চকরিয়ায় অপহরণের পর জোরপূর্বক বিয়ের ৮ মাসের মাথায় ছুরিকাঘাতে স্ত্রীকে হত্যা করেছে বখাটে স্বামী। এ সময় বাধা দেয়ার চেষ্টা করলে শাশুড়িকেও ছুরিকাঘাতে গুরুতর জখম করা হয়। নিহতের নাম উম্মে হাফসা তুহি (১৮), গুরুতর আহত তার মায়ের নাম পারভীন আক্তার (৩৮)। গতকাল শুক্রবার দুপুর দেড়টার দিকে পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ড মজিদিয়া মাদ্রাসা পাড়ার সংবাদকর্মী আবদুল হামিদের বাড়িতে এই ঘটনা ঘটে। ঘাতক জামাতার নাম শওকত হাসান মেহেদী (২৬)। তিনি উপজেলার ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের আজম উল্লাহ পাড়ার আবুল হাশেমের ছেলে। মেহেদী পেশায় ইলেকট্রিক মিস্ত্রি। ছুরিকাঘাতের পর থেকে তিনি পলাতক ছিলেন। তবে গতকাল রাত ৯টার দিকে বান্দরবানের লামা থেকে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়।
ঘটনার বিবরণ দিয়ে সংবাদকর্মী আবদুল হামিদ জানান, ৮ মাস আগে তার কন্যা উম্মে হাফসা তুহিকে অপহরণ করে নিয়ে বিয়ে করে মেহেদী। আমরা এটা মানতে না পেরে থানায় অভিযোগ দায়ের করি। এর ফলে কন্যার উপর স্বামীসহ শ্বশুরবাড়ির লোকজন নির্যাতন শুরু করে। এরপর গত বছরের ৫ ডিসেম্বর শ্বশুরবাড়ি থেকে মেয়েকে নিজের বাড়িতে নিয়ে আসি। গত বৃহস্পতিবার মেয়ের জামাই মেহেদী আমাদের বাড়িতে আসে। পরদিন শুক্রবার (গতকাল) সকালে মেয়েকে শ্বশুরবাড়ি নিয়ে যেতে চাইলে আমি এবং স্ত্রী পারভীন আক্তার বাধা দিই। তখন মেহেদীকে জানিয়ে দিই– তোমার বাবা–মাসহ আত্মীয়–স্বজনেরা এলে মেয়েকে যেতে দেব। এই কথা বলার পর মেহেদী চলে যায়। পরে দুপুরে জুমার নামাজ চলাকালীন দেড়টার দিকে মেহেদী অতর্কিত বাড়িতে এসে মেয়ে তুহি ও স্ত্রী পারভীনকে উপর্যুপুরি ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়।
আবদুল হামিদ আরও বলেন, জুমার নামাজ শেষ করে বাড়িতে এসে দেখতে পাই এই কাণ্ড। দ্রুত তাদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক মেয়ে তুহিকে মৃত ঘোষণা করেন। একইসাথে গুরুতর আহত স্ত্রীকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন। চিকিৎসক জানিয়েছেন তার অবস্থা আশক্সক্ষাজনক। চমেক হাসপাতাল সূত্র জানায়, শুক্রবার রাত ৯টা পর্যন্ত তার জ্ঞান ফেরেনি।
এ ব্যাপারে চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মঞ্জুর কাদের ভূঁইয়া বলেন, ছুরিকাঘাতে হত্যার ঘটনায় লাশ উদ্ধার করে কক্সবাজার সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। আহত পারভীন আক্তারকে চমেক হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ঘাতক বখাটে স্বামী মেহেদীকে বান্দরবানের লামার পাহাড়ি এলাকা থেকে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পরিবারের পক্ষ থেকে লিখিত এজাহার প্রাপ্তি সাপেক্ষে পরবর্তী আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।