ঢাকা , শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ৬ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ :
ক্রিমিয়া নিয়ে ছাড়? শান্তি চুক্তির অংশ হিসেবে রাশিয়াকে স্বীকৃতি দিতে পারে যুক্তরাষ্ট্র: ব্লুমবার্গ যুক্তরাষ্ট্রের বিমান হামলায় ইয়েমেনের রাস ঈসা বন্দরে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৮০, আহত ১৭১ দিলীপ ঘোষের বিয়ে ঘিরে প্রশ্ন: আরএসএস প্রচারকেরা কি বিয়ে করতে পারেন? সংগঠনটির প্রচারক ছিলেন মোদিও নিখোঁজের ১৪ ঘণ্টা পর চট্টগ্রামে শিশুর লাশ উদ্ধার টাঙ্গাইলে অবৈধ ক্লিনিকে ভুল চিকিৎসায় রোগীর মৃত্যু শায়েস্তাগঞ্জে আগুনে পুড়ল ১৫ টি দোকান বিডিআর হত্যাকাণ্ড: সহায়ক তথ্য আহ্বান করে গণবিজ্ঞপ্তি জারি মালয়েশিয়ায় ১৬৫ বাংলাদেশিসহ ৫০৬ জন অভিবাসী আটক ইভ্যালির অর্থ আত্মসাৎ: গ্রাহকদের মানববন্ধন ও রাসেলের গ্রেফতারের দাবি কক্সবাজার-মহেশখালী রুটে প্রথমবারের মতো পরীক্ষামূলকভাবে চালু হলো সি-ট্রাক

ধর্ষণবিরোধী বিক্ষোভে উত্তাল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, দ্রুত বিচারে আল্টিমেটাম

ধর্ষণ ও যৌন নিপীড়নবিরোধী বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে উঠেছে দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো। ঢাকাসহ তিনটি বিশ্ববিদ্যালয়ে মধ্যরাতে শুরু হওয়া বিক্ষোভে অংশ নিয়েছেন নারী শিক্ষার্থীরা। তারা ধর্ষণ এবং নারী নিপীড়নের সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত বিচার করার দাবি জানিয়েছেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীরা ধর্ষণের ঘটনার দ্রুত বিচার এবং শাস্তির দাবিতে প্রতিবাদ জানাতে রাস্তায় নেমে আসেন। এর মধ্যে একটি বিশেষ ঘটনায়, সম্প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রীকে হেনস্তা করার পর, বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের একজন কর্মচারীকে পুলিশ গ্রেফতার করে। তবে আদালতে জামিন পাওয়ার পর হঠাৎ করে ‘তৌহিদী জনতা’ নামে এক দল লোক থানার সামনে বিক্ষোভ শুরু করে। পরে, এই ঘটনা নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা বিবৃতি দিয়ে অভিযুক্তের শাস্তি দাবি করেন।

ঢাবির রোকেয়া হলের শিক্ষার্থীরা প্রথমে মশাল মিছিল বের করেন। তাদের হাতে ছিল নানা স্লোগান ও ব্যানার, যেখানে লেখা ছিল, ‘আমার বোন ধর্ষিত কেন?’ এবং ‘ফাঁসি ফাঁসি, ধর্ষকের ফাঁসি চাই’। মিছিলটি রোকেয়া হল থেকে বের হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবন এলাকা প্রদক্ষিণ করে আবার হলের সামনে ফিরে আসে। এরপর, সুফিয়া কামাল হলের শিক্ষার্থীরা মিছিলে যোগ দেন এবং রাত ১২টার পর তারা রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে অবস্থান নিয়ে ধর্ষকদের শাস্তির দাবিতে স্লোগান দেন।

এ সময় শিক্ষার্থীরা তাদের বক্তব্যে বিচারহীনতার সংস্কৃতি বন্ধ এবং অপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তি দেওয়ার দাবি জানান। বিশেষ করে, তারা সরকারের কাছে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ধর্ষণের বিচার নিশ্চিত করার আল্টিমেটাম দেন। এরই মধ্যে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখপাত্র উমামা ফাতেমা বলেন, ‘যদি আগামী চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যে ধর্ষণের বিচারের ব্যবস্থা না হয়, তাহলে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে পদত্যাগ করতে হবে।’

এদিকে, মাগুরায় একটি শিশু নির্যাতনের শিকার হওয়ার ঘটনাটি ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। শিশুটির অবস্থা গুরুতর হওয়ায় সবাই উদ্বিগ্ন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশাপাশি, জাহাঙ্গীরনগর ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীরা সমাবেশ ও মিছিল করে ধর্ষণ এবং যৌন নিপীড়নবিরোধী প্রতিবাদ জানায়। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে রাত ৯টার দিকে শিক্ষার্থীরা শামসুজ্জোহা চত্বরে সমবেত হয়ে সরকারকে নারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি জানান। তারা বলেন, ‘নারীদের নিরাপত্তা দিতে না পারলে, দেশের শাসনভার চালানোর অধিকার আপনারা হারিয়ে ফেলেছেন।’

এ ঘটনার পর শিক্ষার্থীরা আরও ঘোষণা করেছেন, তারা যতদিন না ধর্ষণের বিচার নিশ্চিত হবে, ততদিন তাদের প্রতিবাদ চলবে। তাদের এই আন্দোলন ধর্ষণ এবং নারী নির্যাতনবিরোধী জাতীয় আন্দোলনে পরিণত হতে পারে, যার মাধ্যমে সরকারের প্রতি আরও কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানানো হচ্ছে।

 

জনপ্রিয়

ক্রিমিয়া নিয়ে ছাড়? শান্তি চুক্তির অংশ হিসেবে রাশিয়াকে স্বীকৃতি দিতে পারে যুক্তরাষ্ট্র: ব্লুমবার্গ

ধর্ষণবিরোধী বিক্ষোভে উত্তাল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, দ্রুত বিচারে আল্টিমেটাম

প্রকাশিত: ০১:২১ অপরাহ্ন, রবিবার, ৯ মার্চ ২০২৫

ধর্ষণ ও যৌন নিপীড়নবিরোধী বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে উঠেছে দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো। ঢাকাসহ তিনটি বিশ্ববিদ্যালয়ে মধ্যরাতে শুরু হওয়া বিক্ষোভে অংশ নিয়েছেন নারী শিক্ষার্থীরা। তারা ধর্ষণ এবং নারী নিপীড়নের সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত বিচার করার দাবি জানিয়েছেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীরা ধর্ষণের ঘটনার দ্রুত বিচার এবং শাস্তির দাবিতে প্রতিবাদ জানাতে রাস্তায় নেমে আসেন। এর মধ্যে একটি বিশেষ ঘটনায়, সম্প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রীকে হেনস্তা করার পর, বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের একজন কর্মচারীকে পুলিশ গ্রেফতার করে। তবে আদালতে জামিন পাওয়ার পর হঠাৎ করে ‘তৌহিদী জনতা’ নামে এক দল লোক থানার সামনে বিক্ষোভ শুরু করে। পরে, এই ঘটনা নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা বিবৃতি দিয়ে অভিযুক্তের শাস্তি দাবি করেন।

ঢাবির রোকেয়া হলের শিক্ষার্থীরা প্রথমে মশাল মিছিল বের করেন। তাদের হাতে ছিল নানা স্লোগান ও ব্যানার, যেখানে লেখা ছিল, ‘আমার বোন ধর্ষিত কেন?’ এবং ‘ফাঁসি ফাঁসি, ধর্ষকের ফাঁসি চাই’। মিছিলটি রোকেয়া হল থেকে বের হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবন এলাকা প্রদক্ষিণ করে আবার হলের সামনে ফিরে আসে। এরপর, সুফিয়া কামাল হলের শিক্ষার্থীরা মিছিলে যোগ দেন এবং রাত ১২টার পর তারা রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে অবস্থান নিয়ে ধর্ষকদের শাস্তির দাবিতে স্লোগান দেন।

এ সময় শিক্ষার্থীরা তাদের বক্তব্যে বিচারহীনতার সংস্কৃতি বন্ধ এবং অপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তি দেওয়ার দাবি জানান। বিশেষ করে, তারা সরকারের কাছে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ধর্ষণের বিচার নিশ্চিত করার আল্টিমেটাম দেন। এরই মধ্যে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখপাত্র উমামা ফাতেমা বলেন, ‘যদি আগামী চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যে ধর্ষণের বিচারের ব্যবস্থা না হয়, তাহলে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে পদত্যাগ করতে হবে।’

এদিকে, মাগুরায় একটি শিশু নির্যাতনের শিকার হওয়ার ঘটনাটি ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। শিশুটির অবস্থা গুরুতর হওয়ায় সবাই উদ্বিগ্ন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশাপাশি, জাহাঙ্গীরনগর ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীরা সমাবেশ ও মিছিল করে ধর্ষণ এবং যৌন নিপীড়নবিরোধী প্রতিবাদ জানায়। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে রাত ৯টার দিকে শিক্ষার্থীরা শামসুজ্জোহা চত্বরে সমবেত হয়ে সরকারকে নারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি জানান। তারা বলেন, ‘নারীদের নিরাপত্তা দিতে না পারলে, দেশের শাসনভার চালানোর অধিকার আপনারা হারিয়ে ফেলেছেন।’

এ ঘটনার পর শিক্ষার্থীরা আরও ঘোষণা করেছেন, তারা যতদিন না ধর্ষণের বিচার নিশ্চিত হবে, ততদিন তাদের প্রতিবাদ চলবে। তাদের এই আন্দোলন ধর্ষণ এবং নারী নির্যাতনবিরোধী জাতীয় আন্দোলনে পরিণত হতে পারে, যার মাধ্যমে সরকারের প্রতি আরও কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানানো হচ্ছে।