শহীদ নূর হোসেন দিবসকে কেন্দ্র করে গুলিস্তানে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে আওয়ামী নেতাকর্মী ও সমর্থকদের গণপিটুনি দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করছে বিএনপির নেতাকর্মী ও ছাত্র-জনতা। রবিবার (১০ নভেম্বর) দুপুর ১টা পর্যন্ত অন্তত ১০ জনকে মারধর করে বিএনপি, যুবদল ও ছাত্র-জনতা। পরে তাদের পুলিশে সোপর্দ করা হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পল্টন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী নাছিরুল আমিন। তিনি বলেন, ‘কিছু লোক আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের সামনে জড়ো হয়েছিল। ছাত্র-জনতা তাদের ধরে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় আনা হয়েছে।’
সরেজমিনে দেখা গেছে, রবিবার দুপুর ১২টার দিকে এক বৃদ্ধ আওয়ামী লীগ অফিসের সামনে এসে হঠাৎ ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দেন। তিনি বলতে থাকেন, শেখ হাসিনা চলে আসবেন। আমি একজন মুক্তিযোদ্ধা। এ সময় সেখানে অবস্থান করা বিএনপি-যুবদলসহ ছাত্র-জনতা তাকে পিটুনি দিয়ে পুলিশের হাতে তুলে দেন। তবে গণপিটুনির সময় কয়েকজন শিক্ষার্থী ওই বৃদ্ধকে বাঁচাতে এগিয়ে আসেন।
এ ব্যাপারে এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘’কেউ এসে নিজেকে ছাত্রলীগ বা আওয়ামী লীগ বললেই মারার আগে যাচাই-বাছাই করা উচিত। যারা প্রকৃত আওয়ামী লীগ তারা গোপনে ষড়যন্ত্র করে মাঠে নিরীহ লোকদের পাঠাচ্ছেন। আর কাউকে পেলেই মারতে হবে কেন? তাকে পুলিশে দিয়ে দিলেই তো হয়। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা চেষ্টা করছে যাতে কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা সৃষ্টি না হয়।’’
এছাড়াও, শনিবার রাতে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে আওয়ামী লীগ সমর্থক সন্দেহে কয়েক জনকে মারধরের পর আটক করে পুলিশের কাছে সোপর্দ করেছেন বিএনপির নেতাকর্মীরা। শনিবার রাতে সাত জন ও রবিবার দুপুর পর্যন্ত অন্তত ১৫ জনকে আটক করে থানায় দেওয়া হয়েছে।
অন্যদিকে আওয়ামী লীগের বিক্ষোভ মিছিল প্রতিহত করতে রবিবার সকাল থেকেই গুলিস্তানের জিরো পয়েন্ট মোড়ে অবস্থান নিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। অপরদিকে গুলিস্তানের বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে অবস্থান নিয়েছে বিএনপি-যুবদল-মহিলা দলসহ দলটির বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ সদস্যদেরও সতর্ক অবস্থানে দেখা গেছে। গুলিস্তান জিরো পয়েন্ট ও বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পাশাপাশি জিরো পয়েন্টে একটি জলকামান এবং বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে একটি জলকামান ও রায়ট কার দেখা গেছে। গাড়ি নিয়ে পুরো এলাকা টহল দিতে দেখা গেছে বিজিবি সদস্যদের।