পাঁচ বছর পর মাহফিলে অংশ নেন জনপ্রিয় ইসলামী আলোচক মাওলানা মিজানুর রহমান আজহারী। শুক্রবার কক্সবাজারের পেকুয়ায় বৃহত্তর সাবেক গুলদি তাফসিরুল কুরআন মাহফিলে অংশগ্রহণের মাধ্যমে আবারো দেশের মাহফিলের মঞ্চে দেখা যায় তাকে। এর আগে ২০২০ সালের শুরুতে মাহফিল বন্ধ রেখে মালয়েশিয়ায় পাড়ি জমান মাওলানা মিজানুর রহমান আজহারী। ওই বছরের ২৯ জানুয়ারি নিজের ফেসবুক আইডিতে লেখেন, ‘পারিপার্শ্বিক কারণে এবং গবেষণার জন্য’ তিনি আগামী মার্চ পর্যন্ত সব ওয়াজ মাহফিল বন্ধ রেখে মালয়েশিয়া যাচ্ছেন।
কক্সবাজারের পেকুয়ায় অনুষ্ঠিত কুরআন মাহফিলে লাখো জনতার উপস্থিতি সামলাতে গিয়ে ভোগান্তির মুখোমুখি হন মাওলানা মিজানুর রহমান আজহারী। স্টেজে উঠতে এবং অনুষ্ঠান শেষে স্টেজ থেকে নামতে প্রায় ঘণ্টাখানেক সময় লেগেছিল। এমন পরিস্থিতিতে মাওলানা মিজানুর রহমান আজহারী নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন। শনিবার রাতে তিনি তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে একটি পোস্টের মাধ্যমে এ অভিজ্ঞতার কথা জানান।
যুগান্তর পাঠকদের জন্য তার পোস্টটি হুবহু তুলে ধরা হলো-
‘সুপ্রিয় বন্ধুরা, গতরাতে কক্সবাজারে পেকুয়ার প্রোগ্রামে লক্ষ জনতার ভিড় ঠেলে, স্টেজে উঠতে প্রায় ঘন্টা খানেক সময় লেগেছিল। প্রোগ্রাম শেষেও হয়েছিল ঠিক একই অবস্থা। এভাবে চলতে থাকলে হয়তো নিরাপত্তার স্বার্থে আমার পক্ষে বড় পাবলিক ইভেন্টগুলোতে যোগদান করা সম্ভব হবে না।’
‘আমি কুরআনের একজন নগন্য ছাত্র। আপনাদের দ্বীনি ভাই। দয়া করে আমার প্রতি একটু ইহসান করুন। সর্বশেষ দেশে ২০১৯-২০২০ সালেও ক্রাউড সামলাতে গিয়ে একাধিকবার ইনজুরির শিকার হয়েছিলাম। এবারও এরকম দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছি। দয়া করে স্টেজে যাওয়ার পথে কিংবা ফেরার পথে মুসাফাহা করার জন্য বা ছবি তোলার জন্য ভিড় করবেন না। আলোচনা চলাকালীন সময়ে স্টেজের দুই পাশে দাঁড়িয়ে ধাক্কাধাক্কি ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করবেন না।’
‘প্রতিটি প্রোগ্রামেই মূল প্যান্ডেলের বাইরে আলাদা মাঠে একাধিক সুবিশাল এলইডি স্ক্রিন থাকবে। আমাকে সরাসরি দেখতে না পেলেও এলইডিতে দেখার সুযোগ থাকছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাথে অযথা ঝামেলায় জড়াবেন না। সেইফ এন্ট্রি এবং সেইফ এক্সিট নিশ্চিতকরণে, আয়োজকদের সকল দিক নির্দেশনা মেনে চলুন।’
‘অতি আবেগী হয়ে কুরআনের মাহফিলের পরিবেশ নষ্ট করা কাম্য নয়। কুরআন-প্রেমীরা স্মার্টলি সবকিছু হ্যান্ডেল করতে পারে। দয়া করে দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিন। আপনাদের আন্তরিক সহযোগিতা ছাড়া এতো বড় আয়োজনগুলো সফলভাবে সম্পন্ন করা অসম্ভব।’
‘আমি আল্লাহর জন্য আপনাদেরকে ভালোবাসি এবং এটা বিশ্বাস করি, নিশ্চই আপনারাও আল্লাহর জন্যই আমাকে ভালোবাসেন। আপনাদের এই উষ্ণ ভালোলাগা আমি দূর থেকে ভীষণ অনুভব করি, কিন্তু আমরা সবাই যদি কাছে এসে মুসাফাহা করতে চাই, কথা বলতে চাই, ছবি সংরক্ষণ করতে চাই, তাহলে আল্লাহর জন্য ভালোবাসার এই দাবি পূরণ করা আমার জন্য কষ্টকর হয়ে যাবে। আমার এই সীমাবদ্ধতাকে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখার অনুরোধ জানাচ্ছি।’
‘আগামী প্রোগ্রামগুলোতে আমরা অনেক বেশি সচেতন ও সুশৃঙ্খল থাকবো এই প্রত্যাশা রইলো। সবাই ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন। শীঘ্রই আপনাদের সাথে দেখা হচ্ছে আপনাদের প্রাণের বিভাগে ইনশাআল্লাহ।’