নির্বাচন সংস্কার কমিশন চূড়ান্ত সুপারিশ হিসেবে বাংলাদেশের জাতীয় সংসদে আসনের সংখ্যা ৫০০ করার প্রস্তাব করেছে। পাশাপাশি, সংসদে উচ্চকক্ষ ও নিম্নকক্ষের সাংসদদের নির্বাচিত করে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন করার নতুন বিধানও প্রস্তাব করা হয়েছে। এতে আরও সুপারিশ করা হয়েছে, নির্দলীয় ব্যক্তির মাধ্যমে রাষ্ট্রপতি প্রার্থী করার বিধান।
সংবিধান সংশোধন করে স্থায়ী ‘জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিল’ গঠনের প্রস্তাবও করেছে কমিশন। এই কাউন্সিলের মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান, উপদেষ্টা এবং অন্যান্য সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ দেওয়ার ক্ষমতা থাকবে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মেয়াদ চার মাস হবে এবং এই সরকারের অধীনে জাতীয় ও স্থানীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। তবে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন করার কথা বলেছে কমিশন।
এছাড়া, আগামী সংসদ নির্বাচনে প্রবাসী ভোটারদের পোস্টাল ব্যালটের মাধ্যমে ভোট দেওয়ার সুযোগ নিশ্চিত করার প্রস্তাব করা হয়েছে। নির্বাচনে ব্যালট পদ্ধতির পাশাপাশি ভবিষ্যতে ‘অনলাইন ভোটিং ব্যবস্থা’ চালুরও সুপারিশ করা হয়েছে।
সংসদ নির্বাচনে যদি কোনো আসনে মোট ভোটের ৪০ শতাংশ ভোট না পড়ে, তবে পুননির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়া, ‘না ভোটের’ বিধান প্রবর্তন এবং ‘না ভোট’ বিজয়ী হলে নির্বাচন বাতিল করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
ইসি-কে নির্বাচন স্থগিত ও পুনর্নির্বাচনের ক্ষমতা দেওয়ার সুপারিশও রয়েছে। কমিশন জানিয়েছে, ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের একতরফা নির্বাচনের দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিদের তদন্ত করে বিচারের আওতায় আনা হবে। নির্বাচন সুষ্ঠু না হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিলে কমিশন রাষ্ট্রপতির মাধ্যমে সুপ্রিম কোর্টে রেফারেন্স পাঠিয়ে নির্বাচন স্থগিত করার সুপারিশ করেছে।
এই সুপারিশগুলো জাতীয় সংসদে অনুমোদন পেলে বাংলাদেশের নির্বাচনী ব্যবস্থা ও রাষ্ট্র পরিচালনায় গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আসবে।