ঢাকা থেকে নোয়াখালীগামী একুশে পরিবহনের একটি যাত্রীবাহী বাসে মোটরসাইকেল আরোহীদের হামলার ঘটনা ঘটেছে। গত সোমবার (১ এপ্রিল) মধ্যরাতে কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্ট এলাকা পেরোনোর পর ৮-১০টি মোটরসাইকেলে থাকা একদল তরুণ বাসটিকে ধাওয়া করে প্রায় ৪০ কিলোমিটার পথ পেরিয়ে যায়। দুই দফা ইট ছোড়ার ঘটনায় বাসচালক মো. সোহেল গুরুতর আহত হন। তবে যাত্রীদের নিরাপত্তার কথা ভেবে তিনি থামেননি, যার ফলে রক্ষা পায় ৩৮ জন যাত্রী, যাদের মধ্যে নারী ও শিশুও ছিলেন।
বাসচালকের সহকারী মোহাম্মদ রাহাত জানান, প্রথমে নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী উপজেলার ছাতারপাইয়া ও পরে বেগমগঞ্জের মালেক মেডিকেল কলেজের সামনে থেকে চালককে লক্ষ্য করে ইট ছোড়া হয়। ইটের আঘাতে সোহেলের মাথা ও চোয়াল ক্ষতবিক্ষত হয়, মাথা ও মুখে ৩১টি সেলাই দেওয়া হয়েছে এবং দুটি দাঁত ভেঙে গেছে। তিনি এখন নোয়াখালীর মাইজদী সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
বাসের মালিক মো. জহিরুল ইসলাম জানান, ঘটনার পর সাধারণ ডায়েরি করতে গিয়ে থানা থেকে থানা ঘুরতে হয়েছে। এক পর্যায়ে কেউ মামলা নেননি। এ পর্যন্ত চালকের চিকিৎসায় খরচ হয়েছে প্রায় ৯০ হাজার টাকা, যার মধ্যে ৬০ হাজার টাকা তিনি দিয়েছেন।
হাইওয়ে পুলিশের কুমিল্লা অঞ্চলের পুলিশ সুপার মো. খায়রুল আলম বলেন, ঘটনাটি পেশাদার ডাকাতির সঙ্গে মেলে না। এটি বাসচালকের সঙ্গে মোটরসাইকেল আরোহীদের ব্যক্তিগত দ্বন্দ্ব থেকেও ঘটতে পারে। একটি তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে এবং বিভিন্ন সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ চলছে, তবে এখনও কাউকে শনাক্ত করা যায়নি।
এই ঘটনা যাত্রীদের নিরাপত্তা নিয়ে বড় প্রশ্ন তুলে দিয়েছে। চালকের সাহসিকতা প্রসংশিত হলেও ঘটনার পেছনের কারণ উদঘাটন এবং দোষীদের দ্রুত আইনের আওতায় আনা এখন সময়ের দাবি।