প্রতিদিন বাজার করার ঝামেলা এড়াতে আমরা মাছ-মাংস কিনে ডিপ ফ্রিজে সংরক্ষণ করে থাকি, কিন্তু জানি না কিভাবে তা সঠিকভাবে সংরক্ষণ করলে পুষ্টিগুণ ও স্বাদ বজায় থাকে। একদিকে বাজারের ঝঞ্জাট থেকে রেহাই পেতে, অন্যদিকে ফ্রিজে খাবার দীর্ঘ সময় রেখে খেতে, বেশ কিছু নিয়ম মেনে চলা উচিত। চলুন, জেনে নিই, কীভাবে এবং কতদিন ডিপ ফ্রিজে মাছ-মাংস সংরক্ষণ করা যাবে।
কাঁচা মাছের সংরক্ষণ
- ইলিশ মাছ: ইলিশ মাছ সংরক্ষণ করতে হবে খুব সাবধানে, শুকনা অবস্থায়। পরিষ্কার কাপড় দিয়ে মুছে, বায়ুরোধী প্যাকেটে করে ডিপ ফ্রিজে রাখলে ৭-৮ মাস স্বাদ ও ঘ্রাণ ভালো থাকে।
- ছোট মাছ: কেটে, ধুয়ে পরিষ্কার করে ডিপ ফ্রিজে রাখলে ১ মাস ভালো থাকে।
- মাঝারি আকারের মাছ: কেটে, ধুয়ে পানি ঝরিয়ে প্যাকেট করে রাখলে ২ মাস পর্যন্ত ভালো থাকে।
- বড় মাছ ও সামুদ্রিক মাছ: ৪-৫ মাস পর্যন্ত ভালো থাকে, তবে এর চেয়ে বেশি সময় রাখা উচিত নয়।
কাঁচা মাংসের সংরক্ষণ
- মুরগির মাংস: ৩ মাস পর্যন্ত ভালো থাকে। তবে এক মাসের মধ্যে খেয়ে নেওয়াই শ্রেয়।
- কবুতর বা হাঁসের মাংস: ২ মাসের মধ্যে খেয়ে নেওয়া উচিত।
- গরু বা খাসির মাংস: ৭-৮ মাস পর্যন্ত ভালো থাকে।
- মগজ, কলিজা, কিডনি: ৭-১০ দিন পর্যন্ত ভালো থাকে।
- ফুসফুস, ভুঁড়ি: ২-৩ মাসের মধ্যে খেয়ে নেওয়া উচিত।
রান্না করা খাবারের সংরক্ষণ
- রান্না করা মাছ-মাংস: ১০-১৫ দিন পর্যন্ত ভালো থাকে।
- ভাত, পোলাও, খিচুড়ি: ১৫ দিন পর্যন্ত রাখা যায়।
- রান্না করা সবজি: ২-৩ দিনের বেশি রাখবেন না।
অন্যান্য খাবারের সংরক্ষণ
- টমেটো পিউরি: ৬-৭ মাস।
- হিমায়িত সিঙ্গারা, সমুচা, কাবাব: ১ মাস।
- ভাপানো সবজি (ফুলকপি, গাজর, মটরশুঁটি): ৬-৭ মাস।
- ফ্রেঞ্চ ফ্রাইয়ের আলু: ৭-১০ দিন।
বিশেষ টিপস
- খাবার সংরক্ষণ করার সময় একবারে যতটা রান্না করা হবে, ততটুকুই প্যাকেটে রাখুন। এতে খাবারের স্বাদ ও পুষ্টিগুণ বজায় থাকে।
- রান্না করা খাবারও একবার বের করে গরম করা হলে, ওই বেলায়ই খাওয়া হয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করুন।
- দুধ বা অন্যান্য তরল খাবারের প্যাকেট একবার খোলা হলে, তা আবার ফ্রিজে রাখা উচিত নয়। তবে টক দই, মাখন বা পনির প্যাকেট থেকে খানিকটা নিয়ে আবার ফ্রিজে রাখা যাবে।
- মসলা সংরক্ষণ করতে ছোট ছোট পাত্রে রাখুন, যাতে একবারে যা প্রয়োজন, কেবল ততটুকুই থাকে।
এই নিয়মগুলো মেনে চললে, আপনার ডিপ ফ্রিজে রাখা মাছ-মাংস ও অন্যান্য খাবার দীর্ঘ সময় ধরে তাজা থাকবে এবং স্বাদ বজায় থাকবে।