ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাস অভিযোগ করেছে যে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু গাজা যুদ্ধবিরতি চুক্তি ভঙ্গ করে ‘নোংরা খেলা’ খেলছেন। হামাসের রাজনৈতিক শাখার জ্যেষ্ঠ সদস্য বাসেম নাঈম শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) আল জাজিরাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এই অভিযোগ করেন। তিনি বলেন, ইসরাইল সরকার যুদ্ধবিরতি চুক্তির দ্বিতীয় ধাপ নিয়ে আলোচনায় অংশ নিচ্ছে না, যা আগামী ১ মার্চ শেষ হওয়ার কথা।
বাসেম নাঈম বলেন, “আমরা বিশ্বাস করি, আবারও এই চুক্তিকে ভণ্ডুল ও গুরুত্বহীন করার নোংরা খেলা চলছে। এই খেলার মাধ্যমে আবার নতুন করে যুদ্ধে ফিরে যাওয়ার বার্তা দেওয়া হচ্ছে।” তিনি আরও বলেন, হামাস চুক্তির বাধ্যবাধকতাগুলো মেনে চলেছে, কিন্তু ইসরাইল চুক্তির শর্ত ভঙ্গ করছে।চুক্তির প্রথম পর্যায়ে শতাধিক ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন এবং পর্যাপ্ত মানবিক সহায়তা গাজায় প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি।নেতজারিম করিডর (গাজার উত্তর ও দক্ষিণের মধ্যে সংযোগকারী সংকীর্ণ পথ) থেকে সেনা প্রত্যাহার স্থগিত রাখা হয়েছে।
৯ জানুয়ারি শুরু হওয়া যুদ্ধবিরতি চুক্তির প্রথম পর্যায়ে ইসরাইলি বন্দিদের মুক্তির বিনিময়ে ফিলিস্তিনি বন্দিদের মুক্তি, গাজা থেকে আংশিকভাবে ইসরাইলি সেনা প্রত্যাহার এবং গাজায় মানবিক সহায়তা প্রবেশ নিশ্চিত করা হয়।দ্বিতীয় ও তৃতীয় পর্যায়ে সব ইসরাইলি বন্দির মুক্তি এবং স্থায়ী যুদ্ধবিরতি কার্যকর করার কথা ছিল।
ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু অভিযোগ করেছেন যে হামাস সর্বশেষ মুক্তি পাওয়া জিম্মিদের ‘অপমানজনক অনুষ্ঠানের’ মাধ্যমে মুক্তি দিয়েছে। তাই আপাতত ফিলিস্তিনি বন্দিদের মুক্তি দেওয়া হবে না।ইসরাইলি কর্মকর্তারা দ্য নিউইয়র্ক টাইমসকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে হামাসের অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করেছেন, যদিও সরকারিভাবে ইসরাইল এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
শনিবার হামাস চুক্তির শর্ত মেনে ছয়জন ইসরাইলি জিম্মিকে মুক্তি দিয়েছে। তবে ইসরাইল ৬২০ জন ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দেয়নি।ফিলিস্তিনি পরিবারগুলো তাদের আপনজনদের ফিরে পেতে অপেক্ষার প্রহর গুনছে।
এই পরিস্থিতিতে হামাস ও ইসরাইলের মধ্যে উত্তেজনা বেড়েছে এবং যুদ্ধবিরতি চুক্তি ভঙ্গের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের হস্তক্ষেপ ও মধ্যস্থতা এই সংকট সমাধানের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।