অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকাজুড়ে ইসরায়েলের বর্বরোচিত চলমান হামলায় নিহতের সংখ্যা ৪৬ হাজার ছাড়িয়েছে। আহত হয়েছেন এক লাখ ৯ হাজার ৩৭৮ ফিলিস্তিনি। এই হতাহতের মধ্যে অর্ধেকের বেশি নারী ও শিশু। গতকাল গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, পূর্ববর্তী ২৪ ঘণ্টায় গাজাজুড়ে ইসরায়েলি হামলায় ৭০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।
গাজায় যে ভয়াবহ পরিস্থিতি তা এক কথায় অসহনীয়। প্রতিদিনই মৃত্যু আর লাশের মিছিল। পানি, ওষুধ জরুরি খাদের জন্য হাহাকার। একজন বাস্তচ্যুত নারী পরিস্থিতির বর্ণনা দিতে গিয়ে বলেছিলেন, আমরা যে বেঁচে আছি তা জীবন নয়। আমরা যে পরিস্থিতির মধ্যে আছি তা কেউ-ই একদিনের জন্যও সহ্য করতে পারে না। আমাদের প্রতিদিনই মানুষের কান্নায় ঘুম ভাঙে। তিনি আরও বলেন, পরিস্থিতি অসহনীয়। আমাদের কোনো শক্তি অবশিষ্ট নেই। আমরা চাই আজই যুদ্ধ শেষ হোক।
অস্ত্রবিরতির কী হলো
জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা (ইউএনআরডব্লিওএ) বলেছে, গাজায় অস্ত্রবিরতি যে কোনো সময়ের তুলনায় এখন জটিল হয়ে উঠছে। সামাজিক মাধ্যমে এক পোস্টে সংস্থাটি জানিয়েছে, গাজায় ১৫ মাসের যুদ্ধে শরণার্থী শিবিরগুলো জনকীর্ণ হয়ে উঠেছে। জরুরি ভিত্তিতে আরও মানবিক সহায়তা প্রয়োজন। এখান যুদ্ধবিরতি যে কোনো সময়ের তুলনায় জটিল হয়ে উঠছে। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন বলেছেন, গাজায় অস্ত্রবিরতি ও জিম্মি মুক্তি নিয়ে সমাঝোতায় ‘আমরা অত্যন্ত কাছাকাছি’ অবস্থানে রয়েছি।
সেনাদের যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ থেকে বাঁচাতে নতুন বিধি ইসরায়েলের
যুদ্ধক্ষেত্রে সক্রিয় সেনাসদস্যদের মিডিয়া কাভারেজ নিয়ে নতুন বিধিনিষেধ আরোপ করেছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী। দেশের বাইরে ভ্রমণের সময় গাজায় যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে কোনো আইনি জটিলতা এড়াতে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর এক মুখপাত্র, লেফটেন্যান্ট কর্নেল নাদাভ শোশানি বলেছেন, এখন থেকে কর্নেল বা এর নিচের র?্যাংকের সেনাসদস্যদের সাক্ষাৎকার গ্রহণের সময় তাদের পুরো নাম বা চেহারা দেখানো যাবে না। এ ছাড়া যুদ্ধের কোনো নির্দিষ্ট ঘটনায় সাক্ষাৎকার প্রদানকারী সেনা জড়িত কিনা, সে রকম কোনো ইঙ্গিত দেওয়া যাবে না।
ভাঙা হলো নেতানিয়াহুর মোমের মূর্তি
মেক্সিকোর রাজধানী মেক্সিকো সিটির জাদুঘরে দখলদার ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর মোমের মূর্তি ভেঙে ফেলেছেন ফিলিস্তিনপন্থি এক বিক্ষোভকারী। গত মঙ্গলবার হাতুড়ি দিয়ে মূর্তিটি ভাঙেন তিনি। এ ছাড়া মূর্তিটিতে লাল রঙ মেখে দেন তিনি। এর পর এটি ধাক্কায় ফেলে দিয়ে ‘ফিলিস্তিন চিরজীবী হোক’ এ সেøাগান দেন তিনি। দখলদার ইসরায়েলের মেক্সিকো দূতাবাস এ ঘটনার নিন্দা জানিয়ে বলেছে, এটি একটি ‘ঘৃণ্য কাজ’। মূর্তি ভাঙার বিষয়টি হানাহানি, অসহিষ্ণতা এবং ঘৃণার বার্তা দিচ্ছে বলেও দাবি করে তারা। ইসরায়েল দূতাবাস বলে, এটি বৈধ সমালোচনার কাজ নয়।