খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মাছুদের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে অনড় শিক্ষার্থীরা আমরণ অনশন কর্মসূচি অব্যাহত রেখেছেন। তবে পদত্যাগের বিষয়টি তার নিজের সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করছে না বলে জানিয়েছেন উপাচার্য মুহাম্মদ মাসুদ।
বুধবার (২৩ এপ্রিল) একটি গণমাধ্যমের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।
অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মাসুদ বলেন, ‘আমাকে সরকার নিয়োগ দিয়েছে।
এখন সরকার যদি মনে করে আমি এই পদের জন্য যোগ্য না, অবশ্যই আমি তো আর থাকতে পারব না। এটা সম্পূর্ণ সরকারের ওপর নির্ভর করছে। এটা এখন আমার ওপর নির্ভর করছে না।’
কুয়েটের আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা বলছেন, আমরণ অনশন কর্মসূচি পালন করা শিক্ষার্থীদের অনেকেই অসুস্থ হয়ে এখন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
এদিকে খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) ৩৭ জন শিক্ষার্থীর সাময়িক বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করা হয়েছে। এ ছাড়া খুলে দেওয়া হয়েছে ৭টি আবাসিক হল। বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
আগামী ৪ মে থেকে ক্লাস শুরু করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এর আগে ১৫ এপ্রিল ছেলেদের ছয়টি হলের তালা ভাঙেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় রোকেয়া হলের তালা ভেঙেও হলে প্রবেশ করেন ছাত্রীরা।
উপাচার্যের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মধ্যে আজ সকাল পৌনে ১০টার দিকে শিক্ষা উপদেষ্টা সি আর আবরার কুয়েট ক্যাম্পাসে আসেন। তিনি অনশনরত শিক্ষার্থীদের অনশন কর্মসূচি প্রত্যাহারের অনুরোধ করেন। তবে শিক্ষার্থীরা অনশন কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছেন।
অনশনে বসা ৩২ শিক্ষার্থীর মধ্যে ৭ জন অসুস্থ হয়ে চিকিৎসাসেবা নিয়েছেন।
এদিকে আজ দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাকক্ষে প্রেস ব্রিফিং করে শিক্ষক সমিতি। চাপ দিয়ে উপাচার্যের অপসারণ করা হলে মেনে নেবেন না বলে জানিয়েছেন শিক্ষকেরা। পরে বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে উপাচার্যের পক্ষে মানববন্ধন করেছে কর্মচারী সমিতি।
গত ১৮ ফেব্রুয়ারি কুয়েটে ছাত্ররাজনীতি বন্ধের দাবিকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনায় শতাধিক লোক আহত হয়। পরদিন প্রশাসনিক ভবনসহ সব একাডেমিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে দেন শিক্ষার্থীরা। ওই দিন দুপুরে সিন্ডিকেট সভায় কুয়েটে সব ধরনের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত হয়। ২৫ ফেব্রুয়ারি সব আবাসিক হল অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়।
এরপর আবাসিক হল খুলে দেওয়ার দাবিতে ১৩ এপ্রিল বিকেল থেকে শিক্ষার্থীরা প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান নেন।