ঢাকা , শনিবার, ০৩ মে ২০২৫, ২০ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ :

ভারত-পাকিস্তান অস্থিরতা রোহিতদের বাংলাদেশে পাঠাতে চায় না ভারত

চলতি বছরের আগস্টে তিনটি ওয়ানডে ও তিনটি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলতে বাংলাদেশ সফরে আসার কথা ভারতের জাতীয় ক্রিকেট দলের। শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়াম ও চট্টগ্রামের বীর শ্রেষ্ঠ ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মতিউর রহমান স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছয়টি ম্যাচ। কিন্তু ভারত-পাকিস্তান অস্থিরতা ও বাংলাদেশের সঙ্গে সাম্প্রতিক কূটনৈতিক টানাপোড়েনে সেই সফর অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে বলে জানিয়েছে টাইমস অফ ইন্ডিয়া।

সূত্রের বরাত দিয়ে বলছে টাইমস অফ ইন্ডিয়া জানিয়েছে, ‘এই সফর ক্যালেন্ডারের অংশ (পূর্ব নির্ধারিত) হলেও এখনো কিছুই চূড়ান্ত হয়নি। বর্তমান পরিস্থিতির কারণে ভারতীয় দল যে বাংলাদেশে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলতে যাচ্ছে না, সেই সম্ভাবনাই বেশি। কারণ বাংলাদেশ সফর নিয়ে এখনো কোনো পরিকল্পনা হাতে নেয়নি বিসিসিআই।’

টাইমস অফ ইন্ডিয়া তাদের প্রতিবেদনে সিরিজ নিয়ে শঙ্কার পাশাপাশি পাকিস্তানের সঙ্গে দ্বন্দ্বে বাংলাদেশের অবস্থান নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। যেখানে তারা বাংলাদেশের অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল (অব.) এ এল এম ফজলুর রহমানের ফেসবুক মন্তব্যকে উদ্ধৃতি করেছে। প্রতিবেদনে তারা অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেলকে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের খুব ঘনিষ্ঠ একজন বলে দাবি করে। যিনি ফেসবুক পোস্টে লেখেন, ‘ভারত পাকিস্তান আক্রমণ করলে বাংলাদেশের উচিত হবে উত্তর পূর্ব ভারতের সাত রাজ্য দখল করে নেয়া। এই ব্যাপারে চীনের সঙ্গে যৌথ সামরিক ব্যবস্থা নিয়ে আলোচনা শুরু করা প্রয়োজন বলে মনে করি।’

এই ধরনের মন্তব্য দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা আরও বাড়িয়েছে। ফলে পুরো সফর বয়কটের সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। যদিও এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি বলে জানানো হয়েছে। কেউ কেউ ধারণা করছেন, বিডিআর কমিশনের প্রধান মেজর জেনারেল (অব.) এএলএম ফজলুর রহমানের একটি বিতর্কিত মন্তব্যের পরই ভারতীয় ক্রিকেট দলের বাংলাদেশ সফর নিয়ে আগ্রহ কমেছে বিসিসিআইয়ের।

যদিও বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, মেজর জেনারেল (অব.) এ এল এম ফজলুর রহমানের বক্তব্য সরকার সমর্থন করে না। সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তিনি যে মন্তব্য করেছেন, তা সম্পূর্ণভাবে তার ব্যক্তিগত। এ মন্তব্য বাংলাদেশ সরকারের অবস্থান বা নীতির প্রতিফলন নয়, এবং সে জন্য সরকার এ মন্তব্য কোনোভাবে অনুমোদন করে না কিংবা সমর্থন করে না।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, বাংলাদেশ সরকার সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে অনুরোধ করছে, মেজর জেনারেল (অব.) এ এল এম ফজলুর রহমানের ব্যক্তিগত মন্তব্যকে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে যুক্ত না করতে। বাংলাদেশ সার্বভৌমত্ব, আঞ্চলিক অখণ্ডতা, পারস্পরিক সম্মান এবং সব জাতির শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের নীতিতে দৃঢ়ভাবে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

টাইমস অফ ইন্ডিয়া তাদের প্রতিবেদনে আরও জানিয়েছে, সেপ্টেম্বর মাসে অনুষ্ঠিতব্য ২০২৫ এশিয়া কাপ নিয়েও অনিশ্চয়তা দিতে পারে। কারণ ভারত সরকার দক্ষিণ এশিয়ার প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে কূটনৈতিকভাবে কড়া অবস্থান নিয়েছে। এতে করে শিগগিরই ভারত-পাকিস্তান বা ভারত-বাংলাদেশের মধ্যকার ক্রিকেট আয়োজন বেশ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।

২০২৫ এশিয়া কাপ আয়োজনের কথা রয়েছে ভারতের মাটিতে। আগস্টে বাংলাদেশ সফর শেষে সেপ্টেম্বরে এই প্রতিযোগিতা শুরু হওয়ার কথা থাকলেও বর্তমান বাস্তবতায় তা পিছিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা জোরালো হয়ে উঠেছে।

জনপ্রিয়

সারাদেশে ২৩ মে বিক্ষোভ করবে হেফাজত ইসলাম

ভারত-পাকিস্তান অস্থিরতা রোহিতদের বাংলাদেশে পাঠাতে চায় না ভারত

প্রকাশিত: ০৭:২৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২ মে ২০২৫

চলতি বছরের আগস্টে তিনটি ওয়ানডে ও তিনটি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলতে বাংলাদেশ সফরে আসার কথা ভারতের জাতীয় ক্রিকেট দলের। শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়াম ও চট্টগ্রামের বীর শ্রেষ্ঠ ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মতিউর রহমান স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছয়টি ম্যাচ। কিন্তু ভারত-পাকিস্তান অস্থিরতা ও বাংলাদেশের সঙ্গে সাম্প্রতিক কূটনৈতিক টানাপোড়েনে সেই সফর অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে বলে জানিয়েছে টাইমস অফ ইন্ডিয়া।

সূত্রের বরাত দিয়ে বলছে টাইমস অফ ইন্ডিয়া জানিয়েছে, ‘এই সফর ক্যালেন্ডারের অংশ (পূর্ব নির্ধারিত) হলেও এখনো কিছুই চূড়ান্ত হয়নি। বর্তমান পরিস্থিতির কারণে ভারতীয় দল যে বাংলাদেশে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলতে যাচ্ছে না, সেই সম্ভাবনাই বেশি। কারণ বাংলাদেশ সফর নিয়ে এখনো কোনো পরিকল্পনা হাতে নেয়নি বিসিসিআই।’

টাইমস অফ ইন্ডিয়া তাদের প্রতিবেদনে সিরিজ নিয়ে শঙ্কার পাশাপাশি পাকিস্তানের সঙ্গে দ্বন্দ্বে বাংলাদেশের অবস্থান নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। যেখানে তারা বাংলাদেশের অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল (অব.) এ এল এম ফজলুর রহমানের ফেসবুক মন্তব্যকে উদ্ধৃতি করেছে। প্রতিবেদনে তারা অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেলকে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের খুব ঘনিষ্ঠ একজন বলে দাবি করে। যিনি ফেসবুক পোস্টে লেখেন, ‘ভারত পাকিস্তান আক্রমণ করলে বাংলাদেশের উচিত হবে উত্তর পূর্ব ভারতের সাত রাজ্য দখল করে নেয়া। এই ব্যাপারে চীনের সঙ্গে যৌথ সামরিক ব্যবস্থা নিয়ে আলোচনা শুরু করা প্রয়োজন বলে মনে করি।’

এই ধরনের মন্তব্য দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা আরও বাড়িয়েছে। ফলে পুরো সফর বয়কটের সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। যদিও এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি বলে জানানো হয়েছে। কেউ কেউ ধারণা করছেন, বিডিআর কমিশনের প্রধান মেজর জেনারেল (অব.) এএলএম ফজলুর রহমানের একটি বিতর্কিত মন্তব্যের পরই ভারতীয় ক্রিকেট দলের বাংলাদেশ সফর নিয়ে আগ্রহ কমেছে বিসিসিআইয়ের।

যদিও বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, মেজর জেনারেল (অব.) এ এল এম ফজলুর রহমানের বক্তব্য সরকার সমর্থন করে না। সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তিনি যে মন্তব্য করেছেন, তা সম্পূর্ণভাবে তার ব্যক্তিগত। এ মন্তব্য বাংলাদেশ সরকারের অবস্থান বা নীতির প্রতিফলন নয়, এবং সে জন্য সরকার এ মন্তব্য কোনোভাবে অনুমোদন করে না কিংবা সমর্থন করে না।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, বাংলাদেশ সরকার সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে অনুরোধ করছে, মেজর জেনারেল (অব.) এ এল এম ফজলুর রহমানের ব্যক্তিগত মন্তব্যকে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে যুক্ত না করতে। বাংলাদেশ সার্বভৌমত্ব, আঞ্চলিক অখণ্ডতা, পারস্পরিক সম্মান এবং সব জাতির শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের নীতিতে দৃঢ়ভাবে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

টাইমস অফ ইন্ডিয়া তাদের প্রতিবেদনে আরও জানিয়েছে, সেপ্টেম্বর মাসে অনুষ্ঠিতব্য ২০২৫ এশিয়া কাপ নিয়েও অনিশ্চয়তা দিতে পারে। কারণ ভারত সরকার দক্ষিণ এশিয়ার প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে কূটনৈতিকভাবে কড়া অবস্থান নিয়েছে। এতে করে শিগগিরই ভারত-পাকিস্তান বা ভারত-বাংলাদেশের মধ্যকার ক্রিকেট আয়োজন বেশ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।

২০২৫ এশিয়া কাপ আয়োজনের কথা রয়েছে ভারতের মাটিতে। আগস্টে বাংলাদেশ সফর শেষে সেপ্টেম্বরে এই প্রতিযোগিতা শুরু হওয়ার কথা থাকলেও বর্তমান বাস্তবতায় তা পিছিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা জোরালো হয়ে উঠেছে।