বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ ধর্মীয় সমাবেশ পবিত্র হজের আনুষ্ঠানিকতা আজ মিনায় অবস্থানের মাধ্যমে শুরু হয়েছে। এরই মধ্যে লাখো ধর্মপ্রাণ মুসলমান মিনায় পৌঁছেছেন এবং মুখরিত হয়ে উঠেছে মিনার উপত্যকা পবিত্র ধ্বনি—”লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক” এ।
সৌদি আরবের সময় অনুযায়ী মঙ্গলবার (৭ জিলহজ) সন্ধ্যার পর মক্কার মসজিদুল হারাম বা নিজ নিজ আবাসন থেকে ইহরাম বেঁধে হজের নিয়ত করে মিনার পথে রওনা হন হাজিরা। মিনা মক্কা শহর থেকে প্রায় ৯ কিলোমিটার দূরে।
সৌদি হজ কর্তৃপক্ষের তথ্যমতে, এখন পর্যন্ত ৪ লক্ষাধিক হাজি মিনায় পৌঁছেছেন। ধর্মপ্রাণ মুসল্লিদের আগমনে মিনার চারপাশ জুড়ে বিরাজ করছে এক পবিত্র, নিবেদিত পরিবেশ।
রাতভর মিনায় অবস্থানের পর বৃহস্পতিবার (৫ জুন, ৯ জিলহজ) হজযাত্রীরা রওনা হবেন আরাফাতের ময়দানে, যেখানে অনুষ্ঠিত হবে হজের মূল খুতবা। এই আরাফাতে অবস্থানই হজের মূল স্তম্ভ হিসেবে গণ্য হয়।
চলতি বছর বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে প্রায় ১৫ লাখ মুসল্লি হজে অংশ নিচ্ছেন। তাদের নির্বিঘ্ন হজ পালনের জন্য সৌদি সরকার নিয়েছে কড়া নিরাপত্তা ও চিকিৎসা ব্যবস্থা।
হজের মূল আনুষ্ঠানিকতা জিলহজ মাসের ৮ থেকে ১৩ তারিখ পর্যন্ত চলে। এ সময়ে হাজিরা অংশ নেন কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় রীতিতে—
৯ জিলহজ: আরাফাতে অবস্থান ও খুতবা
১০ জিলহজ: মুজদালিফা থেকে ফিরে মিনায় শয়তানকে পাথর নিক্ষেপ, কুরবানি, মাথা মুণ্ডন এবং কাবা শরিফে তওয়াফ ও সাঈ
১১-১২ জিলহজ: তিনটি শয়তানকে ২১টি পাথর নিক্ষেপ
সবশেষে, বিদায়ি তওয়াফের মাধ্যমে হজের আনুষ্ঠানিক সমাপ্তি ঘটে
এ বছর আরাফার দিন হজের ঐতিহাসিক খুতবা প্রদান করবেন বিশিষ্ট ইসলামিক স্কলার শেখ সালেহ বিন হুমাইদ। সৌদি বাদশাহ সালমান বিন আবদুল আজিজ এক রাজকীয় আদেশে তাকে এ দায়িত্ব দিয়েছেন।
এবারের হজ ব্যবস্থাপনায় মক্কায় অতিরিক্ত নজরদারি, চিকিৎসা ইউনিট, হেলিকপ্টার ও বিশেষায়িত রেসপন্স টিম প্রস্তুত রাখা হয়েছে, যাতে অতিরিক্ত গরম ও ভিড়ের কারণে কোনও অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যু না ঘটে।
ধর্মপ্রাণ মুসলিমদের জীবনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এই ইবাদতের শুরুতে মিনায় শান্তিপূর্ণ ও ধারাবাহিকভাবে সব আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হবে—এমনটাই প্রত্যাশা করছেন সবাই।