ঢাকা , শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ৬ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ :
ক্রিমিয়া নিয়ে ছাড়? শান্তি চুক্তির অংশ হিসেবে রাশিয়াকে স্বীকৃতি দিতে পারে যুক্তরাষ্ট্র: ব্লুমবার্গ যুক্তরাষ্ট্রের বিমান হামলায় ইয়েমেনের রাস ঈসা বন্দরে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৮০, আহত ১৭১ দিলীপ ঘোষের বিয়ে ঘিরে প্রশ্ন: আরএসএস প্রচারকেরা কি বিয়ে করতে পারেন? সংগঠনটির প্রচারক ছিলেন মোদিও নিখোঁজের ১৪ ঘণ্টা পর চট্টগ্রামে শিশুর লাশ উদ্ধার টাঙ্গাইলে অবৈধ ক্লিনিকে ভুল চিকিৎসায় রোগীর মৃত্যু শায়েস্তাগঞ্জে আগুনে পুড়ল ১৫ টি দোকান বিডিআর হত্যাকাণ্ড: সহায়ক তথ্য আহ্বান করে গণবিজ্ঞপ্তি জারি মালয়েশিয়ায় ১৬৫ বাংলাদেশিসহ ৫০৬ জন অভিবাসী আটক ইভ্যালির অর্থ আত্মসাৎ: গ্রাহকদের মানববন্ধন ও রাসেলের গ্রেফতারের দাবি কক্সবাজার-মহেশখালী রুটে প্রথমবারের মতো পরীক্ষামূলকভাবে চালু হলো সি-ট্রাক

আমদানিতে বাড়ল ডলারের দাম

সাড়ে ৪ মাস স্থিতিশীল থাকার পর ডলারের দাম আবার বাড়তে শুরু করেছে। ডলার সংকট মেটাতে কিছু ব্যাংক রেমিট্যান্সের ডলার ১২৩ টাকায় কিনে আমদানিতে ১২৪ টাকায় বিক্রি করছে, যা আমদানি খরচ বাড়াচ্ছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বেঁধে দেওয়া সীমা অনুযায়ী সর্বোচ্চ ১২০ টাকায় ডলার বেচাকেনার কথা। নির্ধারিত দরের চেয়ে ৩ থেকে ৪ টাকা বেশিতে ব্যাংকে ডলার বেচাকেনা হচ্ছে। তবে ব্যাংকগুলো নিজস্ব তহবিল থেকে প্রণোদনা দিয়ে বাড়তি দাম সমন্বয় করবে বলে জানা গেছে। ফলে ডলারের দাম কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সীমার মধ্যেই থাকছে। তবে প্রবাসীরা প্রণোদনা বাবদ বাড়তি পাচ্ছেন আড়াই শতাংশ।

সূত্র জানায়, আমদানিতে ডলারের দাম বাড়ানোর ফলে খরচ বেড়ে যাবে। এতে আমদানি পণ্যের দাম বাড়বে। ফলে বাজারে আমদানিজনিত মূল্যস্ফীতির চাপও বাড়বে। এখনও মূল্যস্ফীতিতে আমদানিজনিত চাপ রয়ে গেছে। ডলারের বাড়তি দাম এই চাপকে আরও বাড়িয়ে দেবে।

১২ নভেম্বর কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে এক সার্কুলার দিয়ে বলা হয়, এখন থেকে আমদানির দায় নিয়মিত শোধ করতে হবে। কোনো দেনা বকেয়া রাখা যাবে না। কোনো ব্যাংকের আমদানির দায় বকেয়া থাকলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এ হুঁশিয়ারির পর ব্যাংকগুলোতে আমদানির বকেয়াসহ চলতি দায় পরিশোধের চাপ বেড়ে যায়। এতে ডলারের চাহিদাও বাড়ে। কিন্তু চাহিদার অনুপাতে সরবরাহ বাড়ছে না। ফলে ব্যাংকগুলো আমদানির দায় পরিশোধ করতে গিয়ে ডলারের সংকটে পড়েছে।

এ সংকটের সময় কেন্দ্রীয় ব্যাংক রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি বন্ধ রেখেছে। বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোও বাজারে ডলার বিক্রি করছে খুব কম। ফলে চাহিদা অনুযায়ী ডলার মিলছে না।

এদিকে আমদানির দায় মেটানোর চাপও রয়েছে। ফলে যেসব ব্যাংকের আমদানির দায় বেশি তারা বাড়তি দামে রেমিট্যান্সের ডলার কিনতে শুরু করেছে। গত এক মাস আগে রেমিট্যান্সের ডলারের দাম সর্বোচ্চ ছিল ১১৯ টাকা। পরে তা বেড়ে ১১৯ টাকা ৫০ পয়সা হয়েছে। এরপর থেকে গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে আরও বেড়ে ১২২ টাকায় ওঠে। কোনো কোনো ব্যাংক ১২৩ টাকায়ও রেমিট্যান্স কিনছে। ব্যাংকগুলো আমদানিতে এসব ডলার সর্বোচ্চ ১২৪ টাকা করে বিক্রি করছে।

এদিকে আমদানির দায় মেটাতে অনেক ব্যাংক গ্রাহকের পক্ষে আগাম ডলার কিনে রাখছে। এতেও ডলারের দাম বেশি পড়ছে। ফলে বেড়ে যাচ্ছে আমদানি খরচ।

ডলার সংকট প্রকট হলে বাড়তি রেমিট্যান্স সংগ্রহের জন্য ব্যাংকগুলো সর্বোচ্চ আড়াই শতাংশ প্রণোদনা দিত আগে। ডলারের প্রবাহ বাড়লে পরে তা বন্ধ করে দেওয়া হয়। এখন আবার সংকট বাড়ায় কোনো কোনো ব্যাংক সর্বোচ্চ আড়াই শতাংশ হারে প্রণোদনা দিচ্ছে। এ হিসাবে প্রতি ডলারের দাম সর্বোচ্চ ১২০ টাকা হলে আড়াই শতাংশ বাবদ প্রণোদনা পাচ্ছেন ৩ টাকা। ফলে ডলার প্রতি প্রবাসীরা পাচ্ছেন সর্বোচ্চ ১২৩ টাকা। এর সঙ্গে সরকার থেকে আড়াই শতাংশ প্রণোদনা দেওয়া হচ্ছে। সব মিলে প্রতি ডলারে প্রবাসীরা পাচ্ছেন ১২৬ টাকা।

এদিকে ৩ ডিসেম্বর কেন্দ্রীয় ব্যাংকে মুদ্রানীতি বিষয়ক কমিটির সভায় ডলারের দাম নির্ধারণের বর্তমান পদ্ধতি ক্রলিং পেগ (একটি নির্দিষ্ট সীমার মধ্যে থেকে ডলারের দাম উঠানামা করা) থেকে বেরিয়ে আসার প্রস্তাব দেওয়া হয়।

এতে বলা হয়, ডলারের দামকে পর্যায়ক্রমে বাজারের ওপর ছেড়ে দেওয়া উচিত। মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সঙ্গে আইএমএফের বৈঠকে এ বিষয়টি ওঠে আসে। তারাও ডলারের দাম নির্ধারণের ক্রলিং পেগ পদ্ধতি তুলে দিয়ে বাজারভিত্তিক করার প্রস্তাব দেয়। বর্তমানে ক্রলিং পেগ পদ্ধতিতে ডলারের দাম সর্বোচ্চ ১২০ টাকা বাড়তে পারে। আইএমএফ মনে করে ডলারের দাম এখন স্থির হয়ে আছে। অনেকেই মনে করতে পারেন আগামীতে এর দাম বাড়বে, যে কারণে ডলার ধরে রাখছেন। এটি উঠানামা করা উচিত। তাহলে মানুষের হাতে ডলার ধরে রাখার প্রবণতা কমে যাবে। বাজারে ডলারের প্রবাহ বাড়বে।

ব্যাংকে নগদ ডলারের দাম ১২০ টাকার মধ্যে হলেও কয়েকটি ব্যাংক ১২১ টাকায় বিক্রি করছে। আর কিছু ব্যাংক ১২১ টাকার কম কিন্তু ১২০ টাকার বেশি দামে বিক্রি করছে। এদিকে খোলা বাজারে ডলারের দাম আগে কিছুটা কমলেও এখন বাড়তে শুরু করেছে। এছাড়া ভারত থেকে যেসব দেশের ভিসা নিতে হয় সেগুলোও পাওয়া যাচ্ছে না। চিকিৎসার জন্যও ভারত যাওয়া যাচ্ছে না। এতে ডলারের চাহিদা কম। খোলা বাজারে প্রতি ডলার এখন ১২২ থেকে ১২৩ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আগে ছিল ১২১ থেকে ১২২ টাকা।

জনপ্রিয়

ক্রিমিয়া নিয়ে ছাড়? শান্তি চুক্তির অংশ হিসেবে রাশিয়াকে স্বীকৃতি দিতে পারে যুক্তরাষ্ট্র: ব্লুমবার্গ

আমদানিতে বাড়ল ডলারের দাম

প্রকাশিত: ১০:৫৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪

সাড়ে ৪ মাস স্থিতিশীল থাকার পর ডলারের দাম আবার বাড়তে শুরু করেছে। ডলার সংকট মেটাতে কিছু ব্যাংক রেমিট্যান্সের ডলার ১২৩ টাকায় কিনে আমদানিতে ১২৪ টাকায় বিক্রি করছে, যা আমদানি খরচ বাড়াচ্ছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বেঁধে দেওয়া সীমা অনুযায়ী সর্বোচ্চ ১২০ টাকায় ডলার বেচাকেনার কথা। নির্ধারিত দরের চেয়ে ৩ থেকে ৪ টাকা বেশিতে ব্যাংকে ডলার বেচাকেনা হচ্ছে। তবে ব্যাংকগুলো নিজস্ব তহবিল থেকে প্রণোদনা দিয়ে বাড়তি দাম সমন্বয় করবে বলে জানা গেছে। ফলে ডলারের দাম কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সীমার মধ্যেই থাকছে। তবে প্রবাসীরা প্রণোদনা বাবদ বাড়তি পাচ্ছেন আড়াই শতাংশ।

সূত্র জানায়, আমদানিতে ডলারের দাম বাড়ানোর ফলে খরচ বেড়ে যাবে। এতে আমদানি পণ্যের দাম বাড়বে। ফলে বাজারে আমদানিজনিত মূল্যস্ফীতির চাপও বাড়বে। এখনও মূল্যস্ফীতিতে আমদানিজনিত চাপ রয়ে গেছে। ডলারের বাড়তি দাম এই চাপকে আরও বাড়িয়ে দেবে।

১২ নভেম্বর কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে এক সার্কুলার দিয়ে বলা হয়, এখন থেকে আমদানির দায় নিয়মিত শোধ করতে হবে। কোনো দেনা বকেয়া রাখা যাবে না। কোনো ব্যাংকের আমদানির দায় বকেয়া থাকলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এ হুঁশিয়ারির পর ব্যাংকগুলোতে আমদানির বকেয়াসহ চলতি দায় পরিশোধের চাপ বেড়ে যায়। এতে ডলারের চাহিদাও বাড়ে। কিন্তু চাহিদার অনুপাতে সরবরাহ বাড়ছে না। ফলে ব্যাংকগুলো আমদানির দায় পরিশোধ করতে গিয়ে ডলারের সংকটে পড়েছে।

এ সংকটের সময় কেন্দ্রীয় ব্যাংক রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি বন্ধ রেখেছে। বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোও বাজারে ডলার বিক্রি করছে খুব কম। ফলে চাহিদা অনুযায়ী ডলার মিলছে না।

এদিকে আমদানির দায় মেটানোর চাপও রয়েছে। ফলে যেসব ব্যাংকের আমদানির দায় বেশি তারা বাড়তি দামে রেমিট্যান্সের ডলার কিনতে শুরু করেছে। গত এক মাস আগে রেমিট্যান্সের ডলারের দাম সর্বোচ্চ ছিল ১১৯ টাকা। পরে তা বেড়ে ১১৯ টাকা ৫০ পয়সা হয়েছে। এরপর থেকে গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে আরও বেড়ে ১২২ টাকায় ওঠে। কোনো কোনো ব্যাংক ১২৩ টাকায়ও রেমিট্যান্স কিনছে। ব্যাংকগুলো আমদানিতে এসব ডলার সর্বোচ্চ ১২৪ টাকা করে বিক্রি করছে।

এদিকে আমদানির দায় মেটাতে অনেক ব্যাংক গ্রাহকের পক্ষে আগাম ডলার কিনে রাখছে। এতেও ডলারের দাম বেশি পড়ছে। ফলে বেড়ে যাচ্ছে আমদানি খরচ।

ডলার সংকট প্রকট হলে বাড়তি রেমিট্যান্স সংগ্রহের জন্য ব্যাংকগুলো সর্বোচ্চ আড়াই শতাংশ প্রণোদনা দিত আগে। ডলারের প্রবাহ বাড়লে পরে তা বন্ধ করে দেওয়া হয়। এখন আবার সংকট বাড়ায় কোনো কোনো ব্যাংক সর্বোচ্চ আড়াই শতাংশ হারে প্রণোদনা দিচ্ছে। এ হিসাবে প্রতি ডলারের দাম সর্বোচ্চ ১২০ টাকা হলে আড়াই শতাংশ বাবদ প্রণোদনা পাচ্ছেন ৩ টাকা। ফলে ডলার প্রতি প্রবাসীরা পাচ্ছেন সর্বোচ্চ ১২৩ টাকা। এর সঙ্গে সরকার থেকে আড়াই শতাংশ প্রণোদনা দেওয়া হচ্ছে। সব মিলে প্রতি ডলারে প্রবাসীরা পাচ্ছেন ১২৬ টাকা।

এদিকে ৩ ডিসেম্বর কেন্দ্রীয় ব্যাংকে মুদ্রানীতি বিষয়ক কমিটির সভায় ডলারের দাম নির্ধারণের বর্তমান পদ্ধতি ক্রলিং পেগ (একটি নির্দিষ্ট সীমার মধ্যে থেকে ডলারের দাম উঠানামা করা) থেকে বেরিয়ে আসার প্রস্তাব দেওয়া হয়।

এতে বলা হয়, ডলারের দামকে পর্যায়ক্রমে বাজারের ওপর ছেড়ে দেওয়া উচিত। মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সঙ্গে আইএমএফের বৈঠকে এ বিষয়টি ওঠে আসে। তারাও ডলারের দাম নির্ধারণের ক্রলিং পেগ পদ্ধতি তুলে দিয়ে বাজারভিত্তিক করার প্রস্তাব দেয়। বর্তমানে ক্রলিং পেগ পদ্ধতিতে ডলারের দাম সর্বোচ্চ ১২০ টাকা বাড়তে পারে। আইএমএফ মনে করে ডলারের দাম এখন স্থির হয়ে আছে। অনেকেই মনে করতে পারেন আগামীতে এর দাম বাড়বে, যে কারণে ডলার ধরে রাখছেন। এটি উঠানামা করা উচিত। তাহলে মানুষের হাতে ডলার ধরে রাখার প্রবণতা কমে যাবে। বাজারে ডলারের প্রবাহ বাড়বে।

ব্যাংকে নগদ ডলারের দাম ১২০ টাকার মধ্যে হলেও কয়েকটি ব্যাংক ১২১ টাকায় বিক্রি করছে। আর কিছু ব্যাংক ১২১ টাকার কম কিন্তু ১২০ টাকার বেশি দামে বিক্রি করছে। এদিকে খোলা বাজারে ডলারের দাম আগে কিছুটা কমলেও এখন বাড়তে শুরু করেছে। এছাড়া ভারত থেকে যেসব দেশের ভিসা নিতে হয় সেগুলোও পাওয়া যাচ্ছে না। চিকিৎসার জন্যও ভারত যাওয়া যাচ্ছে না। এতে ডলারের চাহিদা কম। খোলা বাজারে প্রতি ডলার এখন ১২২ থেকে ১২৩ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আগে ছিল ১২১ থেকে ১২২ টাকা।