পটিয়ার চাঞ্চল্যকর শিউলি হত্যা মামলায় পলাতক আসামি মা-ছেলে কে গ্রেফতার করেছে র্যাব-৭। গ্রেফতারকৃতরা হলেন মামলার ১নং এজাহারনামীয় পলাতক আসামি মো. আলভী (২১) ও তার মা মনোয়ারা বেগম (৩৮)।
র্যাব গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে গাজীপুর জেলার শ্রীপুর থানা এলাকায় ও ময়মনসিংহ জেলার ভালুকা থেকে তাদের গ্রেফতার করে।
গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গতকাল রবিবার সন্ধ্যা ৭টায় র্যাব-৭ ও র্যাব-১ ঢাকার যৌথ আভিযানিক দল অভিযান পরিচালনা করে প্রথমে আসামি মো. আলভী (২১) কে গ্রেপ্তার করে। সে পটিয়া উপজেলার জঙ্গলখাইন ইউনিয়নের ওবায়দুল হক প্রকাশ বাচা মিয়ার পুত্র।
পরবর্তীতে গ্রেফতারকৃত আসামি মো. আলভীর দেওয়া তথ্যমতে অপর একটি আভিযানিক দল ময়মনসিংহ জেলার ভালুকা থানাধীন আইডিয়াল মোড় এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে। ২নং এজাহারনামীয় পলাতক আসামি মনোয়ারা বেগম কে গ্রেপ্তার করে।
সে একই এলাকার ওবায়দুল হক প্রকাশ বাচা মিয়ার স্ত্রী। বিষয়টি নিশ্চিত করেন পটিয়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আরিফুল ইসলাম।
নিহত নারী ভিকটিম জেলার পটিয়া থানাধীন জঙ্গলখাইন এলাকার বাসিন্দা। গত ২০২৪ সালের ১৫ ডিসেম্বর বিকেল ৩টায় ভিকটিমের দুটি সন্তান তার বাসার ছাদে খেলাধুলা করছিল। এসময় বসত ঘরের নীচ হতে প্রতিবেশী তাহাসিন ভিকটিমের সন্তানদের কাছে থাকা ব্যাডমিন্টন খেলার ব্যাট নীচে ফেলার জন্য বললে ভিকটিমের সন্তানরা খেলার ব্যাট দিতে অপারগতা প্রকাশ করে।
এসময় প্রতিবেশী তাহাসিন তাদের বাড়ীর অন্য একটি বাসার ছাদে উঠে ভিকটিমের সন্তানদের লক্ষ্য করে পাথর নিক্ষেপ করলে ভিকটিমের ছোট ছেলে ছামিম মাথায় গুরত্বর রক্তাক্ত আঘাত প্রাপ্ত হয়। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ভিকটিম এবং প্রতিবেশী মনোয়ারা বেগমের মধ্যে বাকবিতন্ডা হয়।
পরবর্তীতে ভিকটিম তার ছেলে সন্তানকে চিকিৎসার জন্য স্থানীয় আমজুর বাজারে নিয়ে যান এবং চিকিৎসা শেষে বাড়ীতে এসে সন্ধ্যা ৬টার দিকে বিচারের জন্য মনোয়ারা বেগম এর বাড়ীতে গেলে উক্ত ঘটনাকে কেন্দ্র করে সেখানে আলভী ও তার অন্যান্য সহযোগীরা পূর্বপরিল্পিত ভাবে ভিকটিমকে হত্যার উদ্দেশ্যে দেশীয় ধারালো অস্ত্র দিয়ে শরীরের বিভিন্ন স্থানে কুপিয়ে ও বুকের বাম পাশে ছুরিকাঘাত করে গুরত্বর রক্তাক্ত জখম করে।
পরবর্তীতে ভিকটিমের আত্ম-চিৎকারে তার পরিবার এবং স্থানীয় লোকজন ঘটনাস্থল থেকে ভিকটিমকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য পটিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ভিকটিমকে মৃত ঘোষনা করেন। পরে এ ঘটনায় নিহত ভিকটিমের স্বামী বাদী হয়ে পটিয়া থানায় ০৭ জনকে এজাহারনামীয় আসামী করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
আসামিদের গ্রেফতারের লক্ষ্যে গোয়েন্দা নজরদারি এবং ছায়া তদন্ত অব্যাহত রাখে। নজরদারির এক পর্যায়ে র্যাব-৭, চট্টগ্রাম গোপন সূত্রে জানতে পারে, আসামিরা তারা মামলা দায়েরের পর হতে আইন-শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর নিকট হতে গ্রেফতার এড়াতে নিজ এলাকা ছেড়ে গাজীপুর এবং ময়মনসিংহ জেলার বিভিন্ন স্থানে আত্মগোপন করে আসছিল বলে জানায়।
গ্রেফতারকৃতদের পটিয়া থানায় হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে বলে জানা যায়।