ভারতীয় গোয়েন্দা বাহিনীকে: কাশ্মীরি প্রতিরোধ আন্দোলন

কাশ্মীরের পহেলগাঁও এলাকায় সদ্য সংঘটিত সশস্ত্র হামলাকে ভারতীয় মিডিয়া সাধারণ পর্যটকদের ওপর ‘নৃশংস হামলা’ হিসেবে প্রচার করছে। তবে কাশ্মীরের প্রতিরোধ সংগঠনের প্রকাশিত বিবৃতিতে দাবি করা হয়েছে, এই হামলা ছিল একটি পূর্বপরিকল্পিত ও কৌশলগত প্রতিক্রিয়া, যার লক্ষ্য ছিল একটি ভারতীয় গোয়েন্দা গবেষণা দল।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, হামলার শিকার ব্যক্তিরা কোনো সাধারণ পর্যটক ছিল না। তারা ছিল ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা ইন্টেলিজেন্স ব্যুরো (আইবি), রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালাইসিস উইং (র), নৌবাহিনী এবং সরকার-সমর্থিত সংস্থার সঙ্গে যুক্ত একটি ছদ্মবেশী প্রতিনিধি দল। যারা তথাকথিত গবেষণার আড়ালে কাশ্মীরের বাস্তবতা বিশ্লেষণের নামে একটি গোপন গোয়েন্দা মিশনে এসেছিল। এমনকি দলটিতে কিছু বিদেশি কর্মকর্তাও ছিল বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে।

সংগঠনটি স্পষ্ট করে জানিয়েছে, এই হামলার লক্ষ্যবস্তু ছিল কেবলমাত্র ভারতীয় নিরাপত্তা সংস্থার সদস্য ও তাদের সহযোগীরা। সাধারণ নারী কিংবা নিরীহ স্থানীয় মানুষজনকে ইচ্ছাকৃতভাবে আক্রমণ না করে বরং ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। এর মাধ্যমে প্রতিরোধ যোদ্ধারা বোঝাতে চেয়েছে যে হামলাটি ছিল নির্দিষ্ট ও কৌশলগত, কোনো বেসামাল প্রতিহিংসা নয়।

বিবৃতিতে কাশ্মীরের চলমান দমন-পীড়নের প্রেক্ষাপটে ভারত সরকারের বিভিন্ন নীতিরও তীব্র সমালোচনা করা হয়। বলা হয়, দিল্লি পরিকল্পিতভাবে অস্থানীয়দের কাশ্মীরে ডোমিসাইল (আবাসিক স্বীকৃতি বা নাগরিকত্বের প্রমাণপত্র) দিয়ে স্থায়ী বসবাসের সুযোগ করে দিচ্ছে, সরকারি চাকরিতে নিয়োগ দিচ্ছে এবং নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের স্থানীয় পরিচয়ের ছদ্মবেশে সমাজে সংস্থাপন করছে। এ ছাড়া স্থানীয় জনগণের উচ্চশিক্ষা, কর্মসংস্থান ও সিদ্ধান্তগ্রহণের অধিকারকে ধারাবাহিকভাবে খর্ব করা হচ্ছে।

প্রতিরোধ সংগঠনটি অভিযোগ করেছে, শিল্প উন্নয়নের নামে কাশ্মীরের জমি অধিগ্রহণ করে তা অস্থানীয়দের মাঝে বিতরণ করা হচ্ছে। এর মাধ্যমে জনপদ কাঠামো বদলে দিয়ে একটি নতুন বাস্তবতা চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চলছে।

বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয়, এখন পর্যন্ত ৮৫,০০০-এর বেশি অস্থানীয়কে ডোমিসাইল দেওয়া হয়েছে। তারা প্রথমে পর্যটকের ছদ্মবেশে আসে, পরে সরকারি কাগজপত্র জোগাড় করে নিজেকে কাশ্মীরি দাবি করতে শুরু করে—যেন এই জমির প্রকৃত মালিক তারাই। সংগঠনটি হুঁশিয়ারি দিয়ে জানায়, যারা এই আগ্রাসী নীতিকে বাস্তবায়নে সহায়তা করছে, তারা কেউই ছাড় পাবে না।

পহেলগাঁও হামলা এই বাস্তবতারই একটি কৌশলগত প্রকাশ। কাশ্মীর এখন আর কেবল পর্যটনভিত্তিক ভূখণ্ড নয়—এটি প্রতিরোধে দাঁড়িয়ে থাকা এক ভূখণ্ড, যেখানে মানুষ তাদের পরিচয়, অধিকার ও ভবিষ্যৎ রক্ষার লড়াইয়ে জীবন বিলিয়ে দিচ্ছে। দখলদার ভারত যতই ‘উন্নয়ন’ বা ‘পর্যটন’-এর নামে পরিস্থিতি স্বাভাবিক দেখাতে চায়, বাস্তবে কাশ্মীরের মাটি এখনও প্রতিরোধের স্পন্দনে জেগে আছে।

জনপ্রিয়

মাদরাসায় প্রযুক্তি শিক্ষা চালু করতে কাতার চ্যারিটির সহায়তা চাইলেন প্রধান উপদেষ্টা

পর্যটক নয়, টার্গেট করা হয়েছে ভারতীয় গোয়েন্দা বাহিনীকে: কাশ্মীরি প্রতিরোধ আন্দোলন

প্রকাশিত: ৩ ঘন্টা আগে

কাশ্মীরের পহেলগাঁও এলাকায় সদ্য সংঘটিত সশস্ত্র হামলাকে ভারতীয় মিডিয়া সাধারণ পর্যটকদের ওপর ‘নৃশংস হামলা’ হিসেবে প্রচার করছে। তবে কাশ্মীরের প্রতিরোধ সংগঠনের প্রকাশিত বিবৃতিতে দাবি করা হয়েছে, এই হামলা ছিল একটি পূর্বপরিকল্পিত ও কৌশলগত প্রতিক্রিয়া, যার লক্ষ্য ছিল একটি ভারতীয় গোয়েন্দা গবেষণা দল।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, হামলার শিকার ব্যক্তিরা কোনো সাধারণ পর্যটক ছিল না। তারা ছিল ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা ইন্টেলিজেন্স ব্যুরো (আইবি), রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালাইসিস উইং (র), নৌবাহিনী এবং সরকার-সমর্থিত সংস্থার সঙ্গে যুক্ত একটি ছদ্মবেশী প্রতিনিধি দল। যারা তথাকথিত গবেষণার আড়ালে কাশ্মীরের বাস্তবতা বিশ্লেষণের নামে একটি গোপন গোয়েন্দা মিশনে এসেছিল। এমনকি দলটিতে কিছু বিদেশি কর্মকর্তাও ছিল বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে।

সংগঠনটি স্পষ্ট করে জানিয়েছে, এই হামলার লক্ষ্যবস্তু ছিল কেবলমাত্র ভারতীয় নিরাপত্তা সংস্থার সদস্য ও তাদের সহযোগীরা। সাধারণ নারী কিংবা নিরীহ স্থানীয় মানুষজনকে ইচ্ছাকৃতভাবে আক্রমণ না করে বরং ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। এর মাধ্যমে প্রতিরোধ যোদ্ধারা বোঝাতে চেয়েছে যে হামলাটি ছিল নির্দিষ্ট ও কৌশলগত, কোনো বেসামাল প্রতিহিংসা নয়।

বিবৃতিতে কাশ্মীরের চলমান দমন-পীড়নের প্রেক্ষাপটে ভারত সরকারের বিভিন্ন নীতিরও তীব্র সমালোচনা করা হয়। বলা হয়, দিল্লি পরিকল্পিতভাবে অস্থানীয়দের কাশ্মীরে ডোমিসাইল (আবাসিক স্বীকৃতি বা নাগরিকত্বের প্রমাণপত্র) দিয়ে স্থায়ী বসবাসের সুযোগ করে দিচ্ছে, সরকারি চাকরিতে নিয়োগ দিচ্ছে এবং নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের স্থানীয় পরিচয়ের ছদ্মবেশে সমাজে সংস্থাপন করছে। এ ছাড়া স্থানীয় জনগণের উচ্চশিক্ষা, কর্মসংস্থান ও সিদ্ধান্তগ্রহণের অধিকারকে ধারাবাহিকভাবে খর্ব করা হচ্ছে।

প্রতিরোধ সংগঠনটি অভিযোগ করেছে, শিল্প উন্নয়নের নামে কাশ্মীরের জমি অধিগ্রহণ করে তা অস্থানীয়দের মাঝে বিতরণ করা হচ্ছে। এর মাধ্যমে জনপদ কাঠামো বদলে দিয়ে একটি নতুন বাস্তবতা চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চলছে।

বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয়, এখন পর্যন্ত ৮৫,০০০-এর বেশি অস্থানীয়কে ডোমিসাইল দেওয়া হয়েছে। তারা প্রথমে পর্যটকের ছদ্মবেশে আসে, পরে সরকারি কাগজপত্র জোগাড় করে নিজেকে কাশ্মীরি দাবি করতে শুরু করে—যেন এই জমির প্রকৃত মালিক তারাই। সংগঠনটি হুঁশিয়ারি দিয়ে জানায়, যারা এই আগ্রাসী নীতিকে বাস্তবায়নে সহায়তা করছে, তারা কেউই ছাড় পাবে না।

পহেলগাঁও হামলা এই বাস্তবতারই একটি কৌশলগত প্রকাশ। কাশ্মীর এখন আর কেবল পর্যটনভিত্তিক ভূখণ্ড নয়—এটি প্রতিরোধে দাঁড়িয়ে থাকা এক ভূখণ্ড, যেখানে মানুষ তাদের পরিচয়, অধিকার ও ভবিষ্যৎ রক্ষার লড়াইয়ে জীবন বিলিয়ে দিচ্ছে। দখলদার ভারত যতই ‘উন্নয়ন’ বা ‘পর্যটন’-এর নামে পরিস্থিতি স্বাভাবিক দেখাতে চায়, বাস্তবে কাশ্মীরের মাটি এখনও প্রতিরোধের স্পন্দনে জেগে আছে।