ঢাকা , শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ৬ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ :
বিডিআর হত্যাকাণ্ড: সহায়ক তথ্য আহ্বান করে গণবিজ্ঞপ্তি জারি মালয়েশিয়ায় ১৬৫ বাংলাদেশিসহ ৫০৬ জন অভিবাসী আটক ইভ্যালির অর্থ আত্মসাৎ: গ্রাহকদের মানববন্ধন ও রাসেলের গ্রেফতারের দাবি কক্সবাজার-মহেশখালী রুটে প্রথমবারের মতো পরীক্ষামূলকভাবে চালু হলো সি-ট্রাক সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় শাহে আলম মুরাদ ও আনিসুর রহমান ৪ দিনের রিমান্ডে বিচারের মাধ্যমে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার দাবি শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানির চট্টগ্রামের চকবাজারে নালায় পড়ে ৬ মাসের শিশু নিখোঁজ ১৮ জেলায় ৬০ কিমি বেগে ঝড়-বৃষ্টির আশঙ্কা: সতর্কতা জারি করেছে আবহাওয়া অফিস কুয়াকাটায় শুরু হয়েছে রাখাইনদের প্রাচীন ‘জলকেলি’ উৎসব: মিলন, আত্মশুদ্ধি আর মানবিকতার বার্তা জুলাই আন্দোলনে শহীদ ইমনের মরদেহ উত্তোলন: আদালতের নির্দেশে নতুন তদন্তের সূচনা

নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ঢাকায় ব্যাপক আতশবাজি

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কঠোর নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের বিভিন্ন এলাকায় ইংরেজি নববর্ষ উদযাপনের অংশ হিসেবে ব্যাপক আতশবাজি ফুটানো হয়েছে।

মঙ্গলবার রাত ১২টা বাজার সঙ্গে সঙ্গে আতশবাজিতে প্রকম্পিত হয়ে উঠে সমগ্ৰ নগরী। আতশবাজির ছটায় রঙ্গিন হয়ে উঠে রাতের আকাশ। নববর্ষের শুরুতে আতশবাজির পাশাপাশি, ফানুস উড়ানো ও উচ্চস্বরে গান বাজানো ও প্রায় বাড়ির ছাদে রাতভর চলেছে ডিজে পার্টির উন্মাদনা। এতে শিশু ও রোগীরা চরম বিপাকে পড়েছে।

ডিএমপির নির্দেশনা অনুযায়ী, ৩১ ডিসেম্বর সন্ধ্যা ৬টা থেকে ১ জানুয়ারি সকাল ৮টা পর্যন্ত উন্মুক্ত স্থানে যেকোনো অনুষ্ঠান, সভা-সমাবেশ, গণজমায়েত নিষিদ্ধ ছিল। পাশাপাশি, সব বার বন্ধ রাখা এবং হোটেলগুলোর সীমিত পরিসরে অনুষ্ঠান আয়োজনের শর্ত জারি করা হয়। তবুও পুরান ঢাকার গেন্ডারিয়া, সুত্রাপুর, ওয়ারী, শাঁখারীবাজার, চকবাজার, লালবাগ, হাজারীবাগ, আজিমপুর, নিউমার্কেটসহ বিভিন্ন এলাকায় আইন অমান্য করে উদযাপন চালিয়ে যাওয়া হয় বিভিন্ন পার্টি। অধিকাংশ পার্টিতে মাদকের আসর এবং অশ্লীল নৃত্যে বুধ হয় আছে তরুণ-তরুণীরা।

সালমা আক্তার নামে একজন গৃহবধূ যুগান্তরকে বলেন, ইংরেজি নববর্ষ বাংলাদেশের কোন সংস্কৃতির অংশ না হলেও প্রতিবছর উশৃঙ্খল তরুণ যুবার মেতে উঠে আতশবাজি ও ডিজে পার্টি নামে অশ্লীল নৃত্য এবং মাদকের আসরে। এদের উচ্চ শব্দের আতশবাজি এবং গানের কারণে ছোট শিশুরা প্রায়ই ভয় পেয়ে ঘুম থেকে উঠে যায়। তাছাড়া বেশি বিপাকে পড়ে রোগীরা ।

আতশবাজির উচ্চ শব্দের কারণে হার্টের সমস্যাসহ বিভিন্ন রোগে ভোগা রোগীদের অস্বস্তি আরো বেড়ে যায়। তাছাড়া মানুষের শ্রবণ শক্তিকে কমিয়ে দেয় এসব শব্দ। তাই এসব বিষয়ে কার্যকর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে কঠোরভাবে আতশবাজি নিয়ন্ত্রণ করার দাবি জানান তিনি।

বেশ কয়েকজন বাসিন্দা অভিযোগ করেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী উপস্থিত থাকলেও উদযাপনে বাধা দেওয়া সম্ভব হয়নি। এছাড়া, এ বছর ভ্রাম্যমাণ আদালত এসব কাজে বাধা দেওয়ার কথা থাকলেও কার্যকর কোনো পদক্ষেপ চোখে পড়েনি।

এক তরুণ বলেন, বছরে একবার নতুন বছর আসে। না উদযাপন করলে খারাপ লাগে।

আরেকজন জানান, এটা পুরান ঢাকার ঐতিহ্য। যেকোনো উৎসব আমরা বড় করে পালন করি। স্থানীয়দের মতে, উৎসবের এই আয়োজন পুরান ঢাকার দীর্ঘদিনের ঐতিহ্যের অংশ হলেও এতে আইন অমান্যের বিষয়টি স্পষ্ট।

ঐতিহ্য বনাম আইন পুরান ঢাকার ঐতিহ্যবাহী উদযাপন ও আধুনিক শহরের আইনশৃঙ্খলা রক্ষার মধ্যে এই বিরোধ বারবার সামনে আসছে। জনসাধারণের আনন্দ উদযাপনের অধিকার ও আইন প্রয়োগের প্রয়োজনীয়তার মধ্যে ভারসাম্য রক্ষা করা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে।

পুরান ঢাকার এই নববর্ষ উদযাপন শহরের ঐতিহ্যের এক অনন্য উদাহরণ হলেও, আইন ভঙ্গ এবং নিরাপত্তার ঝুঁকি থেকে তা মুক্ত নয়। তবে, ঐতিহ্য ও নিরাপত্তার সমন্বয় ঘটিয়ে ভবিষ্যতে এমন উদযাপনকে নিয়মের আওতায় আনার আহ্বান জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

জনপ্রিয়

বিডিআর হত্যাকাণ্ড: সহায়ক তথ্য আহ্বান করে গণবিজ্ঞপ্তি জারি

নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ঢাকায় ব্যাপক আতশবাজি

প্রকাশিত: ০৮:৪৭ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১ জানুয়ারী ২০২৫

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কঠোর নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের বিভিন্ন এলাকায় ইংরেজি নববর্ষ উদযাপনের অংশ হিসেবে ব্যাপক আতশবাজি ফুটানো হয়েছে।

মঙ্গলবার রাত ১২টা বাজার সঙ্গে সঙ্গে আতশবাজিতে প্রকম্পিত হয়ে উঠে সমগ্ৰ নগরী। আতশবাজির ছটায় রঙ্গিন হয়ে উঠে রাতের আকাশ। নববর্ষের শুরুতে আতশবাজির পাশাপাশি, ফানুস উড়ানো ও উচ্চস্বরে গান বাজানো ও প্রায় বাড়ির ছাদে রাতভর চলেছে ডিজে পার্টির উন্মাদনা। এতে শিশু ও রোগীরা চরম বিপাকে পড়েছে।

ডিএমপির নির্দেশনা অনুযায়ী, ৩১ ডিসেম্বর সন্ধ্যা ৬টা থেকে ১ জানুয়ারি সকাল ৮টা পর্যন্ত উন্মুক্ত স্থানে যেকোনো অনুষ্ঠান, সভা-সমাবেশ, গণজমায়েত নিষিদ্ধ ছিল। পাশাপাশি, সব বার বন্ধ রাখা এবং হোটেলগুলোর সীমিত পরিসরে অনুষ্ঠান আয়োজনের শর্ত জারি করা হয়। তবুও পুরান ঢাকার গেন্ডারিয়া, সুত্রাপুর, ওয়ারী, শাঁখারীবাজার, চকবাজার, লালবাগ, হাজারীবাগ, আজিমপুর, নিউমার্কেটসহ বিভিন্ন এলাকায় আইন অমান্য করে উদযাপন চালিয়ে যাওয়া হয় বিভিন্ন পার্টি। অধিকাংশ পার্টিতে মাদকের আসর এবং অশ্লীল নৃত্যে বুধ হয় আছে তরুণ-তরুণীরা।

সালমা আক্তার নামে একজন গৃহবধূ যুগান্তরকে বলেন, ইংরেজি নববর্ষ বাংলাদেশের কোন সংস্কৃতির অংশ না হলেও প্রতিবছর উশৃঙ্খল তরুণ যুবার মেতে উঠে আতশবাজি ও ডিজে পার্টি নামে অশ্লীল নৃত্য এবং মাদকের আসরে। এদের উচ্চ শব্দের আতশবাজি এবং গানের কারণে ছোট শিশুরা প্রায়ই ভয় পেয়ে ঘুম থেকে উঠে যায়। তাছাড়া বেশি বিপাকে পড়ে রোগীরা ।

আতশবাজির উচ্চ শব্দের কারণে হার্টের সমস্যাসহ বিভিন্ন রোগে ভোগা রোগীদের অস্বস্তি আরো বেড়ে যায়। তাছাড়া মানুষের শ্রবণ শক্তিকে কমিয়ে দেয় এসব শব্দ। তাই এসব বিষয়ে কার্যকর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে কঠোরভাবে আতশবাজি নিয়ন্ত্রণ করার দাবি জানান তিনি।

বেশ কয়েকজন বাসিন্দা অভিযোগ করেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী উপস্থিত থাকলেও উদযাপনে বাধা দেওয়া সম্ভব হয়নি। এছাড়া, এ বছর ভ্রাম্যমাণ আদালত এসব কাজে বাধা দেওয়ার কথা থাকলেও কার্যকর কোনো পদক্ষেপ চোখে পড়েনি।

এক তরুণ বলেন, বছরে একবার নতুন বছর আসে। না উদযাপন করলে খারাপ লাগে।

আরেকজন জানান, এটা পুরান ঢাকার ঐতিহ্য। যেকোনো উৎসব আমরা বড় করে পালন করি। স্থানীয়দের মতে, উৎসবের এই আয়োজন পুরান ঢাকার দীর্ঘদিনের ঐতিহ্যের অংশ হলেও এতে আইন অমান্যের বিষয়টি স্পষ্ট।

ঐতিহ্য বনাম আইন পুরান ঢাকার ঐতিহ্যবাহী উদযাপন ও আধুনিক শহরের আইনশৃঙ্খলা রক্ষার মধ্যে এই বিরোধ বারবার সামনে আসছে। জনসাধারণের আনন্দ উদযাপনের অধিকার ও আইন প্রয়োগের প্রয়োজনীয়তার মধ্যে ভারসাম্য রক্ষা করা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে।

পুরান ঢাকার এই নববর্ষ উদযাপন শহরের ঐতিহ্যের এক অনন্য উদাহরণ হলেও, আইন ভঙ্গ এবং নিরাপত্তার ঝুঁকি থেকে তা মুক্ত নয়। তবে, ঐতিহ্য ও নিরাপত্তার সমন্বয় ঘটিয়ে ভবিষ্যতে এমন উদযাপনকে নিয়মের আওতায় আনার আহ্বান জানিয়েছেন স্থানীয়রা।