নারী অধিকার আন্দোলনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশনের সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে কিছু সুপারিশ বাংলাদেশের মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ নারী সমাজের প্রত্যাশার সঙ্গে সাংঘর্ষিক। সোমবার (২১ এপ্রিল) এক যৌথ বিবৃতিতে সংগঠনটির সভানেত্রী মমতাজ মান্নান ও সেক্রেটারি নাজমুন্নাহার এ দাবি জানান।
বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, বাংলাদেশ এখনো সিডও (CEDAW) সনদের ধারা ২ ও ১৬(১)(গ) সংরক্ষিত রেখেছে, যেখানে পারিবারিক বিষয়ে নারী-পুরুষের পূর্ণ সমতার কথা বলা হয়েছে। নারী বিষয়ক কমিশনের সুপারিশে এই সংরক্ষণ প্রত্যাহারের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে, যা ধর্মীয় মূল্যবোধ ও সাংস্কৃতিক বিশ্বাসের প্রতি অসম্মান বলে বিবেচনা করা হচ্ছে।
কমিশনের সুপারিশে সংবিধানে পরিবর্তন এনে অভিন্ন পারিবারিক আইন, পারিবারিক সহিংসতা প্রতিরোধ আইন, অভিভাবক ও প্রতিপাল্য আইন, যৌন হয়রানি প্রতিরোধ আইন, ধর্ষণ আইন, নাগরিকত্ব আইন ও সাক্ষী সুরক্ষা আইন সংশোধনের প্রস্তাবও রয়েছে। নারী অধিকার আন্দোলনের মতে, এসব সুপারিশ কোরআনের বিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক এবং মুসলিম নারীদের ধর্মীয় পরিচয়ের ওপর ‘সুপরিকল্পিত আঘাত’।
বিশেষ করে যৌনকর্মকে পেশা হিসেবে সামাজিক স্বীকৃতি দেওয়ার প্রস্তাবকে নারী সমাজের জন্য ‘চরম অবমাননাকর’ হিসেবে আখ্যা দিয়ে সংগঠনটি দাবি করে, নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশনের আগে নিজেদের সংস্কার প্রয়োজন।
তাদের মতে, কমিশনে অংশগ্রহণকারী নারীরা মূলধারার প্রতিনিধিত্ব করেন না বরং সমাজ থেকে বিচ্ছিন্ন মতামত তুলে ধরেছেন। তারা দাবি করেছেন, দেশের বৃহত্তর নারী সমাজের প্রতিনিধিত্বে একটি নতুন কমিশন গঠনের মাধ্যমে প্রতিবেদনটি সংশোধন করা হোক।
প্রসঙ্গত, নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশন প্রধান উপদেষ্টার কাছে প্রতিবেদন জমা দিয়েছে এবং তা জাতীয় নারী উন্নয়ন নীতির ভিত্তিতে প্রণয়ন করা হয়েছে।