কানাডার লিবারেল পার্টির নেতৃত্বে বিপুল ভোটে বিজয়ী হয়েছেন মার্ক কার্নি। তিনি ঘোষণা করেছেন, কানাডা কখনোই যুক্তরাষ্ট্রের ৫১তম রাজ্য হবে না, এবং দেশটির স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় তিনি সমস্ত চেষ্টা করবেন।
সোমবার (১০ মার্চ) সামা টিভি এক প্রতিবেদনে জানায়, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি কানাডাকে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছিলেন, যাতে শুল্ক এড়িয়ে সুবিধা পাওয়া যায় এবং সামরিক সুরক্ষা পাওয়া যায়। তবে কার্নি স্পষ্ট ভাষায় জানিয়েছেন, কানাডা কখনোই যুক্তরাষ্ট্রের অংশ হবে না।
কার্নি, যিনি আগে কানাডার ব্যাংক অব কানাডা এবং ব্যাংক অব ইংল্যান্ডের গভর্নর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন, ৮৬ শতাংশ ভোট পেয়ে সাবেক অর্থমন্ত্রী ক্রিস্টিয়া ফ্রিল্যান্ডকে পরাজিত করেছেন। তার এই বিজয় কানাডিয়ান রাজনীতিতে একটি ঐতিহাসিক পরিবর্তন হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে, কারণ তিনি প্রথমবারের মতো একজন রাজনৈতিক বলয়ের বাইরে থেকে পার্টির নেতৃত্বে এসেছেন।
অটাওয়ায় তার জয়লাভের পর কার্নি কানাডার জনগণের উদ্দেশে বলেন, “কানাডা আমেরিকা নয়। আমরা কখনোই, কোনোভাবেই, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অংশ হবো না। আমেরিকানরা আমাদের সম্পদ, আমাদের পানি, আমাদের ভূমি চায়—কিন্তু তারা আমাদের দেশ গ্রহণ করতে পারবে না।”
এছাড়াও, তিনি যুক্তরাষ্ট্রের সাথে বাণিজ্যিক উত্তেজনা নিয়ে মন্তব্য করেন, যেখানে গত কয়েক মাসে যুক্তরাষ্ট্র কানাডিয়ান পণ্যে ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে, যা পরে আংশিকভাবে প্রত্যাহার করা হয়। এর প্রতিক্রিয়ায়, কানাডা পাল্টা শুল্ক আরোপ করেছে, যা কার্নি অটলভাবে রক্ষা করার অঙ্গীকার করেছেন।
এ বিজয়ের পর, কার্নি দেশটির অর্থনৈতিক স্বার্থ রক্ষার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছেন এবং বলেছেন, “আমরা কানাডা শক্তিশালী এবং আমরা একসঙ্গে থাকব আমাদের সার্বভৌমত্ব, আমাদের অর্থনীতি, এবং আমাদের ভবিষ্যত রক্ষায়।”
কার্নির বিজয়ের পর কনজারভেটিভরা তার বিরুদ্ধে আক্রমণ শানিয়েছে, তাদের মতে তিনি পরিবর্তনের বদলে ধারাবাহিকতার প্রতিনিধিত্ব করছেন। তবে তার এই বিজয় কানাডার রাজনৈতিক দৃশপটে নতুন দিগন্তের সূচনা করেছে, বিশেষ করে যখন দেশটি তার বৃহত্তম বাণিজ্যিক সঙ্গীর সঙ্গে নতুন উত্তেজনার সম্মুখীন হচ্ছে।