গত মে মাসে দেশে নারী ও শিশুসহ অন্তত ৮৬ জনকে হত্যা করা হয়েছে, যা আগের মাসের তুলনায় ১৭টি বেশি। একই মাসে ধর্ষণের ঘটনা ৫৯টি, সংঘবদ্ধ ধর্ষণ ১৬টি এবং ধর্ষণের পর হত্যা ৫টি। এসব তথ্য উঠে এসেছে মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশন (এমএসএফ) প্রকাশিত ‘মানবাধিকার পরিস্থিতি মনিটরিং’ প্রতিবেদনে।
শনিবার (৩১ মে) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করে এমএসএফ। বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক থেকে সংগৃহীত তথ্যের ভিত্তিতে প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, মে মাসে নারী ও শিশুদের ওপর সহিংসতা, ধর্ষণ, যৌন হয়রানি, পারিবারিক সহিংসতা, আত্মহত্যা ও হত্যার ঘটনা বাড়লেও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কার্যকর ভূমিকা দৃশ্যমান নয়। মে মাসে নারী ও শিশু নির্যাতনের ৩৬৮টি ঘটনা ঘটেছে, যার মধ্যে ৬ জন ধর্ষণের শিকার প্রতিবন্ধী কিশোরী ও নারী।
এছাড়া গণপিটুনি, সাংবাদিক নির্যাতন, সীমান্তে পুশ ইন, রাজনৈতিক সহিংসতা, সাইবার নিরাপত্তা আইনে মামলা এবং কারা হেফাজতে মৃত্যু—সবই বেড়েছে গত মাসের তুলনায়। মে মাসে গণপিটুনির ঘটনায় ৭ জন নিহত ও ৩৮ জন আহত হয়েছে। কারা হেফাজতে মৃত্যু হয়েছে ৭ জনের। পুলিশ দেখে পালাতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন ২ জন।
রাজনৈতিক সহিংসতার ৫৪টি ঘটনায় ৩৫৯ জন আহত এবং ৮ জন নিহত হয়েছে। রাজনৈতিক প্রতিহিংসা ও দলীয় দ্বন্দ্বে প্রাণ হারিয়েছেন বিএনপি ও আওয়ামী লীগের কর্মীসহ কিশোর বয়সী কয়েকজন।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন নিয়ে সহিংসতার ঘটনায় ১৬টি মামলা হয়েছে, যার তালিকায় রয়েছে ১,০৭২ জনের নাম এবং ২,৪০০ জন অজ্ঞাতনামা আসামি। এ সময় গ্রেপ্তার করা হয়েছে সরকারবিরোধী আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত ৪২২ জন নেতা-কর্মী এবং বিশেষ অভিযানে মোট গ্রেপ্তার ২৪,৭৩৩ জন।
মে মাসে সাংবাদিক নির্যাতনের ঘটনা ছিল ৪১টি, এতে আক্রান্ত হয়েছেন ১০১ জন সাংবাদিক। সাইবার নিরাপত্তা আইনে দায়ের হয়েছে ৪টি মামলা, অভিযুক্ত ৭ জন।
ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতনের ঘটনায় মে মাসে ১৫টি ঘটনা ঘটেছে। ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) পুশ ইন ও গুলিতে সীমান্তে প্রাণ হারিয়েছেন ২ জন, যা সীমান্তবাসীদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে।
মে মাসে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে উদ্ধার হয়েছে ৫৫টি অজ্ঞাতনামা লাশ।
এইসব ঘটনায় এমএসএফ গভীর উদ্বেগ ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছে এবং মানবাধিকার সুরক্ষায় দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছে।