মরু আবহাওয়ার দেশ সৌদি আরবে বাড়ছে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ। দেশটিতে ২০২৩ সালে যে পরিমাণ বৃষ্টিপাত হয়েছে তা আগের বছরের (২০২২) তুলনায় ৫৩ শতাংশ বেশি। শুক্রবার (২৭ ডিসেম্বর) এক বিবৃতিতে দেশটির কেন্দ্রীয় পরিসংখ্যান দফতর এ তথ্য জানিয়েছে।
বৃষ্টিপাত বৃদ্ধির ফলে বেড়েছে বন্যাও। ২০২৩ সালে সৌদির নদী-নালাগুলো দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে ১ কোটি হাজার ৫৬ লাখ ৪০ হাজার ঘনমিটার বন্যার পানি প্রবাহিত হয়েছে যা আগের বছর ২০২২ সালের তুলনায় ১৬৪ দশমিক ১ শতাংশ বেশি।
মরু আবহাওয়ার দেশ সৌদি আরবে বৃষ্টিপাত বিরল হওয়ায় সমুদ্রের পানি লবনমুক্ত করা এবং ব্যবহৃত পানি পুনর্ব্যবহারযোগ্য করে তোলার মাধ্যমে পানির চাহিদা মেটায় দেশটি। ২০২২ সালের তুলনায় ২০২৩ সালে সৌদিতে পুনর্ব্যবহারযোগ্য পানির উৎপাদন বেড়েছে ১৩ দশমিক ৩ শতাংশ।
২০২৩ সালে ভূমি ও সমুদ্রসীমার সংরক্ষিত অঞ্চলের আয়তনও বেড়েছে। গত বছর দেশটির সংরক্ষিত ভূমির পরিমাণ বেড়েছে ৩ লাখ ৬১ হাজার বর্গকিলোমিটার, যা আগের বছর ২০২২ সালের তুলনায় ৭ দশমিক ১ অংশ। এছাড়া এই পরিমাণ ভূমি দেশটির মোট ভূখণ্ডের ১৮ দশমিক ১ শতাংশ।
একই বছর সমুদ্রের সংরক্ষিত অঞ্চলের পরিমাণ বেড়েছে ১৪ হাজার বর্গকিলোমিটার যা ২০২২ সালের তুলনায় ১৭ দশমিক ৭ শতাংশ বেশি।
সংরক্ষিত অঞ্চলগুলোতে পার্ক তৈরির মাধ্যমে সবুজায়ন প্রকল্প শুরু করেছে সৌদি। পরিসংখ্যান দফতরের তথ্য অনুযায়ী ২০২৩ সালে দেশটির পার্কগুলোর আয়তন বেড়েছে ৩৪ কোটি বর্গমিটার। আর সেসব পার্কে রোপন করা হয়েছে নতুন ২৬ লাখ গাছ।
২০১৭ সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান দেশটির সিংহাসনের উত্তরাধিকারী (ক্রাউন প্রিন্স) মনোনীত হন। বর্তমানে সৌদির প্রধানমন্ত্রীও তিনি। ক্ষমতা গ্রহণের পর ২০২১ সালে সৌদি গ্রিন ইনিশিয়েটিভ (এসজিআই) নামের একটি প্রকল্প চালু করেন যুবরাজ। জীবাশ্ম জ্বালানির ওপর নির্ভরশীলতা কমানো, পরিবেশবান্ধব নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার বৃদ্ধি, মরু এলাকার পরিমাণ কমিয়ে সবুজ অঞ্চলের বিস্তার বাড়ানো— প্রভৃতি ছিল এই এসজিআই গঠনের মূল উদ্দেশ্য।
আগামী ২০২৩ সালের মধ্যে বিদ্যুৎ উৎপাদন খাতে জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার বাদ দিয়ে নবায়নযোগ্য পরিবেশবান্ধব মাধ্যমগুলোকে পুরো মাত্রায় সক্রিয় করার লক্ষ্য নিয়েছে এসজিআই। যদি এই লক্ষ্যে সৌদি সফল হয়, তাহলে পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে কার্বন নিঃসরণের হার অন্তত ৪ শতাংশ কমে যাবে।
সূত্র: গাল্ফ নিউজ